অ্যানাকোন্ডার নাম শুনলেই ভয়ে গা শিউরে ওঠে মানুষের। ভয়ঙ্কর বিষধর এই বিশালাকার সাপকে কেন্দ্র করে নির্মিত ‘অ্যানাকোন্ডা’ সিরিজের ছবিগুলো যারা দেখেছেন তারা জানেন এটি কি করতে পারে। নতুন করে যারা দেখতে চান তাদের জন্য সুযোগ আসছে শিগগিরই। আগামীকাল ২৫ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তি পেতে যাচ্ছে নতুন ‘অ্যানাকোন্ডা’।
অন্যদিকে, অ্যানিমেশন সিনেমার ভক্তদের জন্যও আছে সুখবর। দ্য স্পঞ্জবব স্কয়ারপ্যান্টস সিরিজের নতুন সিনেমা ‘দ্য স্পঞ্জবব মুভি: সার্চ ফর স্কয়ারপ্যান্টস’ এসেছে পর্দায়। সিনেমা দু’টি বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাবে ২৫ ডিসেম্বর।
অ্যানাকোন্ডা
১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া অ্যাকশন অ্যাডভেঞ্চার হরর সিনেমা ‘অ্যানাকোন্ডা’ বেশ আলোচনা সৃষ্টি করেছিল। লুইস লোসা পরিচালিত সিনেমাটিতে অভিনয় করেছিলেন জনপ্রিয় তারকা জেনিফার লোপেজসহ আরও অনেকে। বক্স অফিসে ভালো সাফল্য পায় ভয়ঙ্কর সাপের এই সিনেমা। ২০০৪ সালে এর সিক্যুয়েল ‘অ্যানাকোন্ডাস: দ্য হান্ট ফর দ্য বøাড অর্কিড’ মুক্তি পায়। পরবর্তীতে আরও দুটি ছবি সরাসরি টু-ভিডিওতে মুক্তি পায় ‘অ্যানাকোন্ডা ৩: অফস্প্রিং (২০০৮) এবং অ্যানাকোন্ডাস: ট্রেইল অফ বøাড (২০০৯)। সনি পিকচার্স ২০২০ সালের জানুয়ারিতে রিবুট তৈরির ঘোষণা দেয়। সে অনুযায়ী নির্মিত হয় অ্যাকশন কমেডি সিনেমা ‘অ্যানাকোন্ডা’। ১৯৯৭ সালের অ্যানাকোন্ডা সিনেমার মেটা-রিবুট এটি। টম গোর্মিকানের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছেন পল রুড, জ্যাক বø্যাক, স্টিভ জ্যান, থান্ডিওয়ে নিউটন, ড্যানিয়েলা মেলচিওর এবং সেলটন মেলো।
এবারের সিনেমাটি ১৯৯৭ সালের মূল সিনেমার সরাসরি রিমেক নয়, এটি একটি মেটা-রিবুট কমেডি-থ্রিলার হিসেবে নির্মিত হয়েছে। গল্পের মূল চরিত্র ডগ এবং গ্রিফ তাদের জীবনের মিডলাইফ ক্রাইসিস কাটিয়ে উঠতে চায়। তারা সিদ্ধান্ত নেয় তাদের শৈশবের প্রিয় সিনেমা অ্যানাকোন্ডা পুনরায় বানাতে যাবে। ছোট বাজেটের একটি সিনেমা বানানোর জন্য অ্যামাজন জঙ্গলে যাত্রা শুরু করে তারা। কিন্তু শুটিং শুরু হওয়ার পর তাদের সামনে আসে অন্যরকম এক সংকট। আবহাওয়া এবং পরিবেশগত সমস্যার সঙ্গে লড়াইতো আছেই তার উপরে একটি বাস্তব জীবনের বিশাল এক অ্যানাকোন্ডা হাজির হয়। এই বিপজ্জনক জঙ্গলে তাদের হাসি-আনন্দের পরিস্থিতি দ্রæত প্রাণঘাতী বাস্তবে পরিনত হয়। সাপের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকাটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়ে তাদের জন্য।
