বাংলাদেশ জাতীয় যোগ্যতা কাঠামো নীতিমালা ২০২৫ জারি করা হয়েছে। এই নীতিমালা শিক্ষার সকল ক্ষেত্র- সাধারণ, কারিগরি ও মাদরাসা-এর মধ্যে যোগ্যতার সঙ্গতিপূর্ণ সংজ্ঞায়ন করবে।
একই সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থার শুরু ও শেষ এবং এক ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে আরেকটিতে যাওয়ার একটি সুস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট পথরেখা তৈরি এবং যোগ্যতা কাঠামো চাকরির বাজারের মধ্যে সহজে স্থানান্তর হতে সহায়তা করবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ এ নীতিমালা প্রকাশ করে।
এর আগে ২০২৩ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) আয়োজনে জাতীয় যোগ্যতা কাঠামো চালু করা হলেও এর কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ছিল না।
১৬ পৃষ্ঠার নীতিমালায় বলা হয়েছে, জাতীয় যোগ্যতা কাঠামো হলো একটি আন্তর্জাতিক মাপকাঠি যা জ্ঞান, দক্ষতা এবং দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ, শ্রেণিবিভাগ এবং স্তরভিত্তিক স্বীকৃতি দেয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয় যোগ্যতা কাঠামো শিক্ষাগত যোগ্যতার স্তরকে চিহ্নিত করবে এবং প্রতিটি যোগ্যতার শিখনফলের জন্য মান স্থাপন করবে। এটি একটি জাতীয়ভাবে স্বীকৃত ব্যবস্থা হিসাবে কাজ করবে। এই কাঠামো শিক্ষার্থীদের এবং কর্মীদের বিভিন্ন শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা এবং দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠিত মানদণ্ডের ভিত্তিতে যোগ্যতার বিকাশ ও স্বীকৃতি দেবে।
এর পথগুলো ব্যক্তিকে বিভিন্ন যোগ্যতার জন্য অধিকতর প্রবেশাধিকার দেবে এবং শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ উপ-খাত ও চাকরির বাজারের মধ্যে সহজে স্থানান্তর হতে সহায়তা করবে।
এর মূল লক্ষ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে-স্কুল, মাদরাসা, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, দক্ষতা এবং উচ্চ শিক্ষা উপ-খাতজুড়ে যোগ্যতার অভিন্ন জাতীয় সংজ্ঞা, মান এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। জীবনব্যাপী শিক্ষা এবং শিক্ষানবিশির মাধ্যমে আগে অর্জিত জ্ঞানের স্বীকৃতি এবং সহজ ও নমনীয় পথ প্রদান, যা উন্নতির সুযোগ এবং মানসম্পন্ন কর্মসংস্থানকে উৎসাহিত করে। শিক্ষার সব ক্ষেত্র-সাধারণ, কারিগরি ও মাদরাসার মধ্যে যোগ্যতার সঙ্গতিপূর্ণ সংজ্ঞায়ন করা। উন্মুক্ত এবং পরিবর্তনশীল যোগ্যতা পথরেখা, আগের অভিজ্ঞতার স্বীকৃতি এবং শিখন স্থানান্তরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জীবনব্যাপী শিক্ষা এবং নিয়োগযোগ্যতা বৃদ্ধি করা।
নিজ প্রতিষ্ঠান, সেক্টর এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে কর্মীদের সব ধরনের সমান্তরাল বা ঊর্ধ্বমুখী-উল্লম্ব-বিচরণ নিশ্চিত করা। জাতীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মসূচি এবং কর্মীদের যোগ্যতার স্বীকৃতি নিশ্চিত করা।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার মধ্যে শিক্ষার্থীদের যোগ্যতার সমতা এবং গতি ও স্থানান্তরের সক্ষমতা পরিমাপ ও তুলনা করা। বিভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থার শুরু ও শেষ এবং একধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে আরেকটিতে যাওয়ার একটি সুস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট পথরেখা তৈরি করা। মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রের গতিধারা নির্ধারণ করার লক্ষ্যে একটি জাতীয় নীতি প্রণয়ন করা।