হোম > জাতীয়

ইসলাম নিয়ে কটূক্তিকারীদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে

সেমিনারে আমার দেশ-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমান

স্টাফ রিপোর্টার

যারা ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করে-তাদের খারাপ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ওয়ার্ল্ড মুসলিম উম্মাহ আয়োজিত ‘বিশ্ব মুসলিম ঐক্য এবং দ্বন্দ্ব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান বলেন, অশিক্ষিত বাউল নামধারীর মতো একেবারেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কাজ যারা করছে এবং যারা ইসলাম সম্পর্কে কটুক্তি করে -তাদের কোন খারাপ উদ্দেশ্য আছে। তারা যে কেবল ইসলাম বিদ্বেষী তাই নয়, এর পেছনে একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে। বাংলাদেশে একটা অস্থিরতা তৈরি করতে তারা এগুলো বানান। তাই আমাদের সকলের দায়িত্ব এই ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো। কিন্তু শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানানো। কোনোরকম ভায়োলেন্স বা সহিংসতার হলে আমাদের সবাইকে আবার সেই জঙ্গি ট্যাগ দেবে। এর মাধ্যমে তারা চেষ্টা করবে বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র পরিণত করতে।

সাম্প্রতিক ঘটনার বাউল কান্ডের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে কিছু বাউল নামধারী ব্যক্তি (যাদের ধর্ম সম্পর্কে কোনো ধারণাই নাই) এমনকি ইসলাম নিয়েও কোনো ধারণা নাই, -তারা অনেক সময় ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করে। সেটার প্রতিবাদ করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। কিন্তু প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমরা যেন জুলুম না করি -সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন আধিপত্যবাদী দেশসহ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত আমাদের ক্ষতি করতে বসে আছে। তাই প্রতিবাদ করতে গিয়ে জুলুম করা যাবে না। তারা চায় না বাংলাদেশে একটা শান্তিপূর্ণ অবস্থা তৈরি হোক। এমনকি শেখ হাসিনার পতনের পরে এই দেশটা স্বাধীনভাবে টিকে থাকুক তারা এটি একেবারেই চায় না।

মুসলমানদের পতনের শুরু সম্পর্কে আলোচনা করে তিনি বলেন, আমাদের পতন আমি বলবো না এটা শুধুমাত্র ওসমানী খেলাফত পতন থেকে শুরু হয়েছে। কথাটা সত্য নয়, আমি ইতিহাসের একজন ছাত্র, ইতিহাস বিশ্লেষণ করে অন্তত আমার কাছে মনে হয়েছে এটা সত্য নয়। মুসলমানের পতন শুরু হয়েছে যখন আমরা জ্ঞান-বিজ্ঞান থেকে সরে গেছি। এই কারণেই মুসলিম সভ্যতার স্বর্ণযুগ বলা হয় অষ্টম শতাব্দী থেকে ১৪ শতাব্দী পর্যন্ত। কারণ সেই সময় জ্ঞান-বিজ্ঞান সবকিছুতে মুসলমানরা পৃথিবীকে ও পৃথিবীর নেতৃত্ব দিত। শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয়ভাবে পলিটিক্যাল লিডারশিপই নয়, তারা বুদ্ধিবৃত্তিক (ইন্টেলেকচুয়াল) নেতৃত্বও দিত। অর্থাৎ, বুদ্ধিবৃত্তিক নেতৃত্ব থেকে যখন পতন ঘটে, তারপরেই রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকেও পতন শুরু হয়ে যায়। আপনি বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে যদি পৃথিবীকে নতুন দর্শন দিতে না পারেন, তাহলে আপনি পৃথিবীতে এভাবেই লাঞ্ছিত হতে থাকবেন।

বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে জাতিকে এগিয়ে নিতে পড়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের ঐতিহ্য আমরা জানি না। কোরআন এবং সুন্নাহ তো আমাদের জন্য অবশ্যই পালনীয়, যা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। কিন্তু তার সাথে আমাদের বলা দরকার কোরআন-সুন্নাহর পাশাপাশি জ্ঞান চর্চাও করতে হবে। কোরআন তো শুরুই হয়েছে ‘পড়’ শব্দ দিয়ে। মানে আল্লাহর ওহী শুরু হয়েছে ‘পড়’ দিয়ে। আমরা তো ‘পড়া’ থেকে সরে গেছি। তাই যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে আবার নেতৃত্ব না পাবো, ততক্ষণ পর্যন্ত আমার ধারণা আমাদের এই এই লাঞ্ছনা থেকে মুক্তি পাবো না।

এছাড়াও মুসলমানদের ঐক্য বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বর্তমানে এমন অবস্থায় নেই যেখানে আমরা বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করার মত ক্ষমতা রাখি। সেই সামর্থ্য বাংলাদেশের নেই -এটাই বাস্তবতা। তো আমাদের কি সামর্থ্য আছে সেটা হচ্ছে আমাদের নিজেদের ইউনিটিটা করা বাংলাদেশের মধ্যে ঐক্যটা করা। এখন সেইটুকুই যদি আমরা করতে না পারি তাহলে আমি বিশ্ব মুসলিমের ইউনিটি নিয়ে কথা বলতে পারি না।

এসময় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে আমার দেশ সম্পাদক বলেন, শুধু মুসলমানের ইউনিটি দিয়েই হবে না, মুসলমানের সাথে এই দেশে যে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী আছেন তাদেরও সম্পূর্ণ অধিকার দিতে হবে। তাদের অধিকার দিয়ে রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হবে। এটা অবশ্যই ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশ, মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। কিন্তু আমাদের রসুলই তো দেখিয়ে গেছেন যে একটা মুসলমান রাষ্ট্রে ইসলামিক রাষ্ট্রে সংখ্যালঘুদের কি কি অধিকার দিতে হবে। সংখ্যালঘুদের হেফাজত করাও তো মুসলমানের কর্তব্য।

নির্বাচন সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে মাহমুদুর রহমান তার পূর্বের একটি বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, কোনো ভারতীয় দালালকে আপনারা ভোট দেবেন না। সে যে দলেরই হোক না কেন, কোনোভাবে আপনাদের কাছে ভারতীয় দালাল মনে হলে দয়া করে আপনারা তাকে ভোট দেবেন না। এইটুকু দায়িত্ব আপনাদের পালন করতে হবে।

এছাড়াও ইসলামি দলগুলোকে আসনের হিসেব-নিকেশ পরিহার করে মুসলিম ঐক্যের চেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে এই চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। যখন আমরা বাংলাদেশে মুসলমানদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হতে পারবো, তখন আমরা বিশ্ব মুসলিমের একতা নিয়ে চিন্তা করব। এই মুহূর্তে আমার মনে হয় আমাদের নজরটা বাংলাদেশে রাখা উচিত।

সংগঠনটির সভাপতি ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, রাওয়া চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুল হক, সংগঠনটির সহ-সভাপতি ডা. আবদুল মান্নান, বাংলাদেশ জাস্টিস মুভমেন্ট মহাসচিব ড. নাজিম উদ্দিন, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন, নওয়াব সলিমুল্লাহ একাডেমির চেয়ারম্যান আবদুল জাব্বার, এডভোকেট তাসমিন রানা প্রমুখ।

হাসিনার রায় দুর্নীতিবাজদের জন্য সতর্ক সংকেত

বাংলাদেশে প্রথমবার ৭০০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম অকশন

কামরাঙ্গীরচরে কোম্পানি ঘাটে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে

আজকের ভূমিকম্প ‘আফটার শক’, পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র

দেশজুড়ে ভবন ও নির্মাণ কাজ অনুমোদনের জন্য পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠনের নির্দেশ

আটককেন্দ্র ও জেলখানা পরিদর্শন করতে পারবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

সরকারের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই নির্বাচন করবেন: আসিফ

বাউলদের ওপর হামলাকারীদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চলছে

শুক্রবার ২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

উপদেষ্টা পরিষদে চার অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন