নাট্যদল বিবেকানন্দ থিয়েটারের ২৫তম প্রযোজনায় মঞ্চে এল দস্তয়ভস্কির বিখ্যাত ছোটগল্প দ্য জেন্টেল স্পিরিট অবলম্বনে নাটক ‘ভাসানে উজান’। অপূর্ব কুমার কুণ্ডুর নাট্যরূপ এবং শুভাশীষ দত্ত তন্ময়ের নির্দেশনায় একক নাটকে অভিনয় করেছেন মো. এরশাদ হাসান।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে দলের ২৫তম প্রযোজনা ‘ভাসানে উজান’ নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়। দর্শকদের চাহিদায় ‘ভাসানে উজান’ নাটকটির দ্বিতীয় প্রদর্শনী গত শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয়। ‘ভাসানে উজান’ ও অভিনেতার দীর্ঘ দুই দশকের নাট্যচর্চার অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছেন আমার দেশ-এর বিনোদন রিপোর্টার আফসানা খানম আশা।
‘ভাসানে উজান’ নাটকে একক অভিনয়ের সিদ্ধান্ত কীভাবে নিলেন?
এই নাটকের গল্প, এর মনস্তত্ত্ব এবং চরিত্রের গভীরতা আমাকে শুরু থেকেই টানছিল। নির্দেশক ও নাট্যকারের সঙ্গে আলোচনা করেই সাহস করে একক অভিনয়ে নেমেছি।
দস্তয়ভস্কির ‘দ্য জেন্টেল স্পিরিট’ অবলম্বনে নির্মিত নাটক, এই চ্যালেঞ্জটা কীভাবে দেখছেন?
দস্তয়ভস্কির মনস্তত্ত্ব বহুমাত্রিক। তার লেখা মঞ্চে ধরতে গেলে প্রচুর প্রস্তুতি লাগে। এই চ্যালেঞ্জটাই আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করেছে।
একক অভিনয়ের সবচেয়ে কঠিন দিক কোনটি মনে হয়?
মঞ্চে একা থাকলে চরিত্র, শক্তি, আঙ্গিক ও বাচিক অভিনয় সবকিছু নিজের ওপর নিতে হয়। এক সেকেন্ডের জন্যও মনোযোগ হারালে গল্পের ধারাবাহিকতা ভেঙে যেতে পারে।
চরিত্রটির আবেগ ও অন্তর্দহন ফুটিয়ে তুলতে কী ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন?
গভীর পাঠ, চরিত্র বিশ্লেষণ, শরীরী ভাষা এবং ভয়েস-মড্যুলেশন নিয়ে দীর্ঘ অনুশীলন করেছি। পাশাপাশি মনোবিজ্ঞান বিষয়ক কিছু গবেষণাও করেছি।
এই নাটকের কোন দিকটি আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বেশি স্পর্শ করেছে?
আত্মদর্শন বা সেলফ রিফ্লেকশন এটা আমাকে নাড়া দিয়েছে। চরিত্রের ভেতরের প্রশ্নগুলো আমার ব্যক্তিজীবনেও আলো ফেলেছে।
নির্দেশক শুভাশীষ দত্ত তন্ময়ের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
তিনি খুবই পরিশ্রমী, মেধাবী এবং অভিনেতাবান্ধব একজন নির্দেশক। চরিত্র গঠনে তিনি আমাকে পুরো স্বাধীনতা দিয়েছেন।
একক নাটক দর্শকদের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন?
একক নাটক দর্শককে চরিত্রের খুব কাছে নিয়ে যায়। দর্শক অনুভব করে, এই মানুষটি আসলে কে, কী ভাবছে, কেন এমন করছে।
নতুন প্রজন্মের নাট্যশিল্পীদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
নিয়মিত অনুশীলন, পড়াশোনা এবং আত্মমর্যাদা বজায় রাখা। থিয়েটার শুধু অভিনয় নয়, এটা একটা জীবনচর্চা।
‘ভাসানে উজান’-এ আপনার অভিনয় থেকে দর্শক কী বার্তা পাবে বলে মনে করেন?
মানুষ শেষ পর্যন্ত ভালো থাকতে পারে কি না—এই প্রশ্নটি দর্শকের মনে নতুনভাবে আঘাত করবে। তারাই উত্তর খুঁজে নেবে।
নাটকটি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কী?
আমি চাই দর্শক ভাবুক, অনুভব করুক, আলোচনায় যোগ দিক। যদি তারা মঞ্চ থেকে বের হয়ে নিজের জীবন সম্পর্কে নতুন কিছু ভাবতে পারে—তাহলেই সফলতা।