ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা আলবার্ট সরকার নামে থাকা অর্পিত সম্পত্তি ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত। তিনি জাল কাগজে শতকোটি টাকার অর্পিত সম্পত্তি দখলে রেখে বিক্রি করার চেষ্টা করছিলেন। বৃহস্পতিবার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল স্পেশাল জজ আদালত এই আদেশ দেন বলে জানান দুদক চট্টগ্রাম-১ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ।
আলবার্ট সরকার বিরুদ্ধে জাল কাগজপত্র তৈরি করে কোটি টাকার অর্পিত সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্রে জানা গেছে, আলবার্ট সরকার পারস্পরিক যোগসাজশে উত্তরাধিকার সনদ, মৃত্যু সনদ ও কবর সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করে আদালতে দাখিল করেন। এর মাধ্যমে আদালতকে প্রতারণা ফেলে তিনি চট্টগ্রাম শহরের কোতোয়ালী থানাধীন শতকোটি টাকারও বেশি মূল্যের প্রায় ৬৯ দশমিক ৭ শতক অর্পিত সম্পত্তির দখল নেন।
দুদকের অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। অনুসন্ধান শেষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি চেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়, যা বর্তমানে দুদক প্রধান কার্যালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ নিষ্পত্তির আগেই আলবার্ট সরকার ওই অর্পিত সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সম্পত্তি বেহাত হওয়ার আশঙ্কায় আদালতের কাছে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হলে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেছেন।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, আদালতের অনুমতি ব্যতীত আলবার্ট সরকারের নামে থাকা সম্পত্তি পরবর্তী ছয় মাসের জন্য হস্তান্তর বা বিক্রি করা যাবে না। পাশাপাশি, দরখাস্তে উল্লিখিত ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্রও ছয় মাসের জন্য ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদকের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আলবার্ট সরকার জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে অর্পিত সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা করেছেন-এমন অভিযোগে আমরা অনুসন্ধান চালিয়ে প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছি। মামলা রুজুর অনুমোদনের প্রক্রিয়া দুদক প্রধান কার্যালয়ে চলছে। আদালতের আদেশ অনুযায়ী উক্ত সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তরে আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আদালতের আদেশের অনুলিপি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের বরাবর পাঠানো হয়েছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
গত ৫ মার্চ নগরের সদরঘাট রোডে ব্রিটিশ আমলে গড়ে ওঠা ভবনের ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ করে জনৈক আলবার্ট সরকারকে বুঝিয়ে দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এ জমির প্রকৃত মালিক ডেভিড ইজিক্যাল নামে এক ইহুদি। আলবার্ট সরকার ডেভিড ইজিক্যালের নাতি বলে দাবি করেন। ডেভিড ইজিক্যাল চট্টগ্রামে ব্যবসা করতেন। ১৯৩৬ সালের দিকে চট্টগ্রামে পরিবারকে রেখে কলকাতা হয়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেন ইজিক্যাল।