হোম > সারা দেশ > রাজশাহী

চাটমোহরে বিনাচাষে রসুন আবাদে ঝুঁকছেন কৃষক

জহুরুল ইসলাম, পাবনা

বিনাচাষে সাদা সোনাখ্যাত রসুন আবাদে ঝুঁকছেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের কৃষকরা। গত বছর রসুনের দাম তুলনামূলক কম পাওয়ার পরও তারা এ রবিশস্য আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেননি। কৃষকদের মতো চাষাবাদ খরচ ও ঝামেলা কম হওয়ায় অন্যান্য ফসলের চেয়ে এ পদ্ধতির রসুন আবাদে লাভ অনেক বেশি।

বিনাচাষে রসুন আবাদ হলো প্রচলিত পদ্ধতিতে চাষ না করে জমি থেকে ধান কাটার পর সেই নরম কাদামাটিতে রসুন রোপণ করার একটি লাভজনক পদ্ধতি। যা কৃষকের খরচ ও খাটুনি কমায়।

চলনবিলের রসুনের আবাদ এ অঞ্চলের কৃষকের অন্যতম অর্থকরী ফসলে পরিণত হয়েছে। প্রায় দুদশকের অধিক সময় ধরে বিনাচাষে রসুনের আবাদ হচ্ছে। রসুন রোপণে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন নারীরা। বীজ বাছাই ও রোপণে কাজ করেন তারা। একজন মহিলা শ্রমিক প্রতিদিন তিনশ থেকে চারশ  টাকা মজুরি পান। আর পুরুষ শ্রমিকরা পান পাঁচশ টাকা থেকে ছয়শ টাকা।

কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমন ধানের আবাদ ঘরে তোলার পর আমাদের তেমন কোনো কাজ থাকে না। এ সময় আমাদের একটু অভাবের মধ্যেই দিন অতিবাহিত হয়। তাই এ পদ্ধতিতে রসুন চাষ চালু হওয়ায় গত কয়েক বছর আমাদের বসে থাকতে হয় না। পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে দিন কাটাতে পারি। আবার এ রসুন ঘরে তোলার সময়ও আমরা কাজ করি, সব মিলিয়ে আমাদের এখন সব সময় কাজ থাকে।

মহিলা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গ্রামে থাকার কারণে এখানে তেমন কোনো কর্মসংস্থান নেই যে আমরা বাড়ির কাজ করে কিছু টাকা উপার্জন করব। পরিবারের একজনের আয় দিয়ে প্রয়োজন মেটানো কঠিন হয়। এখন আমরা এ সময়ের অপেক্ষায় থাকি। কারণ বিনাহালে (তাদের ভাষায়) রসুন বপন করে আমরা প্রতিদিন যে টাকা পাই তাতে করে বেশ কিছুদিন কাজ করলে বাড়তি আয় হয়। আবার রসুন জমি থেকে তোলার পর আমাদেরই বাছাইয়ের জন্য কাজ দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে এমন চাষ পদ্ধতি আমাদের আয়ের ভালো একটি উৎস। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তিন হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ করে ৩৭ হাজার ১৫০ টন রসুন উৎপাদন হয়েছিল। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ছিল ৯ দশমিক ৬৫ টন। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে চার হাজার ৫৫০ হেক্টর আবাদ ও ৪৭ হাজার ৯১৫ টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পাবনা জেলার মধ্যে চাটমোহরেই কেবল এ পদ্ধতিতে (বিনাচাষে) রসুনের আবাদ হয়। পাশের জেলা নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া, তাড়াশেও এ পদ্ধতির রসুন চাষ। 

বালুদিয়ার গ্রামের  কৃষক জিয়াউল হক জানান, পাঁচ বিঘা জমিতে তিনি বিনাচাষে রসুন আবাদ করেছেন। আমন ধান কাটার পর জমি থেকে আগাছা পরিষ্কার করে জমি ভেজা বা কাদা-মাটি  থাকতেই প্রতি এক বিঘা জমিতে ৩০ কেজি টিএসপি, ২৫ কেটি পটাশ এবং ১৫ কেজি জীপসাম সার ছিটিয়ে পরের দিনই সারিবদ্ধভাবে রসুন বীজ রোপণ করতে হয়। এক বিঘা জমিতে দুই মণ বীজ লাগে। বীজ রোপণ করার পরই খড় বা বিচালি দিয়ে পুরো জমি ঢেকে দিতে হয়। একমাস পর পানি সেচ দিয়ে ১০ কেজি ইউরিয়া সার দিতে হয় বিঘাপ্রতি। এ পদ্ধতিতে রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। একশত দিনের মধ্যে ফসল ঘরে ওঠে। বিঘাপ্রতি উৎপাদন ২৫ থেকে ৩০ মণ পর্যন্ত হয়। 

বোঁথর গ্রামের কৃষক আরিফুল ইসলাম জানান, এ বছর সাত বিঘা জমিতে তিনি এ পদ্ধতির রসুন আবাদ করেছেন। এক বিঘা জমিতে সব মিলিয়ে খরচ হয় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। তবে শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় খরচও বেড়েছে। তারপরও দাম কম হলেও ৬০ হাজার টাকার রসুন বিক্রি করা হয়। দাম বেশি হলে লক্ষাধিক টাকার বেশি পাওয়া যায়।  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কুন্তলা ঘোষ জানান, বিনাহালে (বিনাচাষ) রসুন আবাদ সঠিক ব্যবস্থাপনা ও কৃষকদের সহযোগিতা পেলে এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।

পাবনা-৩ আসনে বিএনপির তিন ভাইবোন তিন মেরুতে

জামায়তের উদ্যোগে ৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক পরিষ্কার

সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ এনায়েতপুর কাপড়ের হাট

জামায়াত প্রার্থীর প্রচারে বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা-গুলি, প্রার্থীসহ আহত অর্ধশতাধিক

সিরাজগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

দেশে আওয়ামী স্টাইলে আর কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না

বগুড়া- ৩ আসনে জামায়াত প্রার্থীর মতবিনিময় সভা

স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ৬ হাজার ইয়াবা পাচারকালে দুজন আটক

বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমানকে জামায়াত নেতার চ্যালেঞ্জ

হাসিনার মাধ্যমে এদেশে ইসলাম বিরোধী শক্তি সৃষ্টি হয়েছিল