ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা এলাকায় যুবদলকর্মী মেহেদী হাসান রাকিব (২৮) খুনের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা যুবদলের সদস্য ইয়াছিনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
এর মধ্যে গত ৯ এপ্রিল জেলার ভালুকা উপজেলার স্কয়ার মাস্টার বাড়ি এলাকা থেকে তাইজু ব্যাপারীকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এর আগে ৩ এপ্রিল মিজো, জিয়া ও পারভেজকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত ১৭ মার্চ রাতে ফসলি জমির মাটি কেটে নেওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলার পাগলা থানার নিগুয়ারী ইউনিয়নের ত্রিমোহনী বাজারের পল্টন মোড়ে মেহেদীকে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে মাথা-মুখ থেতলে হত্যা করা হয়। ওই সময় সাবিদ নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হন। নিহত মেহেদি তললী গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে।
এ ঘটনার পরদিন (১৮ মার্চ) নিহতের বাবা মজিবর রহমান বাদী হয়ে পাগলা থানায় মামলাটি করেন। এতে জেলা যুবদলের সদস্য ইয়াছিন খানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া তার অনুসারী মিজু মিয়া, নজরুল শেখ, জাহিদুল, তাইজুল, মন্তাজ, বেলাল, জিয়াউল, মোফাজ্জল ও পারভেজের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, ময়মনসিংহ জেলা যুবদলের সদস্য ইয়াছিন খান ও তার বাহিনীর সঙ্গে ফসলি জমির মাটি কাটা নিয়ে বিরোধ চলছিল যুবদল কর্মী মেহেদির। এ নিয়ে পল্টনমোড়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে যুবদল নেতা ইয়াছিনসহ তার অনুসারীরা হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা পাগলা থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান বাচ্চুর অনুসারী।
নিহত রাকিবের বাবা মজিবর রহমান ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আমার দেশকে বলেন, তার ফসলি জমি থেকে বিএনপি নেতা ইয়াছিন, জিয়াসহ আরো কয়েকজন মাটি কেটে নিচ্ছিল। এ সময় তার ছেলে রাকিব বাধা দেয়। এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ১৭ মার্চ রাতে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রাকিবকে ইয়াছিনসহ অন্য আসামিরা নির্মমভাবে হত্যা করে। এর আগেও এই বাহিনী নিগুয়ারী ইউনিয়নে অনেক মাছের খামার দখল ও মাছ লুট করেছে। এ হত্যাকাণ্ডে এলাকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
বাদি পক্ষের অভিযোগ, পলাতক আসামিরা বিভিন্ন নম্বর থেকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে পাগলা থানার ওসি মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, এ ঘটনায় ৪ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আমরা ইতোমধ্যে ইয়াছিনসহ অন্যান্য আসামিদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছি। তবে তারা সবাই পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
এদিকে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা। এ সময় রাকিবের হত্যার বিচার দাবি করেন তারা।