হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর–চুনারুঘাট উপজেলা) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ মো. ফয়সল বলেছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই দেশের গণতন্ত্র, মানুষের ভোটাধিকার ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য আপসহীন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি শুধু বিএনপি নয়, এ দেশের সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক।
রোববার মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে বেগম খালেদা জিয়ার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে।
তিনি বলেন, “স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, তখনই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দৃঢ় হাতে বিএনপির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। অসীম ধৈর্য, সাহস ও প্রজ্ঞা দিয়ে তিনি বিএনপিকে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।”
ফয়সল আরও বলেন, “এরশাদবিরোধী গণআন্দোলনে দেশনেত্রী নির্ভীক নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তিনি রাজপথে ছিলেন, জেল-জুলুম-নির্যাতন সয়ে নিয়েছেন। ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় গিয়ে তিনি এই দেশে মেয়েদের বিনামূল্যে শিক্ষার পথ খুলে দিয়ে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, যার সুফল আজও লাখো পরিবার ভোগ করছে।”
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশনেত্রীর ওপর যে নির্যাতন হয়েছে তা তিনি গভীর কষ্ট নিয়ে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “তার বাসা দখল করা হয়েছে, মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে, দীর্ঘদিন অন্যায়ভাবে কারাবন্দী রাখা হয়েছে। কিন্তু তবুও তিনি কখনও জনগণের সঙ্গে বেঈমানি করেননি, কারও সঙ্গে আপস করেননি। তিনি ছিলেন আর আছেন গণতন্ত্রের দৃঢ়তম প্রতীক।”
তিনি বলেন,“ম্যাডাম আমাকে অনেক বিশ্বাস করতেন, স্নেহ করতেন। ১৯৯১ সালে তিনি আমাকে মায়া করে বিএনপির মনোনয়ন দিয়েছিলেন। সিলেট যাওয়ার পথে তিনি অন্তত চারবার আমাদের বাড়িতে এসেছেন। সেই স্মৃতিগুলো আজ আমাকে আরও ব্যথিত করে। ম্যাডাম আজ সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে। আমরা সবাই তাঁর রোগমুক্তির জন্য দু’হাত তুলে দোয়া করছি।”
তিনি আরও জানান, দেশনেত্রীর অনুমতিতেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রথমবার ধর্মঘর ও মাধবপুরে এনে বড় সভা করেছিলেন তারা। “আজও ম্যাডাম ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাকে বিশ্বাস করে মনোনয়ন দিয়েছেন। তাই আমি আপনাদের কাছে ধানের শীষে ভোট চাইছি—দলের মর্যাদা রক্ষার জন্য, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য,” বলেন তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্মঘর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বজলুর রহমান ভূইয়া, এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবিদুর রহমান মাস্টার। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি শামসুল ইসলাম কামাল, সাধারণ সম্পাদক হামিদুর রহমান হামদু, সহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
সভা শেষে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।