‘বাংলাদেশি’ অভিযোগে স্বামী ও সন্তানসহ অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবিকে গত ২৬ জুন কুড়িগ্রাম জেলা দিয়ে পুশ-ইন করেছিল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এরপর দুই মাস চাঁপাইনবাবগঞ্জে বসবাসের পর ‘অবৈধ অনুপ্রবেশের’ দায়ে তাদের আটক করে পুলিশ। গত সোমবার জামিন পেলেও সোনালি বিবির নিজ দেশে ফেরা এখনো অনিশ্চিত হয়ে আছে।
গতকাল বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের আদালতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল ইসলামের আদালতে হাজিরা দিয়ে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আকুতি জানান ছয় ভারতীয়। এর আগে একই আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করে।
এ ছয় ভারতীয় নাগরিক হলেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার পাকুরের স্থানীয় বাসিন্দা দানিশ শেখ, তার স্ত্রী সোনালি বিবি ও সন্তান সাব্বির শেখ; সুইটি বিবি তার দুই সন্তান কুরবান দেওয়ান ও ইমাম দেওয়ান।
তারা জানান, ভারতের দিল্লিতে ইটভাটায় কাজ করতেন তারা। গত ২৬ জুন ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করে ভারতীয় পুলিশ। পরে কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পুশ-ইন করে বিএসএফ।
এরপর প্রায় দুই মাস ধরে তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের আলীনগর এলাকায় অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। পরে ২০ আগস্ট তাদের আটক করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে সীমান্তে অনুপ্রবেশ আইনে মামলা দায়েরের পর আদালতের মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
তবে ওই ছয়জনের মধ্যে সাব্বির শেখ ও ইমাম দেওয়ান অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু হওয়ায় মামলায় তাদের আসামি করা হয়নি। তবে তারাও তাদের মায়েদের সঙ্গে কারাগারে ছিল।
গত সোমবার মামলার শুনানি শেষে তাদের জামিন দেওয়া হয়। ওইদিন রাতেই কারাগার থেকে বেরিয়ে তারা আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু দেড় ঘণ্টার মাথায় আবারও তাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে গত মঙ্গলবার আদালত চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নয়াগোলার বাসিন্দা ফারুক হোসেনের জিম্মায় আসামিদের হস্তান্তর করেন। গতকাল সকালে আদালতে হাজিরা দেন তারা।
আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক পিন্টু বলেন, অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবি যে কোনো সময় সন্তান প্রসব করতে পারেন। এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাকেসহ বাকি সবাইকে জামিন দেওয়া হয়েছে। তবে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা নিজ দেশে ফিরতে পারবেন না। আপাতত পৌর এলাকার নয়াগোলার বাসিন্দা জিম্মাদার ফারুক হোসেনের বাসায় থাকতে হবে। আগামী ২৩ ডিসেম্বর হাজিরার পরবর্তী দিন ধার্য করেছে আদালত।