ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা চালানোর কারণে রাজশাহীতে মহিলা দলের দুই কর্মীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে জামায়াতে ইসলামীর এক কর্মীর বিরুদ্ধে। এদের একজনকে স্যান্ডেল খুলে মারধর এবং অন্যজনের পেটে লাথি মারার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রাজশাহীর পবা উপজেলার আশরাফের মোড় এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায়। ভুক্তভোগী মহিলা দলের দুই কর্মী হলেন-নিলুফা ইয়াসমিন ও তার বোন নূরবানু বেগম। অভিযুক্ত জামায়াতকর্মীর নাম নুরুল ইসলাম (৫৫)। পবার রনহাট গ্রামে তার বাড়ি।
লাঞ্ছিত হওয়ার পর রাতেই ভুক্তভোগী নূরবানু রাজশাহীর কাটাখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এছাড়া বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে বিচার চেয়েছেন তারা। সকালে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় হরিয়ান ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী দুই বোন ছাড়াও রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শফিকুল হক মিলন, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদা হাবিবা, নগর বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পবা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রফেসর আব্দুল রাজ্জাক।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ১১ নভেম্বর নির্বাচনী প্রচারণা থেকে ফেরার পথে নিলুফা ও তাঁর বোন নূরবানুকে জামায়াতকর্মী নুরুল ইসলাম দেখতে পেয়ে ডাকেন। তিনি দুজনকে জামায়াতের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে বলেন। এতে রাজি না হলে তিনি অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন।
ভুক্তভোগী নিলুফা বলেন, নুরুল একপর্যায়ে প্রথমে স্যান্ডেল খুলে মারতে শুরু করেন এবং আমার বোনকে ঘাড়ে আঘাত করেন। এরপর নুরুল দৌড়ে এসে আমার পেটে লাথি মারেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি অভিযুক্ত নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করারও দাবি জানান।
এ আসনের বিএনপির প্রার্থী শফিকুল হক মিলন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে রাজনৈতিক বিতর্কের ভেতরেও নাগরিকদের মৌলিক নিরাপত্তা রক্ষা করতে হবে এবং কাউকে হুমকি-ভীতি দেখিয়ে নির্যাতন করা চলবে না। কেউ জোর-জবরদস্তি করে এক দলের কর্মীদের অন্যদলের হয়ে ভোট চায়তে বাধ্য করতে পারে না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘নিলুফা আগে আওয়ামী লীগের ভোট করেছে। এখন দেখছি বিএনপির ভোট করছে। এটা নিয়ে তার সঙ্গে তর্কাতর্কি হচ্ছিল। একটা পর্যায়ে আমি শুধু তাদের একবার ধাক্কা দিয়েছিলাম। ঘটনা মাত্র এটুকুই। এর বেশি না।’
কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন বলেন, ‘নুরবানু বেগম যে জিডি করেছেন সেটি আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আদালত তদন্তের অনুমতি দিলে আমরা কাজ শুরু করব।