আঙ্কটাডের প্রতিবেদন:
বিশ্ববাণিজ্য ও বিনিয়োগে আর্থিক অস্থিরতা এবং ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তার ক্রমবর্ধমান চাপের কারণে ২০২৫ ও ২০২৬ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি দুই দশমিক ছয় শতাংশে নেমে আসবে, যা ২০২৪ সালে ছিল দুই দশমিক ৯ শতাংশ। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (আঙ্কটাড)।
সংস্থাটি বলছে, ২০২৫ সালের প্রতিবেদনে আঙ্কটাড দেখিয়েছে-আর্থিক বাজারের পরিবর্তনগুলো বাস্তব অর্থনৈতিক কার্যকলাপের মতোই বিশ্ববাণিজ্যকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে, যা বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো নতুন প্রযুক্তি থেকে সম্ভাব্য লাভ সত্ত্বেও, ২০২৬ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি দুই দশমিক ছয় শতাংশে স্থির থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) একই দিনে ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, বিশ্বব্যাপী জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২৫ সালে তিন দশমিক দুই শতাংশ থেকে কমে ২০২৬ সালে দুই দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসবে।
আঙ্কটাড মহাসচিব রেবেকা গ্রিনস্প্যান বলেছেন, ফলাফলগুলো দেখাচ্ছে আর্থিক পরিস্থিতি কীভাবে ক্রমবর্ধমান বিশ্ববাণিজ্যের দিক নির্ধারণ করে। বাণিজ্য কেবল সরবরাহকারীদের একটি শৃঙ্খল নয়। এটি ক্রেডিট লাইন, পেমেন্ট সিস্টেম, মুদ্রাবাজার ও মূলধন প্রবাহের একটি শৃঙ্খলও।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলো ২০২৫ সালে ৪.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যা উন্নত অর্থনীতির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে দ্রুত। তবে উচ্চতর অর্থায়ন ব্যয়, মূলধন প্রবাহের আকস্মিক পরিবর্তনের ঝুঁকি এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু-সম্পর্কিত আর্থিক ঝুঁকির মতো কারণগুলো উন্নয়নশীল অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় রাজস্ব এবং বিনিয়োগের স্থানকে সীমিত করে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ছোট অভ্যন্তরীণ আর্থিক বাজারসহ অনেক উন্নয়নশীল অর্থনীতি সাত থেকে ১১ শতাংশের উচ্চ হারের বহিরাগত ঋণের ওপর নির্ভর করে, যেখানে প্রধান উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোতে এটি এক থেকে চার শতাংশ। এছাড়াও জলবায়ু দুর্বলতা আর্থিক চাপ বাড়ায়। বারবার প্রতিকূল আবহাওয়ার মুখোমুখি হওয়া দেশগুলোকে প্রতি বছর আনুমানিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সুদ দিতে হয়।
আর্থিক দুর্বলতা কমাতে পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষমতা উন্নত এবং বাণিজ্য, অর্থ ও উন্নয়নের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করতে একগুচ্ছ সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে আঙ্কটাড। এই পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছেÑবাণিজ্য নিয়ম নবায়ন, তথ্যের সীমা সংকুচিত করার নীতি, আন্তর্জাতিক মুদ্রাব্যবস্থা সংস্কার ও পুঁজিবাজারের উন্নয়ন।