হোম > সারা দেশ

ওরা এখন কাকে বলবে রুটি-সস এনে দাও

আবুল কালামের স্ত্রীর আর্তনাদ

মো. আল-আমিন, শরীয়তপুর

ফাইল ছবি

স্বামীর লাশ ঘিরে বুকফাটা কান্নায় ভেঙে পড়েন আইরিন আক্তার। অঝোর অশ্রু নিয়ে তার আহাজারি বাচ্চারা তো এখনো বোঝে না বাবা হারানো কী জিনিস। কিছুক্ষণ পরপরই ওরা খুঁজছে, বাবা কই, বাবা কেন আসে না? চকলেট নিয়ে আসবে না, কোক কিনে দেবে না? ওরা কাকে বলবে, আমার জন্য রুটি-সস এনে দাও। বাচ্চাগুলোর মুখ আমি কী করে দেখব? আল্লাহ, ওদের কলিজার বাবাকে ফেরত দিন। আইরিনের এই করুণ আর্তনাদে শোকের ছায়ায় ঢেকে যায় পুরো ঈশ্বরকাঠি গ্রাম।

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামের জলিল চোকদারের ছেলে আবুল কালাম (৩৫)। গত রোববার ফার্মগেট মেট্রো স্টেশন এলাকা অতিক্রম করার সময় একটি পিলার থেকে হঠাৎ খুলে পড়া ভারী ধাতব বিয়ারিং প্যাডেই থেমে যায় সব আশা–স্বপ্ন। মাথায় আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।

চাচা খালেক মিয়া চোখ মুছে বলেন, ছেলেটা ছোটবেলা থেকেই ভদ্র ছিল। দেখা হলে সালাম দিত, খোঁজখবর নিত। নিজে ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়েছে, এখন নিজের বাচ্চাগুলোকেও কম বয়সে এতিম করে গেল। এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।

চাচাতো ভাই নোমান বেপারী জানান, ‘আমি রাজনীতি করি, ভাইয়া বলতেনÑ রাজনীতি না করে লেখাপড়া করো, ভালো কিছু করো। যিনি এমন পরামর্শ দিতেন, আজ তিনি নেই। মনটা ভেঙে যাচ্ছে।

দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেই মেজোভাবি আছমা বেগমের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল আবুল কালামের। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, দুপুরে বলল, ভাবি, দু-একদিনের মধ্যে বাড়ি আসব, ইলিশ মাছ কিনে রাখেন। জানতাম না, এটাই হবে তার শেষ কথা!

স্ত্রী আইরিন আক্তার ও দুই সন্তানকে নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলিতে ভাড়া থাকতেন আবুল কালাম। পাঁচ বছরের ছেলে আবদুল্লাহ আর তিন বছরের মেয়ে সুরাইয়া এখনো বুঝতে পারছে না তাদের বাবা আর কখনো ফিরবে না। আইরিন বলেন, ‘ওরা শুধু জিজ্ঞেস করে, বাবা কই? বাবা কবে আসবে? আমি কী করে ওদের বলব, তাদের বাবা আর কোনোদিন আসবে না…।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি ট্র্যাভেল এজেন্সি চালাতেন কালাম। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য ছিলেন তিনি।

চাচাতো ভাই আবদুল গণি চোকদারের দাবি, সরকারি অব্যবস্থাপনা আর অবহেলাতেই ভাইটার প্রাণ গেল। স্ত্রী-সন্তানের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। সরকারের কাছে অনুরোধ, এ পরিবারটার দায়িত্ব যেন নেয়।

মসজিদের কবরস্থানে চিরনিদ্রায় আবুল কালাম

গতকাল সোমবার সকালে আবুল কালামের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামের বাড়িতে। জানাজায় অংশ নেন স্বজন, প্রতিবেশী ও এলাকাবাসী। কান্নায় ভেঙে পড়েন মা, ভাইবোন ও স্বজনরা। পরে নড়িয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কবরস্থানে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

এর আগে রোববার রাত ১০টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের নতুন আইলপাড়া বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আবুল কালাম দীর্ঘদিন ধরে সেখানকার পাঠানটুলি এলাকায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে সবুজায়নে ডিএনসিসি ও সেতু কর্তৃপক্ষের চুক্তি

পোস্তগোলা ব্রিজে গাড়িচাপায় নারীর মৃত্যু

সুধাসদন থেকে সরবরাহ হয়েছিল অস্ত্র-গোলাবারুদ

ইসকন ইস্যুতে মিছিলকারীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি

ঢাকা যেন এক মৃত্যুফাঁদ, কখন কীভাবে মরতে হবে কেউ জানে না

৯৭ দিনের লড়াই শেষে ঘরে ফিরলো নাভিদ

রাওয়ায় শুরু হচ্ছে বই মেলা

ইন্টারন্যাশনাল প্রেস এজেন্সি-প্রেসেঞ্জারের ঢাকা ব্যুরো অফিস উদ্বোধন

প্রস্তাবিত আইন বাস্তবায়নসহ চার দাবিতে বিভাগীয় কর্মসূচি ঘোষণা

রাজধানীতে আ.লীগের আরো ৮ জন গ্রেপ্তার