হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসন: বিএনপির মনোনয়ন ঘিরে প্রকাশ্যে এলো কোন্দল

জালাল উদ্দিন মনির, (নবীনগর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন ১২ জন। তাদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন নবীনগর উপজেলার বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান। তার মনোনয়ন গ্রহণ করে নিতে পারেনি বঞ্চিত ১১ প্রার্থী। এরপর থেকেই শুরু হয় নিজেদের অস্তিত্ব, দাপুটে অবস্থান জানিয়ে দেয়ার প্রতিযোগিতা। আর এ প্রতিযোগিতা ঘিরে প্রকাশ্যে আসে পাল্টাপাল্টি শোডাউন ও মহড়া। এর ফলে চরম বিপাকে পড়েন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

এ দিকে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বরাবর আবেদন করেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী ৭ বিএনপি নেতা। তারা গত ১২ নভেম্বর এ আবেদন করেন। এই সাত বিএনপি নেতা হলেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য তকদীর হোসেন মোহাম্মদ জসীম, মো. সায়েদুল হক সাঈদ, সালাহ্ উদ্দিন ভূইয়া শিশির, জেলা বিএনপির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক কাজী নাজমুল হোসেন তাপস, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক কে.এম মামুন অর রশিদ, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান চৌধুরী পাপ্পু।

এই সাত নেতা একমঞ্চে আসেন বুধবার (১৯ নভেম্বর)। এ দিন বিকেলে নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তাদের উপস্থিতিতে বিশাল এক জনসভা। কানায় কানা পূর্ণ হয় এ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ। তারেক রহমান ঘোষিত, রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফার কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম। তারা এ মঞ্চ থেকেই মনোনয়ন পূনর্বিবেচনার দাবি জানান।

এরআগে, ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ কাজী নাজমুল হোসেন তাপসের নেতৃত্বে উপজেলা শহরে অনুষ্ঠিত হয় র‍্যালি ও আলোচনা সভা। এর পরদিন ৮ নভেম্বর একই দিবস উপলক্ষে নবীনগরে আলোচনা সভা ও শোভাযাত্রা (র‍্যালি) আহবান করেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম। ওই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে আবদুল মান্নান থাকলেও নাজমুল করিম ছিলেন অনুপস্থিত। এরপর ৯ নভেম্বর নবীনগর-কোম্পানীগঞ্জ সড়কে আলীয়াবাদ থেকে বাঙ্গরা বাজার পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার মানববন্ধন করেন নাজমুল হোসেন তাপসের সমর্থকরা। প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে তাদের এ মানববন্ধন হয়। তাপসের সমর্থকরা শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করেন। আলীয়াবাদ গোল চত্বর থেকে শুরু করে পৌর শহরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এরপর আবদুল মান্নানের পালা। নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসভার আয়োজন করেন। শনিবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে তারেক রহমান ঘোষিত, রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফার কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। তবে তার এ জনসভায় বঞ্চিত কোনো প্রার্থীকে দেখা যায়নি।

মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে কাজী নাজমুল হোসেন তাপস বলেন, ভুল তথ্যের ভিত্তিতে এ আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। দলের ওটা চূড়ান্ত মনোনয়ন নয়। প্রতীক বরাদ্দের আগ পর্যন্ত ধানের শীষের একমাত্র মালিক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, আর কেউ না। প্রতীক বরাদ্দের দিন পর্যন্ত মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি অব্যাহত থাকবে। নবীনগরবাসী আশা করেন, সঠিক জনমত জরিপের ভিত্তিতে, দল পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে, জনপ্রিয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। এবং আমরাই শেষ হাসি হাসবো এবং ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করবো ইনশাআল্লাহ।

তকদির হোসেন মোহাম্মদ জসিম বলেন, যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তিনি অযোগ্য, নিরপেক্ষ জনমত জরিপ ও জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হলে, ধানের শীষের বিজয় এ আসনে নিশ্চিত।

মো. সায়েদুল হক সাঈদ বলেন, ১৯ নভেম্বর সমাবেশের মাধ্যমে নবীনগরবাসী প্রমাণ দিয়েছে, তারা ঘোষিত প্রার্থীর পরিবর্তন চাই। জনগণ এ আসনে রিভিউ চাই।

মামুনুর রশীদ বলেন, যিনি আন্দোলন সংগ্রামে ছিলো না, এই রকম প্রার্থী নিয়ে ধানের শীষের বিজয় অনিশ্চিত। মান্নান সাহেব দলকে নিজের পকেট কমিটি করে রেখেছেন, সিনিয়র কোনো নেতাকেই উপজেলা বিএনপির কমিটিতে রাখেননি, রেখছেন উনার ভাই, ভাতিজা, ভাগিনা, বিয়াইসহ কমপক্ষে ১০ জন আত্মীয় স্বজনকে।

তিনি বলেন, যিনি আন্দোলন সংগ্রামে ছিলো না, দলকে নিজের পকেট কমিটি করে রেখেছেন, এই রকম প্রার্থী নিয়ে ধানের শীষের বিজয় অনিশ্চিত।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম বলেন, এই আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া এমএ মান্নান সাহেব জীবনে কোনদিন ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করেছেন এমন কোন প্রমান তিনি দেখাতে পারবেন না। জনগণের সাথে নেই কোন সম্পৃক্ততা,সভাপতি হিসেবে উনি ওনার একক সিদ্ধান্ত অসাংগঠনিক নীতি নিয়মের মাধ্যমে দল চালাচ্ছেন। তিনি ২০০৯ সালে উপজেলা নির্বাচন করে জামানত হারিয়েছেন। এমন জন-বিচ্ছিন্ন প্রার্থী নিয়ে ধানের শীষের বিজয় অনিশ্চিত, সে কারণে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি করছি।

রাজিব আহসান চৌধুরী পাপ্পু বলেন, এ আসনে আমিসহ একাধিক লোক মনোনয়ন প্রত্যাশি। সবার দলের জন্য অনেক অবদান আছে। তাই কাউকে ছোট করে দেখার কিছু নেই। দল যাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিবে আমরা তখন তার পক্ষে কাজ করব।

জেলা বিএনপির সদস্য মো. হযরত আলী বলেন, দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন না হওয়ার কারণে এ আসনে বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম চলছে।

জানতে চাইলে আবদুল মান্নান বলেন, দলের চরম দুঃসময়ে জেলা ও উপজেলার নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে দেশনায়ক তারেক রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৫ আসনে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। দলীয় নেতাকর্মীরা তার সিদ্ধান্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে মেনে নিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছে। তবে কিছু লোক এখনও আসেনি। আশা করছি, তারাও অতি দ্রুত দলের সিদ্ধান্ত মেনে ধানের শীষের প্রচারণায় আসবে।

‘মিনিস্টার বাড়ি’ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো নিয়ে সংবাদ সম্মেলন

হাইমচরে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা, ঘাতক স্বামী আটক

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করলে শারীরিক নির্যাতন করার হুমকি বিএনপি নেতার

বিএনপি সব সময় জনগণের অধিকার আন্দোলনে অটল থেকেছে: লুনা

জামায়াত প্রার্থীর ৩ হাজার মোটরসাইকেলের শোডাউন

মওদূদীবাদীদের যে ইসলাম ওটা বোকাস ইসলাম: এ্যানি

অসহায়দের হুইলচেয়ার বিতরণ জামায়াতের প্রার্থী ড. হাফিজুর রহমানের

‎পরশুরাম কলেজে শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ

ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমার সেনা ও বিজিপির ৫ সদস্য আটক

বিদ্যালয় বন্ধের বিষয়ে যা বললেন উপদেষ্টা