হোম > ফিচার > ক্যাম্পাস

শিক্ষকের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে ইবি শিক্ষার্থীরা

প্রতিনিধি, ইবি

একই দিনে বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলনে নেমেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২ নভেম্বর) বেলা ১২টার পর থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় পালিত হয়েছে এসব কর্মসূচি।

এ সময় তারা অভিযোগ করেন, যখনই সাজিদ হত্যা ইস্যুতে কোনো প্রমাণ উদঘাটন করার চেষ্টা করা হয় তখনই কিছু মহল ভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে সামনে আসে।

প্রথমে জুলাই আন্দোলনবিরোধী দু’শিক্ষক — মার্কেটিং বিভাগের মাজেদুল হক নয়ন ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি শহিদুল ইসলামের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘৪ আগস্ট স্যার ক্যাম্পাসে ছিলেন না; নিরপেক্ষ তদন্ত চাই; মিথ্যার বিরুদ্ধে স্বচ্ছতা চাই; শিক্ষকের সম্মান ফিরিয়ে দাও; সত্য জাগুক, মিথ্যাচার থামুক।’

তারা বলেন, এই সিদ্ধান্ত কিসের ভিত্তিতে হয়েছে, কিসের উপর ভিত্তি করে স্যারকে বহিষ্কার করা হলো তা আমরা জানতে চাই। যারা আন্দোলনে যুক্ত ছিল তারা কেউ স্যারের দ্বারা কখনো হুমকি-ধামকির শিকার হননি। আমাদের ছোটভাই মারুফ যখন পুলিশ কর্তৃক আটক হয়, তখন স্যাররা সন্ধ্যার মধ্যে তাকে ছাড়িয়ে আনেন। আমাদের উপর যে কোনো স্যার চাপ প্রয়োগ করেননি— শিক্ষার্থীবান্ধব সেই স্যারকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা ২০–৩০ জন, অথচ আমরা এই বিভাগের উপকারভোগী ৪০০ থেকে ৫০০ জন। তারা কি এই বিষয়ে ভাববেন না? প্রশাসন কখনোই আমাদের মতামত ব্যতীত এমন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না। আমরা মেনে নিচ্ছি স্যার আগে ভিন্ন সংগঠনের মতাদর্শ ধারণ করতেন; তার সংগঠন অপরাধী হলেও জুলাই আন্দোলনে স্যার কখনো কোনো শিক্ষার্থীকে হুমকি বা মানসিক কষ্ট দেয়ার অভিযোগ আমরা পাইনি। খুন, গুম, হত্যা এবং এরকম গুরুতর অভিযোগ ব্যতিত একজন শিক্ষককে বহিষ্কার করার যৌক্তিকতা আমরা দেখছি না।

আমরা অবশ্যই ফ্যাসিস্টদের বিচার চাই; যদি ইবিতে কেউ এরকম নিন্দনীয় কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে, তারও বিচার চাই।

এর কিছুক্ষণ পরেই জুলাই বিরোধী শক্তির আস্ফালনের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থী, সাবেক সমন্বয়ক ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

এ সময় তারা স্লোগান দেন, ‘জেগেছে রে, জেগেছে ছাত্রসমাজ’; ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’; ‘আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’; ‘দালালদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’; ‘আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’; ‘ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’; ‘ধর ধর লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’ ইত্যাদি।

সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ‘এই প্রশাসনের শুরুতেই যারা সরাসরি মিছিলে অংশ নিয়ে গণহত্যাকে বৈধতা দিয়েছে তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছিলাম। অনেক দিন পরে হলেও প্রশাসন তালিকা দিয়েছে। কিন্তু আমরা অত্যন্ত হতাশ — প্রশাসন আমাদের আশা পূরণ করতে পারেনি। যারা গণহত্যায় জড়িত তাদের তালিকা সংক্ষিপ্ত; এতে পর্যাপ্ততা নেই। জুলাইয়ের মিছিলে শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা ছিলেন, কিন্তু তাদের নাম আসেনি।

