কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহ মৃত্যুর ঘটনায় প্রশাসনের নীরব ভূমিকার প্রতিবাদে এবং সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। শনিবার সকালে সাড়ে ১০টার দিকে প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছে ছাত্রদল। বেলা সাড়ে ১১টায় কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত হয় সাজিদের গায়েবানা জানাজা। জানাজা শেষে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং দ্রুত প্রকৃত সত্য উদঘাটনের আহ্বান জানান।
গত ১৭ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুর থেকে সাজিদের লাশ উদ্ধার করা হয়। একইদিন দুপুরে প্রশাসন ভবনের সামনে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী আন্দোলন করেন। সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন এবং একাত্মতা প্রকাশ করেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা জানায়, আমার ভাইয়ের মৃত্যু আমরা কোনোভাবেই সাধারণ মৃত্যুর দৃষ্টিতে দেখছি না। আমরা মনে করি তাকে হত্যা করা হয়েছে। না হয় একজন ভালো সাঁতারু কিভাবে পানিতে ডুবে মারা যায়, এতো এতো আলামত থাকার পরও প্রশাসন আমার ভাইর মৃত্যু নিয়ে টালবাহানা শুরু করছে। এমন প্রশাসন আমরা চাই না। আমার ভাই পুকুরে লাশ হয়ে ভেসে ওঠে আর প্রশাসন এসিতে বসে আরাম করে। ধিক্কার জানাই এমন প্রশাসনের প্রতি।
আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, আমাদের ছাত্রের এমন মৃত্যুতে আমি শোক প্রকাশ করছি। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গতকাল তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তোমরা যে দাবি করছো সে দাবি শুধু তোমাদের নয় এ দাবি আমারও। আমার যদি মৃত্যুও হয় তবুও আমি এর সুষ্ঠু বিচার করেই ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। যদি কেউ এ হত্যার সাথে জড়িয়ে থাকে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। তোমরা যে প্রতিবাদ করছো এ প্রতিবাদ বন্ধ করবে না চালিয়ে যাবে।
এরআগে, ১৮ জুলাই রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া হল, উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) হল এবং জুলাই ৩৬ হলের ছাত্রীরা বিক্ষোভ করেন। রাত ৯টার দিকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকেও টর্চলাইট মিছিল বের করা হয়।
উল্লেখ্য, সাজিদ আবদুল্লাহ সাঁতারে পারদর্শী ছিলেন। মাদ্রাসা জীবনে সে সাঁতারে চ্যাম্পিয়নও হয়েছিলেন। প্রায়ই বিকেলে সহপাঠীদের সঙ্গে পুকুরে সাঁতার কাটতেন তিনি। মৃত্যুর দিন দুপুরে তার সহপাঠীদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তা বলেন এবং বিদায় জানান। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন সাজিদ। বিকেলে তার লাশ ভেসে ওঠে পুকুরে।