সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ হাজার ২১৯টি সহকারী শিক্ষক পদে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আজ শনিবার। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় আবেদন শুরু হবে। আবেদন প্রক্রিয়া চলবে আগামী ২১ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।
রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোর প্রার্থীরা নিয়ম মেনে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এতে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। টেলিটক প্রি-পেইড নাম্বার দিয়ে ফি পরিশোধ করা যাবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়সসীমা
সহকারী শিক্ষক পদটি ১৩তম গ্রেড। জাতীয় বেতনস্কেল-২০১৫ অনুযায়ী, এ পদের বেতন ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা। এ পদটিতে আবেদন করতে চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর তারিখে প্রার্থীর ন্যূনতম বয়স হতে হবে ২১ বছর এবং সর্বোচ্চ বয়স হবে ৩২ বছর।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রার্থীকে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ (৪ স্কেলে ন্যূনতম ২.২৫ ও ৫ স্কেলে ন্যূনতম ২.৮) স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। শিক্ষাজীবনের কোনো স্তরে তৃতীয় বিভাগ অথবা সমমানের জিপিএ অথবা তৃতীয় শ্রেণি অথবা সমমানের সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য হবে না।
যেভাবে আবেদন
আগ্রহী প্রার্থীরা dpe.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আনলাইনে অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম পূরণের নির্দেশনা পাবেন। নির্দেশনা অনুসরণ করে অনলাইনে অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ করে সাবমিট করলে ইউজার আইডিসহ আনপেইড স্ট্যাটাস সম্পন্ন ড্রাফটস অ্যাপ্লিকেন্টস কপি তৈরি হবে, যা প্রিন্ট করে আবেদনের তথ্য যাচাই করতে হবে।
আবেদন ফি জমা দেওয়ার আগে ড্রাফটস অ্যাপ্লিকেন্টস কপি একাধিকবার পড়ে প্রার্থী তার দেওয়া তথ্যের যথার্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন। কোনো ভুল পরিলক্ষিত হলে তার বিপরীতে আবেদন ফি জমা দেওয়া যাবে না এবং বিজ্ঞপ্তির ২ নম্বর শর্ত অনুসরণ করে নতুন করে অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করে নতুন ইউজার আইডি সংবলিত আনপেইড স্ট্যাটাস সম্পন্ন ড্রাফটস অ্যাপ্লিকেন্টস কপি প্রিন্ট নিয়ে পুনরায় প্রদত্ত তথ্য যাচাই করতে হবে।
নির্ভুলভাবে পূরণকৃত অ্যাপ্লিকেশন ফর্মের বিপরীতে প্রদত্ত ইউজার আইডি ব্যবহার করে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ড্রাফটস অ্যাপ্লিকেন্টস কপিতে প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক যে কোনো টেলিটক প্রি-প্রেইড মোবাইল নম্বর থেকে এসএমএসের মাধ্যমে অফেরতযোগ্য ১০০ টাকা আবেদন ফি এবং টেলিটকের সার্ভিস চার্জ ও ভ্যাট ১২ টাকাসহ মোট ১১২ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
ফি পরিশোধের পর আবেদনে প্রদত্ত মোবাইল নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদনকারীকে ইউজার আইডিসহ একটি পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। এরপরে dpe.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটের ডাউনলোড অ্যাপ্লিকেন্টস ট্যাবে ক্লিক করে মোবাইলে প্রাপ্ত ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড সাবমিট করে পেইড স্ট্যাটাস সম্পন্ন ফাইনাল অ্যাপ্লিকেন্টস কপি পাওয়া যাবে।
ফাইনাল অ্যাপ্লিকেন্টসের রঙিন প্রিন্ট কপি নিয়োগ প্রক্রিয়ার শেষ পর্যন্ত আবশ্যিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। কেবল আবেদন ফি পরিশোধের পরেই আবেদনটি চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়েছে বলে গণ্য হবে। আবেদনে আর কোনো তথ্য সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন বা একই প্রার্থীর নতুনভাবে অ্যাপ্লিকেশন পূরণের সুযোগ থাকবে না।
আবেদনকারীর জন্য আরো যেসব শর্ত
বিবাহিত নারী প্রার্থীরা আবেদনে তাদের স্বামী অথবা পিতার স্থায়ী ঠিকানার যে কোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন। তবে এ দুটি স্থায়ী ঠিকানার মধ্যে তিনি যেটি আবেদনে উল্লেখ করবেন, তার প্রার্থিতা সেই উপজেলা/শিক্ষা থানার জন্য বিবেচিত হবে।
অসত্য/ভুয়া তথ্য সংবলিত/ত্রুটিপূর্ণ/অসম্পূর্ণ আবেদনপত্র কোন কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে বাতিল বলে গণ্য হবে। প্রার্থী কর্তৃক দাখিলকৃত/প্রদত্ত কোনো তথ্য বা কাগজপত্র নিয়োগ কার্যক্রম চলাকালে যে কোনো পর্যায়ে বা নিয়োগপ্রাপ্তির পরেও অসত্য/ভুয়া প্রমাণিত হলে তার দরখাস্ত/নির্বাচন/নিয়োগ বাতিল করা হবে এবং মিথ্যা/ভুয়া তথ্য সরবরাহ করার জন্য তার বিরুদ্ধে আইনগত/প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা/শিক্ষা থানাভিত্তিক নিয়োগ করা হবে। প্রার্থী যে উপজেলা/ শিক্ষা থানার স্থায়ী বাসিন্দা তিনি সে উপজেলা/ শিক্ষা থানার শূন্য পদে নিয়োগের জন্য বিবেচিত হবেন। আবেদনে নিজ জেলা, থানা/উপজেলা ভুল করলে তার প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে।
নির্বাচিত প্রার্থীকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫ অনুযায়ী নিজ উপজেলা/শিক্ষা থানায় চাকরি করতে হবে। তার বদলি নিজ উপজেলা/শিক্ষা থানার বিদ্যালয়সমূহের মধ্যে সীমিত থাকবে।
ধূমপানসহ যে কোনো ধরনের মাদক গ্রহণের অভ্যাস থাকলে তাদের আবেদন করার প্রয়োজন নেই বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার পদ্ধতি
নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষা হবে চারটি বিষয়ে। সেগুলো হলো বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান, সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ ও অন্তর্জাতিক বিষয়াবলি)। এ চারটি বিষয়ে মোট ৯০ নম্বরের পরীক্ষা হবে।
বাংলা ও ইংরেজিতে ২৫ নম্বর করে মোট ৫০ নম্বর এবং গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান এবং সাধারণ জ্ঞানে (বাংলাদেশ ও অন্তর্জাতিক বিষয়াবলি) ২০ নম্বর করে মোট ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নির্বাচিত প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। মৌখিক পরীক্ষা হবে ১০ নম্বরের।
৯০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় পাস নম্বর (মোট নম্বরের ৫০ শতাংশ) হবে ৪৫ নম্বর। আর মৌখিক পরীক্ষায় পাস নম্বর (১০ এর মধ্যে ৫০ শতাংশ হিসাবে) হবে ৫ নম্বর। লিখিত পরীক্ষায় ৯০ মিনিট সময় দেওয়া হবে। মৌখিক পরীক্ষার জন্য সময় নির্ধারিত নয়।