ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি)-এর বিভিন্ন শাখায় ৮টি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে চলতি হিসাব খুলে ঋণের নামে ৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে ব্যাংকটির সাবেক পরিচালক, শীর্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ মোট ৮৬ জনের বিরুদ্ধে ৮টি পৃথক মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার বিকেলে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
দুদক জানায়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই ও ব্যাংকের সাবেক পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি, সাবেক পরিচালক বশির আহমেদ, অন্যান্য পরিচালক ও কর্মকর্তাদের একটি সিন্ডিকেট এ আত্মসাতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ইউসিবির চকবাজার, পোর্ট, পাহাড়তলী ও বহদ্দারহাট শাখায় এশিয়া এন্টারপ্রাইজ, মুন এন্টারপ্রাইজ, ইসলাম এন্টারপ্রাইজ, সান-সাইন এন্টারপ্রাইজ, আলম এন্টারপ্রাইজ, জুপিটার এন্টারপ্রাইজ, নাজিম এন্ড সন্স এবং আল-রাজি এন্টারপ্রাইজ নামে ৮টি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের চলতি হিসাব খোলা হয়। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বত্বাধিকারী হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম ব্যবহার করা হয়, যারা প্রকৃতপক্ষে এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত নন। সূত্র জানায়, ইউসিবিএলের বিভিন্ন শাখায় এসব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এর মধ্যে চকবাজার শাখায় এশিয়া এন্টারপ্রাইজের নামে ৮ কোটি টাকা, মুন এন্টারপ্রাইজের নামে ৭ কোটি টাকা, ইসলাম এন্টারপ্রাইজের নামে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং সান-সাইন এন্টারপ্রাইজের নামে ৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এছাড়াও পোর্ট শাখায় আলম এন্টারপ্রাইজের নামে ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা ও জুপিটার এন্টারপ্রাইজের নামে ৯ কোটি টাকা, পাহাড়তলী শাখায় নাজিম অ্যান্ড সন্সের নামে ৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং বহদ্দারহাট শাখায় আল-রাজি এন্টারপ্রাইজের নামে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্য পাওয়া গেছে।
সব মিলিয়ে এসব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মোট ৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক। অভিযুক্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবিএল)-এর সাবেক পরিচালক বশির আহমেদ, সাবেক পরিচালক ও ইসি কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী ওরফে রনি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বজল আহমেদ বাবুল, সাবেক পরিচালক এম এ সবুর, হাজী ইউনুছ আহমদ, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক পরিচালক আসিফুজ্জামান চৌধুরী এবং রোকসানা জামান চৌধুরী।