হোম > সারা দেশ > ঢাকা

আওয়ামী দুর্গের দখল নিতে মরিয়া বিএনপি-জামায়াত

নারায়ণগঞ্জ-২

আবু সাউদ মাসুদ, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদের নাম ঘোষণার পর বদলে গেছে দৃশ্যপট। দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে পুরোদমে মাঠে নেমে পড়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। এদিকে, আগে থেকেই প্রার্থী ঘোষণা করায় গণসংযোগে এগিয়ে আছেন জামায়াতের অধ্যাপক ইলিয়াস মোল্লা। এছাড়া ইসলামী আন্দোলনসহ অন্যান্য দলের নেতারা মাঠে উপস্থিতি জানান দিলেও কর্মী শোডাউনে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি এখনো। অন্যদিকে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী আসনটিতে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবুসহ সব ডাকসাইটে নেতা পলাতক থাকায় দুর্গটি দখলে নিতে মরিয়া বিএনপি ও জামায়াত।

সরেজমিন ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচন ঘিরে আসনটিতে ইতোমধ্যে নানা হিসাব-নিকাশ করতে শুরু করেছেন ভোটাররা। দীর্ঘদিন ভোট না দেওয়ায় আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের যারা এখনো ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি, তারা ভোট দিতে মুখিয়ে আছেন।

এদিকে, নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের কণ্ঠেও এবার শোনা যাচ্ছে পরিবর্তনের বার্তা। দীর্ঘ আওয়ামী দুঃশাসনের অবসানের পর এবার ভোট নিয়ে বেশ সচেতন সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি নির্বাচনের সময় সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত ও সংঘাত এড়াতে প্রশাসন এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান তাদের।

ঐতিহাসিকভাবে আড়াইহাজার আসনটি বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ১৯৯১ সালে এরশাদের পতনের পর ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি নেতা আতাউর রহমান খান আঙ্গুর এখান থেকে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এমদাদুল হক ভূঁইয়া এমপি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে পুনরায় আসনটিতে দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হন আতাউর রহমান খান আঙ্গুর। এরপর ২০০৮ সালে আসনটি থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি হন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু। পরে ২০১৪ থেকে ২০২৪-এর তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনে এমপি হন তিনি।

আগামী নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত হেভিওয়েট প্রার্থী ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে তিনি নিজের মতো করে গুছিয়ে নিচ্ছেন এলাকা। তবে এখনো প্রচারে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছেন না বলে জানান সাধারণ স্থানীয় ভোটাররা।

এদিকে জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী নিশ্চিত করায় প্রচারে কিছুটা এগিয়ে আছেন অধ্যাপক ইলিয়াস মোল্লা। এছাড়া এই আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুল্লাহ হাবিব রয়েছেন। আড়াইহাজারে আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দল আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী দিতে পারে বলে জানা গেছে, যেখানে রয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদসহ কয়েকটি দল।

বিগত ১৬ বছর সরকারবিরোধী আন্দোলনে অনন্য ভূমিকা পালন করে বিএনপির রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনায় ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। অন্যান্য নেতা যেখানে কর্মীদের মাঠে নামিয়ে দিয়ে পেছন থেকে আন্দোলন পরিচালনা করতেন, সেখানে আজাদ নিজে আন্দোলনের সময় মাঠে থেকে সাধারণ একজন কর্মীর মতো পিকেটিংয়ে অংশ নিতেন, কর্মীদের মনোবল চাঙা রাখতেন। আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করায় বিভিন্ন সময় মামলার শিকার হয়ে কারাভোগ করতে হয়েছে এই নেতাকে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে আড়াইহাজার থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচনে লড়েছিলেন আজাদ। সরকার পতনের আন্দোলনে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, আগামী নির্বাচনে আড়াইহাজারে বিএনপির ধানের শীষের বিজয় হবে ইতিহাস সৃষ্টি করা, যার নেতৃত্বে থাকবেন নজরুল ইসলাম আজাদ। এলাকায় তার জনপ্রিয়তা ও বিগত আন্দোলন-সংগ্রামেও তার অবদান মূল্যায়ন করে দল তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আর এর মর্যাদা তাকে এলাকার নেতাকর্মীরা দিতে প্রস্তুত।

নজরুল ইসলাম আজাদ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি আড়াইহাজার থেকে জননেতা তারেক রহমানকে একটি অবিস্মরণীয় বিজয় উপহার দিতে চাই। বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে আমার যে অবদান এবং এলাকার জনগণের যে ভালোবাসা সব মিলিয়ে দলকে আমি দারুণ বিজয় দিতে পারব বলে আশাবাদী।

আসনটিতে ইতোমধ্যে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে জামায়াতে ইসলামী। জেলা জামায়াতের সমাজকল্যাণ সম্পাদক অধ্যাপক ইলিয়াস মোল্লা আসনটি থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নিয়মিত সভা-সমাবেশ ও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এর আগে দুপ্তারা ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন তিনি। এলাকায় তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।

ইলিয়াস মোল্লা জানান, জনগণের কাছে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। মানুষ আমাদের দেখে উৎসাহবোধ করছে, কথা বলছে। আগামী নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।

অন্যদিকে এই আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মনোনীত প্রার্থী হাতপাখা প্রতীকে মাঠে নেমেছেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগর সভাপতি মুফতি হাবিবুল্লাহ হাবিব। তিনি বলেন, আমার দলের নিজস্ব একটা ভোটব্যাংক আছে। এখানে সবাই আমাকে ভালোভাবে চেনে-জানে। অবৈধ কোনো কাজের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এলাকার মানুষ তাই আমাকে ভালোভাবেই গ্রহণ করছে। আমিও তাই আগামী নির্বাচনে জয়ী হয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার মো. রাকিবুজ্জামান (রেনু) জানান, আমাদের ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শেষ। তালিকা প্রস্তুত; আমরাও প্রস্তুত। আমাদের লোকবল বা অন্য কোনো সমস্যা নেই। এখন পর্যন্ত পরিবেশও স্বাভাবিক আছে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৫৯ হাজার ৭৬ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৭৪ হাজার ৬১০ এবং পুরুষ ভোটার এক লাখ ৮৪ হাজার ৪৬১ জন।

ছাতকে ১২৮ বোতল ভারতীয় মদসহ যুবক গ্রেপ্তার

ধামইরহাটে ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান গ্রেপ্তার

ছাত্রীকে বিয়ে করে উধাও শিক্ষক, থানায় গেলেন প্রথম স্ত্রী

বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালীন রাজনৈতিক প্রচারে গেলেন প্রধান শিক্ষক

ফেনীতে পৃথক দুর্ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু

বিএনপির নির্বাচনি প্রচারে সরব প্রার্থী ও বঞ্চিতরা, বাড়ছে বিভক্তি

প্রবাসে মৃত্যুবরণকারীদের লাশ দেশে আনতে ভোগান্তির শেষ নেই

কুমিল্লায় একই স্থানে বিএনপির দুই পক্ষের সভা সরাতে প্রশাসনের চিঠি

কুমিল্লায় পুকুরে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু

তারেক রহমানের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ চান্দিনায়