সম্প্রতি সিনেমাটির একটি প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হয়েছে। যারা দেখেছেন তাদের মধ্য থেকে অনেকে মিশ্র অনুভূতির কথা জানিয়েছেন। প্রারম্ভিক প্রতিক্রিয়ায় অনেকে বলতে চাইছেন এটি বড়দিনের ছুটির মৌসুমে মজার একটি পপকর্ন সিনেমা। বিশেষ করে জ্যাক বø্যাক ও পল রাড-এর কেমিস্ট্রি, চিত্রনাট্যের আত্ম-সচেতন রসবোধ উপভোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
দ্য স্পঞ্জবব মুভি: সার্চ ফর স্কয়ারপ্যান্টস
দ্য স্পঞ্জবব স্কয়ারপ্যান্টস একটি জনপ্রিয় অ্যানিমেটেড সিরিজ ও চরিত্র, যা একটি হলুদ স্পঞ্জ-সদৃশ প্রাণীর মজার কান্ডকারখানা নিয়ে তৈরি। সে বিকিনি বটম শহরে তার পোষা শামুক গ্যারির সাথে একটি আনারসের মধ্যে থাকে এবং ক্রাস্টি ক্র্যাবে কাজ করে। ‘দ্য স্পঞ্জবব মুভি: সার্চ ফর স্কয়ারপ্যান্টস’ ২০২০ সালের স্পঞ্জ অন দ্য রান-এর পরে সিরিজের উপর ভিত্তি করে চতুর্থ থিয়েটার চলচ্চিত্র। এই সিনেমায় সে ফ্লাইং ডাচম্যানের মুখোমুখি হয় এবং সমুদ্রের গভীরে অ্যাডভেঞ্চার করে। স্পঞ্জববকে তার হারিয়ে যাওয়া পোষা প্রাণী গ্যারির সন্ধানে সমুদ্রের গভীরে এক মহাকাশযানে যেতে হয়, যেখানে সে ফ্লাইং ডাচম্যানের মতো ভিলেনদের মোকাবিলা করে।
স্পঞ্জবব দেখতে পায় যে সে লম্বা হয়ে উঠেছে তীব্র রোলার কোস্টারে চড়ার মতো, কিন্তু তা করতে সে খুব ভয় পায়। সে মিস্টার ক্র্যাবসের মতো সাহসী হতে চায়, যিনি তার যৌবনে একজন লোভী ছিলেন বলে দাবি করেন। মিস্টার ক্র্যাবসের গোপন বেসমেন্টে তার জলদস্যুদের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করার পর, সে অনিচ্ছাকৃতভাবে দ্য ফ্লাইং ডাচম্যানকে ডেকে পাঠায়। একজন ভূত জলদস্যু যাকে চিরকাল আন্ডারওয়ার্ল্ডে ঘুরে বেড়ানোর জন্য অভিশপ্ত করা হয়েছিল যতক্ষণ না সে একটি নির্দোষ আত্মার সাথে স্থান পরিবর্তন করতে পারে। স্পঞ্জববকে নশ্বর জীবনে ফিরে যাওয়ার জন্য তার প্রয়োজনীয় আত্মা মনে করে, সে তাকে এবং তার সেরা বন্ধু প্যাট্রিক স্টারকে তার দলে আমন্ত্রণ জানায় এবং স্পঞ্জববকে একজন লোভী হতে সাহায্য করার প্রতিশ্রæতি দেয়। মিস্টার ক্র্যাবস, স্পঞ্জববকে সাহসী না বলে অনুতপ্ত হয়ে, স্কুইডওয়ার্ড টেন্টাকলস এবং গ্যারি দ্য স্নেইলকে এই জুটিকে উদ্ধার করার জন্য অনুসরণ করে।
১৯ ডিসেম্বর সিনেমাটি মুক্তির পর দর্শকদের আশানুরূপ সাড়া পেয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় ৩,৫৫৭টি থিয়েটারে মুক্তি পায়। প্রথম দিনে ৫.৬ মিলিয়ন ডলার আয় করে সিনেমাটি। সমালোচকরাও ইতিবাচক রিভিউ দিয়েছেন। রটেন টমেটোস জানিয়েছে, ৩৯টি সমালোচক পর্যালোচনার মধ্যে ৮৭% ইতিবাচক ছিল, যার গড় রেটিং ৬.৭/১০। দ্য হলিউড রিপোর্টারের জাস্টিন লো ছবিটির ইতিবাচক পর্যালোচনা করে বলেছেন, ছবিটি সহজেই সিরিজের আরেকটি আকর্ষণীয়, আনন্দদায়কভাবে উন্মত্ত চতুর্থ কিস্তি প্রদান করে। সানডে ইন্ডিপেন্ডেন্টের ক্রিস ওয়াসার ছবিটিকে পাঁচের মধ্যে তিন তারকা দিয়েছেন। লিখেছেন, ‘এই প্রাণবন্ত কার্টুন অ্যাডভেঞ্চারটি আপনার প্রত্যাশার মতোই অদ্ভুত।’