রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির স্বচ্ছ তদন্তের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন দুই শিক্ষার্থী। এদিকে নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ সম্পর্কে তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রোববার (২৬ অক্টোবর) জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ সম্পর্কে যে সব সংবাদ ও ফোনালাপের অডিও প্রকাশিত হয়েছে সে সম্পর্কে তদন্তের জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর এম আসাদুল হক এই কমিটির আহ্বায়ক। কমিটিকে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন ও সুপারিশ প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও
সুষ্ঠু তদন্ত করে তারপর সিন্ডিকেট মিটিং এর দাবিতে আমরণ অনশন করছে ২ জন শিক্ষার্থী। তারা হলেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদেক রহমান ও দর্শন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফুয়াদ রাতুল।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলের দিকে তারা অনশন শুরু করেন, ২৪ ঘণ্টা পার হরেও তা চলমান রয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা রাকসুর সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অ্যলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কাছে তিন দফা দাবি পেশ করেন।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের স্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তারা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন—তদন্ত শেষে রিপোর্ট পেশ করে নিয়োগ দিতে। কিন্তু এর পরিবর্তে প্রশাসন সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে নিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। অনশন শুরুর পর ২৪ ঘণ্টা পার হলেও প্রশাসন থেকে কোনো আশানুরূপ প্রতিক্রিয়া পাননি তারা।
এ বিষয়ে অনশনরত শিক্ষার্থী সাদেক রহমান বলেন, ২২ ঘণ্টা ধরে কোনো পানি বা খাবার না খেয়ে এই তীব্র রোদে অবস্থান করছি। কেন আমরা এখানে বসে আছি? কারণ বারবার প্রশাসন ও নিজ বিভাগের কাছে গিয়েও কোনো সমাধান পাইনি। আমাদের একটাই দাবি—শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্ত রিপোর্ট আমরা দেখতে চাই। আমরা রাকসুতে জানিয়েছি, উপ-উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছি, উপাচার্যকেও জানিয়েছি। তিনি বলেছেন ‘আস্থা রাখুন’, কিন্তু আমরা কীভাবে আস্থা রাখব? আস্থা রাখলে আজ আমরণ অনশনে বসতাম না। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—জুলাইয়ের পর কোনো দুর্নীতিপূর্ণ নিয়োগ হতে পারবে না; যদি হয়, তা হবে আমাদের লাশের ওপর দিয়ে।
অনশরনত আরেক শিক্ষার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন, প্রায় ২৪ ঘন্টা ধরে আমরা অনশনে বসে আছি এখনো পর্যন্ত প্রশাসন আমাদের আশানুরূপ কিছু জানায়নি। ভিসি স্যার একবার এসেছিলেন, তিনি বলে গেলেন যে তাদের উপর আস্থা রাখতে। কিন্তু কোনো প্রক্রিয়ার কথা জানাননি, এবং বিতর্কগুলো সামনে নিয়ে যে নিয়োগগুলো হচ্ছে এবং সিন্ডিকেট মিটিং এ চূড়ান্ত হতে চলেছে এ বিষয়ে নাকি আমাদের কথা বলার এক্তিয়ার নেই। সে জায়গা থেকে আমি বলবো, বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক লেনদেন এর মাধ্যমে, দলীয়করণ এর মাধ্যমে যে নিয়োগগুলো হচ্ছে এর ভুক্তভোগী শুধু নাট্যকলা বিভাগ না, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের৷
এ বিষয়ে উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব বলেন, আমরা তাদের বিষয়টি বিবেচনা করছি। ইতোমধ্যে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। আর সিন্ডিকেটের বিষয় সিন্ডিকেট দেখবে।
উল্লেখ্য, আগামীকাল সিন্ডিকেট মিটিং অনুষ্ঠিত হবে।