হোম > ফিচার > ক্যাম্পাস

ছাত্রদলের প্যানেলে শীর্ষ দুই পদেই বহিরাগত, তৃণমূলে অসন্তোষ

জকসু নির্বাচন

লিমন ইসলাম, জবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) দীর্ঘ ৩৮ বছর পর হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর যা প্রথম। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচন ঘিরে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে রাজনৈতিক জোট ও পদবণ্টনের হিসাব-নিকাশ। ছাত্রদলের সম্ভাব্য প্যানেলকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা বিতর্ক। যা ক্যাম্পাসে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

সংগঠনটির অনেক তৃণমূল নেতাকর্মী অভিযোগ করছেন, নিজেদের দীর্ঘদিনের সক্রিয় কর্মীদের বাদ দিয়ে ছাত্রদলের বাইরের প্রার্থী দিয়ে প্যানেল সাজানো হচ্ছে। এতে তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। ছাত্রদলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করছেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের একক শক্তিকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে একটি মহল জোরালো ভাবে কাজ করছে। এই সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের চাপ রয়েছে বলেও অভিযোগ করছেন তাঁরা।

ছাত্রদলের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রদল জকসু নির্বাচনে যে প্যানেল ঘোষণা করতে যাচ্ছে যেখানে শীর্ষ দুইটি পদ ভিপি এবং জিএসসহ সম্পাদকীয় এবং সদস্য পদে আরও ৮ পদসহ মোট ১০টি পদেই ছাত্রদলের বাইরের প্রার্থীদের দিয়ে প্যানেল ঘোষণা হতে পারে। এরমধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদ ও অন্যান্য সংগঠনের কয়েকজন নেতাকে এই প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। এর বাইরে দুয়েকজন পরিচিত মুখ সাধারণ শিক্ষার্থীও থাকতে পারেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এতে করে ছাত্রদলের দীর্ঘদিনের তৃণমূল নেতাকর্মীরা নিজেদের অবমূল্যায়িত মনে করছেন।

তারা বলছেন, বহু বছর ধরে তারা সংগঠনের পতাকা বহন করে আন্দোলন করেছেন নির্যাতন সহ্য করেছেন। অথচ এখন বাইরের মানুষ এসে নেতৃত্বের আসনে বসবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না বলেও অভিযোগ তাদের।

ছাত্রদল ও অন্যান্য সূত্রমতে, ছাত্রদল তাদের প্যানেলে ২১টি পদের মধ্যে প্রায় ১০টি পদ বাইরের সংগঠন বা অরাজনৈতিক প্রার্থীদের দিতে প্রস্তুত। এর মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদের কাছে যেতে পারে ভিপি পদসহ ৬টি পদ, এখানে ভিপি পদে ছাত্র অধিকার পরিষদ জবি শাখার সভাপতি একেএম রাকিব, জিএস পদে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও খাদিজাতুল কুবরাকে, যিনি আওয়ামী লীগের সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাভোগ করেছিলেন। এজিএস পদে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতিকুর রহমান তানজিলের নাম ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানা গেছে। ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মী এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এমন হলে শীর্ষ তিন পদের মধ্যে এক এজিএস ছাড়া ভিপি ও জিএস শীর্ষ দুই পদেই ছাত্রদলের বাইরের প্রার্থী হবেন।

এদিকে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করছেন, ছাত্রদলের প্যানেল গঠনের সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের একাধিক সিন্ডিকেট প্রভাব ফেলছে। অনেকে বলছেন, ছাত্রদলের জবি শাখার ওপর একটি বিশেষ মহল চাপ প্রয়োগ করছে যাতে যৌথ প্যানেলে ছাত্রদলের বাইরের প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এতে স্থানীয় নেতারা রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান হারানোর আশঙ্কা করছেন। নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করছেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের একক শক্তিকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে একটি মহল জোরালো ভাবে কাজ করছে। এই সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের চাপ রয়েছে বলেও অভিযোগ করছেন তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাখা ছাত্রদলের এক যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, ছাত্রদল সবসময় জবিতে শক্ত অবস্থানে ছিল। এখন যদি বাইরের প্রার্থীদের দিয়ে প্যানেল গঠন হয়, তাহলে আমাদের আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের মূল্য শূন্যে নেমে আসবে। আমরা চাই, জবি ছাত্রদলের নিজস্ব প্রার্থীরাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের একাধিক যুগ্ম আহ্বায়ক ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন। এর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সবসময় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান—সব জায়গায় জবি ছাত্রদল ছিল সামনের কাতারে। এখন যখন জকসু নির্বাচন সামনে, তখনই বহিরাগতদের প্রাধান্য দিয়ে আমাদের উপেক্ষা করা হচ্ছে। এটি একটি মহলের ষড়যন্ত্র, যারা জবি ছাত্রদলের ঐক্য ও নেতৃত্বকে ধ্বংস করতে চায়।

তারা আরও বলেন, আমরা চাই আমাদের সংগঠনের যোগ্য, মেধাবী ও ত্যাগী নেতারাই প্রার্থী হোক। বাইরের সংগঠনের নেতাদের এনে প্যানেল সাজানো মানে হচ্ছে ছাত্রদলকে দুর্বল করা। ভাড়াটে প্রার্থী দিয়ে কখনও ছাত্র রাজনীতি টেকে না। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের যে ঐতিহ্য আছে, তা কোনোভাবেই নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।

শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওতুল ইসলাম পরাগ বলেন, আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না যেখানে বিগত সরকারের সময়ে নির্যাতনের শিকার কোনো ত্যাগী কর্মী তার প্রাপ্য জায়গা থেকে বঞ্চিত হবে। আমাদের অভিভাবক দেশনায়ক তারেক রহমানের কাছে অনুরোধ, তিনি যেন তৃণমূলের নেতাকর্মীদের যোগ্যতাকেই অগ্রাধিকার দেন। আমি সবসময় দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তবে এমন সিদ্ধান্ত যেন না হয় যা আমাদের কর্মীদের হতাশ করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, সবকিছু বিবেচনা করে আমরা একটা ইনক্লুসিভ প্যানেল দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা চেষ্টা করছি, আশা করি ভালো কিছু হবে।

শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অসন্তোষের বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে সবাই তো নিজেকে মনে মনে ভিপি ভাবে। এতে আবার অনেক মিডিয়া হাইপও তুলে দেয়। কিন্তু আসলে বাস্তবতা তো ভিন্ন।

গাভির ওলান প্রদাহ রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা উদ্ভাবনে কর্মশালা

ঢাবিতে ১৮তম ‘টিএইচএম ডে ও ক্যারিয়ার ফেস্ট’ উদযাপিত

২৪ ঘণ্টার মধ্যে রেজিস্ট্রারের অপসারণ চায় রাকসু

নগদ-এ ক্যাডেট কলেজের ভর্তি আবেদন ফি চার্জ ফ্রি

ইবির আওয়ামীপন্থি দুই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত

পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস উদযাপিত

ব্রাকসুর ভোট বানচালের নয়া কৌশল নিয়ে শঙ্কা

পোশাক নিয়ে রাবি প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি

১৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গাকৃবিতে ওরিয়েন্টেশন

ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের ‘শান্তি চুক্তি’, আসেনি সিটি কলেজ