আইন কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক বিচারপতি জিনাত আরা বলেছেন, “আমাদের দেশে জমি রেজিস্ট্রেশনে অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্সসহ এত বেশি টাকা দিতে হয়—আমার মনে হয় পৃথিবীর আর কোনো দেশে জমি রেজিস্ট্রেশনে এত বেশি খরচ হয় না।”
শনিবার আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে নিবন্ধন আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
জিনাত আরা বলেন, “আমাদের দেশে জমির রেজিস্ট্রেশনের সময় অনেক ক্ষেত্রে জমির প্রকৃতি ও শ্রেণির পরিবর্তন দেখানো হয়। বাস্তবে জমির শ্রেণি একরকম থাকলেও কাগজে অন্যরকম দেখানো হয়। দলিলে প্রতারণার মাধ্যমে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে কর ফাঁকি দেওয়া হয়; কিন্তু এ ধরনের প্রতারণায় সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনার কোনো সুনির্দিষ্ট বিধান নেই।”
মতবিনিময় সভায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. নাইম আহমেদ বলেন, “এই সংশোধনীর একটি ঐতিহাসিক দিক হলো ডিজিটালাইজেশন। আমরা বিধিমালা প্রণয়নের আগেই আধুনিকায়নের মাধ্যমে আইনের একটি ভ্যালিডেশন নিচ্ছি। শুধুমাত্র শাস্তি দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না; পুরো পদ্ধতিটিকে আধুনিক ও কার্যকর করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “জমি রেজিস্ট্রেশনে আইন লঙ্ঘনের ঘটনায় সাব-রেজিস্ট্রারদের আমরা শাস্তির আওতায় আনছি এবং অনেক ক্ষেত্রে এগুলোকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করছি। সম্ভবত ভবিষ্যতে আইনজীবীরাও এই আওতায় আসবেন। রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম পুরোপুরি ডিজিটালাইজ করা গেলে হয়রানি কমবে।”
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন—আইন সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম, নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক কাজী আবদুল হান্নান, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব রুহুল আমীন ও এম এ আউয়াল, দ্যা ল' মেন্টর লিমিটেডের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার এহসান হক, প্রতিষ্ঠানটির এমডি অ্যাডভোকেট নাশিত রহমান, সলিসিটর মো. মঞ্জুরুল হোসেন, বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার খন্দকার জামিলুর রহমান, সাব-রেজিস্ট্রার মো. শাহজাহান প্রমুখ।
এসআর