পরীক্ষার হলে কর্তব্যরত শিক্ষকের সঙ্গে অনাকাঙ্খিত ঘটনায় রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সোয়াইব হোসেন মৃধাকে ছাড়পত্র না দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
একইসঙ্গে নির্বাচনি ও আসন্ন এসএসসি-২০২৬ সালের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দিতে বলেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ওই শিক্ষার্থী মানসিক রোগী হওয়ায় মানবিক দিক বিবেচনায় এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গত ২৭ অক্টোবর মাউশির শিক্ষা কর্মকর্তা মাধ্যমিক-১ মো: নাজিম উদ্দীন স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তবে মাউশির এই নির্দেশনা গ্রহণ করতে চাচ্ছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাকে স্কুলে না ফেরা এবং পরীক্ষার সুযোগ না দেয়ার জন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা স্বাক্ষর সংগ্রহ করে মাউশিকে জানানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) লায়লা আক্তার জানিয়েছেন।
মাউশির চিঠিতে বলা হয়, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে গত ১৫ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার হলে ডিউটিরত শিক্ষকের সঙ্গে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে সে সম্পর্কে স্কুলের পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রতিবেদন পাঠাতে বলে মাউশি। সে অনুযায়ী প্রতিবেদন পাঠায় প্রতিষ্ঠানটি। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সোয়াইব হোসেন মৃধাকে মানবিক দিক বিবেচনা করে ছাত্রপত্র না দিয়ে নির্বাচনি ও আসন্ন এসএসসির পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে মাউশির পক্ষ থেকে অনুরোধ হয়।
সূত্রমতে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার হলে বোতল ছুঁড়ে মারায় গণিত বিভাগের শিক্ষক মো. শুকুর আলমের মাথা ফেটে যায়। তিনি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে মৌখিকভাবে স্কুলে আসতে নিষেধ করে কর্তৃপক্ষ। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত সন্তানের শিক্ষার সুযোগ চেয়ে মাউশির হস্তক্ষেপ কামনা করেন পিতা মঞ্জুরুল হক মৃধা। তারই প্রেক্ষিতে এই নির্দেশনা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে মাউশির নির্দেশনার এক সপ্তাহ পার হলেও এ বিষয়ে এখনো কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন মঞ্জুরুল হক মৃধা। ফলে সন্তানের শিক্ষা কার্যক্রম নষ্ট হওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি।
এ বিষয়ে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, শিক্ষার্থীর আচরণে অভিভাবকরা দুঃখিত, এ ধরনের আচরণ কাম্য নয়। যেহেতু স্কুলের অধ্যক্ষ লায়লা আক্তার সাক্ষাৎকারে বলেছেন- ওই শিক্ষার্থী মানসিক ভারসাম্যহীন ও অসুস্থ, সেজন্য তাকে কোন শাস্তি দেয়া যায় না। মাউশির চিঠিতে বিষয়টি সমাধান হয়েছে বলেই অভিভাবকরা মনে করেন। মানসিক সমস্যা থাকলেও দশম শ্রেণিতে এসে ব্যবস্থা নেয়ার কোন যোক্তিকতা নেই।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) লায়লা আক্তার আমার দেশকে বলেন, ওই শিক্ষার্থীর মানসিক সমস্যা আছে বলে, তার মা লিখিতভাবে জানিয়েছে। অনেক আগে থেকেই সে স্কুলের পরীক্ষার হলে বিরক্ত করতো। এরই ধারাবাহিকতায় সে শিক্ষককে মেটালিক বোতল মেরে আহত করে। তাই তাকে স্কলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কেউ গ্রহণ করতে চাচ্ছে না।