মিছিলের নেতাদের নাম আসেনি, ছাত্রলীগের নাম আসেনি। রাঘববোয়ালদের বাইরে রেখে যারা তুলনামূলক কম দোষী তাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে যে অনুযায়ী শাস্তি প্রয়োজন তাকে সে অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হোক। শিক্ষকদের বলতে চাই — শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাইলে আমাদেরও সম্মুখীন হতে হবে; বিভিন্নভাবে তাদের প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের দুঃসাহস দেখাবেন না।’

একই সময়ে, নারী শিক্ষার্থীদের পোশাক নিয়ে কটুক্তিকারী আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নাছির উদ্দিন মিঝির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিলের ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে তার পক্ষে আন্দোলন করেন আল-কুরআন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এ সময় তারা স্লোগান দেন, ‘শিক্ষক অবমাননা মানি না, করব না’; ‘নোংরা রাজনীতির ঠিকানা ইবিতে হবে না’; ‘অন্ধকারে ঢিল ছোড়া বন্ধ করো’; ‘শিক্ষক আমাদের জ্ঞানগুরু — অপমান কেন?’; ‘লাশ নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করো’ ইত্যাদি।

তারা বলেন, স্যারকে অপমান করা হচ্ছে; বরখাস্তের দাবিগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জুলাই আন্দোলনে এমতাজ স্যার ও নাসিরউদ্দিন মিঝি প্রথম সারিতে ছিলেন। স্যারের পদত্যাগকাণ্ড নির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ বলে তারা মনে করেন।

যখনই সাজিদ হত্যা ইস্যুতে কোনো প্রমাণ উদঘাটন করার চেষ্টা করা হয় তখনই কিছু মহল এজেন্ডা নিয়ে সামনে আসে।

স্যারের অডিও যদি ৯০ দিন আগের হয়, তখন কেন তখন তা সামনে আনা হয়নি — এখন কেন আনা হচ্ছে, এটাই তাদের প্রশ্ন; তারা দাবি করেন সাজিদ হত্যার ইস্যু ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ দিকে বিবিএ ফ্যাকাল্টির সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসা মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্ল্যাকার্ডে লেখা দেখা যায়, ‘Who taught the truth? সে কেন বহিষ্কৃত?’; ‘We need our teacher back”; “Bring back our pride’; ‘Education needs teachers, not punishment’ ইত্যাদি।

তারা বলেন, এভাবে শিক্ষক বহিষ্কার হওয়ায় প্রধান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা — প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী। আমাদের বিভাগে মাত্র পাঁচজন শিক্ষক, তাদের মধ্যে একজনকে এভাবে সরিয়ে দিলে আমাদের শিক্ষার মান কোথায় দাঁড়াবে? মাজেদুল স্যার এমন একজন শিক্ষক যিনি কখনো কোনো দুর্নীতিতে ছিলেন না; আন্দোলনের সময় তিনি কখনো কোনো শিক্ষার্থীকে জোর করে ব্যবহার করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে যে জুলাই বিরোধীতার অভিযোগ আনা হয়েছে, তা পুনরায় তদন্ত ও বিবেচনার দাবি তারা রাখেন। আমরা ফ্যাসিস্টদের বিচার চাই, কিন্তু নিরপরাধ কাউকে যেন অন্যায়ভাবে শাস্তি না দেওয়া হয় — এটাই আমাদের দাবি।

ইসকনের কুশল বরণের জন্য পদোন্নতি বোর্ড বসছে কাল

গ্রাহক পর্যায়ে বাড়ছে ইন্টারনেটের দাম

এডিটেড ছবি ছড়ানোয় ঢাবি শিক্ষক মোনামীর মামলা

হ্যাকারদের ব্যবহৃত প্রযুক্তি

ল্যাপটপে সবসময় চার্জার লাগিয়ে রাখবেন?

তার থেকে তরঙ্গ

ভ্রমণপ্রেমীদের স্মার্টফোন ‘ভি৬০ লাইট’

চিকিৎসা কোনো বাণিজ্য নয়, সেবার পেশা: ডা. এফএম সিদ্দিকী

জবি প্রশাসনের কাছে ইউটিএলের ২০ দফা দাবি

ভবিষ্যতে কর ব্যবস্থায় দুর্নীতি থাকবে না : এনবিআর সদস্য কায়কোবাদ