বরিশাল নগরীতে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের দায়ে চারজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। রোববার দুপুরে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রাকিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
রায় ঘোষণাকালে মামলার প্রধান আসামি রোকন খান ছাড়া বাকি তিনজনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো, বরিশাল নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ধান গবেষণা সড়কের বাসিন্দা রাসেল গাজী (৪৫), একই ওয়ার্ডের গ্যাস টারবাইন এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা রোকন খান (৩৩), ধান গবেষণা সড়কের খেয়াঘাট এলাকার রাজিব জমাদ্দার (৩৫) ও জাহিদ হাওলাদার (৩৬)।
ট্রাইব্যুনালের পেশকার অজিবর রহমান মামলার বরাত দিয়ে জানান, ২০১৬ সালের ৯ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের খ্রিষ্টান কলোনি এলাকার ওই নারীকে ঘরের মধ্যে একা পেয়ে প্রতিবেশী রাসেল গাজী জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ক্ষুব্ধ রাসেল পরদিন (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার সহযোগী রোকন খান, রাজিব জমাদ্দার ও জাহিদ হাওলাদারের সঙ্গে মিলে পরিকল্পিতভাবে অটোরিকশাযোগে গৃহবধূকে অপহরণ করে। তাকে বরিশাল নগরীর ৩০ গোডাউন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তারা হাত-পা ও মুখ বেঁধে গৃহবধূকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে এবং সারারাত নির্যাতনের পর উলঙ্গ অবস্থায় তাকে ফেলে পালিয়ে যায়।
পরদিন সকালে স্থানীয়রা ভিকটিমকে উলঙ্গ অবস্থায় দেখতে পান। তিনি ঘটনার বিবরণ দিলেও কিছু স্থানীয় ব্যক্তি তাকে মারধর করে অপমানিত করে। পরে আহত অবস্থায় গৃহবধূ বাড়ি ফিরে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া তৎকালীন ওসি (তদন্ত) মো. আতাউর রহমান ২০১৭ সালের ২৩ মে চার আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্কের পর ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য বিবেচনায় আদালত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় মামলার প্রধান আসামি রোকন খান ছাড়া অন্য তিনজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার বিচার চলাকালীন রোকন খান জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপনে রয়েছে।