হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

লাকসামে পাঁচ বছরে ১৮ জোড়া ট্রেন চলাচল বন্ধ, যাত্রীদের ভোগান্তি

এমএসআই জসিম, লাকসাম (কুমিল্লা)

পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের লাকসাম অঞ্চলে পাঁচ বছরে ১৮ জোড়া ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।রক্ষাবেক্ষনের অভাবে অযত্নে অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে বন্ধ হয়ে যাওয়া ট্রেন।

জানা গেছে, লাকসাম-চট্টগ্রাম, লাকসাম-ঢাকা, লাকসাম-নোয়াখালী, লাকসাম-চাঁদপুর, লাকসাম-সিলেট ও লাকসাম-কুমিল্লা রেলপথে চলাচলকারী চার জোড়া ডেমু ট্রেনসহ ১৮ জোড়া ট্রেন একের পর এক বন্ধ হওয়ায় পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ে লাকসাম অঞ্চলে চলাচলকারী যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, একসময় লাকসাম-নোয়াখালী, লাকসাম-চাঁদপুর ও লাকসাম থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে চলাচল করা চার জোড়া ডেমু ট্রেনের মধ্যে এক জোড়া পড়ে আছে লাকসামের লোকোশেডে। তিন কোচ ও দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট ডেমু ট্রেনটিতে ধরেছে মরিচা। খোলা দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেই দেখা যায় সিট, পাখা ও দুই ইঞ্জিনের ভাঙাচোরা অংশ। চলাচল বন্ধ হওয়ার মাত্র ছয় বছরের মধ্যেই তদারকির অভাবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের ডেমু ট্রেনটি ক্রমেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। ২০১২ সালে চীন থেকে আমদানি করা হয়েছিল ২০টি ডেমু। খরচ হয় প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা। ৩০ বছর সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও ২০২০ সালে মাত্র আট বছরেই বিকল হয়েছে প্রায় সবগুলো। লাকসাম অঞ্চলে চালু হওয়া চার সেট ডেমুর সবই এখন অচল। ডেমুগুলো মেরামতের সক্ষমতা না থাকায় আবারও ভোগান্তিতে পড়েন এ অঞ্চলের যাত্রীরা। রেলওয়ের সূত্রে জানা যায়, লাকসাম-নোয়াখালী ও লাকসাম-চাঁদপুর রেলপথে ২০ জোড়া ট্রেন এবং লাকসাম-কুমিল্লা-ঢাকা ও লাকসাম-চট্টগ্রাম রেলপথে ৩৪ জোড়া ট্রেনসহ লোকাল ও আন্তঃনগর মিলিয়ে মোট ট্রেন ছিল ৫৪ জোড়া। এর মধ্যে পাঁচ বছরে বন্ধ হয় ১৮ জোড়া ট্রেন, যার মধ্যে ডেমু রয়েছে চার জোড়া।

বর্তমানে পূর্বাঞ্চলে আন্তঃনগর ও লোকাল মিলিয়ে মোট ৩৬ জোড়া ট্রেন চলাচল করলেও তাতে চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশ পূরণ হয়। বাকিরা বাধ্য হয়েই সড়কপথ ব্যবহার করেন। গত অর্থবছরে পূর্বাঞ্চলে এই চারটি রুটে টিকিট বিক্রি হয় ২০ কোটি টাকার। আর চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে বিক্রি হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকার টিকিট। রেলপথ এখনো স্বল্প আয়ের মানুষের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী যোগাযোগমাধ্যম। কিন্তু চাহিদার তুলনায় এই রেলপথে রয়েছে ট্রেনের সংকট। যেই কয়েকটি চলছে তাও ধুঁকছে লোকবল সংকটে। তবে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ডেমু ট্রেন বন্ধ হওয়ায়। তাই এসব রেলপথের যাত্রীদের ভোগান্তিও বেড়েছে কয়েকগুণ।

সাধারণ যাত্রী হিসেবে ট্রেনে আসা জাফর ইকবাল বাচ্চু বলেন, ‘একটা ট্রেন অনেকজন যাত্রী একসঙ্গে নিয়ে যেতে পারত। কিন্তু এখন ট্রেন না থাকায় আমাদের বাসে যাতায়াত করতে হচ্ছে।’ লাকসাম স্টেশনে আসা ট্রেন যাত্রী ইয়াসমিন সুলতানা মিনি বলেন, ‘লাকসাম অঞ্চলে চলাচল করা লোকাল ও ডেমু ট্রেন বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মানুষ। এসময় বন্ধ ট্রেন গুলোতে চড়ে স্বল্প সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছতে পারতেন। কিন্তু এখন ট্রেন সংকটে চাহিদামতো টিকিটও পাওয়া যায় না। এতে করে মানুষ বাধ্য হচ্ছেন সড়কপথে চলাচল করতে। অথচ অনেকগুলো বাসের যাত্রী একটি ট্রেনে চলাচল করতে পারতেন।’ কুমিল্লা অঞ্চল রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম সরওয়ার বলেন, ‘ডেমু ট্রেনগুলো যদি আবার মেরামত করা হয়, তাহলে আমার মনে হয় যাত্রীদের চাহিদাটা পূরণ হবে। স্বল্প ব্যয়ে গন্তব্যে পৌঁছানো আবার শুরু করা যাবে।’ লাকসাম রেল জংশন স্টেশন মাস্টার মো. ওমর ফারুক ভূঁইয়া বলেন, ‘ডেমুগুলোয় যথেষ্ট আর্নিং ছিল আগে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের করিডোর-খ্যাত লাকসামে এমনিতেই চাহিদার তুলনায় ট্রেনের সংখ্যা অপ্রতুল। তার ওপর ডেমু বন্ধ থাকায় সেই সংকট আরো প্রকট হয়ে উঠেছে। যথাযথ প্রাযুক্তিক জ্ঞান ও দক্ষ জনবল না থাকায় লাকসাম অঞ্চলের চার সেট ডেমু মেরামতের চেষ্টাই করেনি মন্ত্রণালয়। তাই স্থায়ীভাবে অচল হয়ে লাকসাম ও চট্টগ্রামের লোকশেডে পড়ে আছে ট্রেনগুলো।’ যাত্রীরা মনে করেন, ‘আবার ডেমু চালু কিংবা ট্রেন সংখ্যা না বাড়লে বিদ্যমান সংকট নিরসন সম্ভব নয়।’ লাকসাম রেল জংশন লোকোশেড ইনচার্জ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডেমু ট্রেন নষ্ট। ডেমুগুলো বন্ধ হওয়ায় আমরাও বিভিন্ন স্টেশনে যাতায়াতে সড়ক পথে চলাচল করতে হয়। ফলে লাকসাম অঞ্চলের যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

মহেশপুরে কমলা চাষে সফলতা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, যেন দুর্নীতির আখড়া

ছোট ফরিংগা সীমান্তে ৩১টি ভারতীয় গরু আটক

কালুরঘাটে সেতুর অভাবে ২০ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি

শৈলকুপা হাসপাতালে সিজার বন্ধ, ভোগান্তিতে রোগীরা

জামায়াত সরকার গঠন করলে যা করবেন ফজলুর রহমান

বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রতিটি পরিবারে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ চালু করা হবে : মানিক

৪৭ বছরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দিনব্যাপী বর্ণিল আয়োজন

ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকিতে ময়মনসিংহ, বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা

‘শিবির নাছিরের’ পতনের পর দখলে নেন বড় সাজ্জাদ