হোম > শিক্ষা

নেপথ্যে কারা, কীভাবে তৈরি হলো এ তালিকা

আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের গায়েবি বিবৃতি

মাহির কাইয়ুম, ঢাবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পলাতক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর একটি গায়েবি বিবৃতি শিক্ষক সমাজে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিবৃতিতে দাবি করা হয়–দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০১ জন শিক্ষক শেখ হাসিনার পক্ষে রায় প্রত্যাখ্যান করেছেন। কিন্তু বিশ্লেষণে বেরিয়ে আসে ভিন্ন চিত্র। বিবৃতিতে বাস্তবে ৬৩০ জনের নাম থাকলেও বাকিদের নাম পরিচয় নেই। আর নাম যুক্তদের মধ্যেও অনেক শিক্ষক অভিযোগ করছেন- তাদের অনুমতি ছাড়া গায়েবিভাবে নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে এ বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে- কে বা কীভাবে তৈরি এই তালিকা?

বিবৃতিতে ‘প্রেরক’ হিসেবে নাম রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহবুব আলম প্রদীপ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিয়েনে (ছুটি) অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন। বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক মরজিনা বেগম জানান-

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগেই মাহবুব প্রদীপ দেশে ছিলেন না, মাঝখানে শিক্ষাছুটি নিয়ে থাইল্যান্ডে, পরে আবার লিয়েন নিয়ে অস্ট্রেলিয়া গেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু আর্থিক পাওনাও তিনি পরিশোধ করেননি বলে প্রশাসন তাকে তিন মাস আগে দেশে ফিরে যোগদানের নির্দেশ দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে তার স্বাক্ষরিত বিবৃতি প্রকাশ হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে- অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী একজন শিক্ষক কীভাবে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ১০০১ জন শিক্ষকের সঙ্গে সমন্বয় করে এমন তালিকা তৈরি করলেন?

এদিকে তালিকায় নাম থাকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মহীবুল আজিজ নিজের ফেসবুকে লিখেছেন- আমি কোথাও কোনো মত দিইনি। আমার অনুমতি ছাড়াই নাম ব্যবহার করা হয়েছে- এর প্রতিবাদ জানাই।

একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শেখ সাদী জানান- সারাদিন পরীক্ষা দায়িত্বে থাকার পর ফোনে জানতে পেরেছেন তার নাম বিবৃতিতে রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষকের নাম তালিকার শীর্ষে রয়েছে তাদেরকে আমার দেশ-এর পক্ষ থেকে বারবার ফোন করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নীল দলের শিক্ষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, তালিকায় আমার নাম ব্যবহারের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। আমরা কোনো বিবৃতি দেইনি।

তিনি বলেন, যারা তালিকায় নাম ব্যবহার করেছে তারা দেখাক আমরা কোথায় এ বিবৃতির জন্য সম্মতি দিয়েছি। কোথায় আমরা স্বাক্ষর করেছি। এখন সত্য মিথ্যা একাকার করে একটি অবান্তর বিবৃতি ছড়ানো হচ্ছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ বিনষ্ট করার পাঁয়তারা।

কিন্তু নীল দলের আরেক শিক্ষক ড. আব্দুর রাজ্জাক খান বিবৃতিতে তার নাম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সম্মতির কথা জানান। তিনি বলেন, সম্মতি না দিলে নাম এলো কোথা থেকে।

অন্যদিকে, আদালত অবমাননা করে এমন বিবৃতি প্রচারের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ শিক্ষকদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যেসব শিক্ষক মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে অভিযোগ এসেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের অপরাধের মাত্রা কতটুকু ছিল তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়াধীন। আইনের চোখে সে অপরাধের মাত্রা কী, তার শাস্তি আদালত বাস্তবায়ন করবে।

এদিকে গায়েবি বিবৃতিদাতা ১০০১ আওয়ামী শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করতে ছাত্রসংসদগুলো ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর ফেসবুকে আদালত অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ লাভলু মোল্লা শিশিরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার মধ্যরাতে কিছু শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম তাকে তার বাসা থেকে আটক করে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করলে মঙ্গলবার দুপুরের আগে তাকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ।

শাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মনসুর বলেন, কিছুদিন আগে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মিছিলে অর্থ যোগানের অভিযোগে পুলিশের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় লাভলু মোল্লার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই মামলার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি জানান, সোমবার রাতেও শেখ হাসিনার রায়ের পর লাভলু তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে শেখ হাসিনার ছবি সংযুক্ত একটি ফটোকার্ড পোস্ট করেন, যেখানে লেখা ছিল- ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, আই ডোন্ট কেয়ার’।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত বছরের জুলাই আন্দোলনের পরও প্রশাসনিক ভবনে দায়িত্বে ছিলেন ছাত্রলীগপন্থি হিসেবে পরিচিত পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী।

তাদের একজন ছিলেন লাভলু মোল্লা শিশির, যিনি ছাত্রজীবনে মাস্টারদা সূর্য সেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে তিনি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ আছে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য দুঃসংবাদ

শেকৃবিতে জনবল নিয়োগের নামে আওয়ামী পুনর্বাসন

প্রাথমিক শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের জন্য চিঠি দিয়েছি: শিক্ষা উপদেষ্টা

সাউন্ড গ্রেনেডে নয়, শিক্ষিকা ফাতেমা অসুস্থতায় জন্য মারা গেছেন

সাত কলেজকে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ করার সিদ্ধান্ত

মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটূক্তির পর ক্ষমা চাইলেন জবি ছাত্রদল নেতা

হাসিনার রায় দ্রুত কার্যকর দেখতে চাই: শহীদ আবু সাঈদের ভাই

জকসু নির্বাচনে ২৬৭ প্রার্থীর মনোনয়ন সংগ্রহ

জবি ছাত্রদলের ঘোষিত জোটে অসন্তোষে পদবঞ্চিতদের ‘জাগ্রত জবিয়ান’ প্যানেল

হাসিনার ফাঁসির রায়কে স্বাগত জানিয়ে জাবি ছাত্রশিবিরের মিছিল