স্বরাষ্ট্র, অর্থ, জনপ্রশাসন, পুলিশ সদর দপ্তর এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশকৃত ২০০৭ সালে বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগ বঞ্চিত ৭শ ৫৭ জন এসআই ও সার্জেন্ট প্রার্থীদের চাকরিতে যোগদানে প্রধান উপদেষ্টার চূড়ান্ত অনুমোদনের দাবি জানিয়েছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন জানিয়ে তারা বলেন, ২০০৭ সালে বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগ বঞ্চিত ৭৫৭ জন এসআই সার্জেন্টদের জেষ্ঠতাসহ বয়স ট্রেনিংকালীন সময় প্রমার্জনা করে অনতিবিলম্বে চাকরিতে যোগদানের অনুমতি প্রদান করে দেশ এবং রাষ্ট্রীয় সেবায় অংশগ্রহণের আদেশ প্রদান করে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপনের অনুরোধ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা ২০০৬ সালে চূড়ান্ত নির্বাচিত ৫৩৬ জন এসআই ও ২২১ জন সার্জেন্টকে তৎকালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদ ও ডিআইজি বেনজির আহমেদ কোনো প্রকার নোটিশ প্রজ্ঞাপন ছাড়া শুধু একটি সাদা কাগজে নোটের মাধ্যমে দলীয় ট্যাগে ঢালাওভাবে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া অবৈধভাবে বাতিল ঘোষণা করে। তৎকালীন সময়ে আমরা আইনের দ্বারস্থ হয়েও সুবিচার থেকে বঞ্চিত হই। দীর্ঘ ১৮ বছর তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার হাসিনার আমলেও আমরা কোনো প্রকার সুবিচার পাইনি, বরং নানাভাবে দমন-পীড়নের স্বীকার হয়েছি।
তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পরে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশক্রমে আমাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া পুনর্বহালে উপস্থিত ৩৩০ জনের একটি তালিকাসহ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সুপারিশক্রমে একটি আবেদন করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব (পুলিশ), যুগ্মসচিব (জনপ্রশাসন), যুগ্মসচিব (আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়) এবং পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অ্যাডমিন) পদমর্যাদার উচ্চপর্যায়ের ৬ সদস্যের কমিটি তৎকালীন আইজিপি নুর মোহাম্মদ ও ডিআইজি বেনজির আহম্মেদ মহোদয়ের সাদা কাগজের বাতিল আদেশটি বাতিল করে আমাদের নিয়োগ পুনর্বহালের সুপারিশ চলতি বছরের গত মে মাসের ৭ তারিখে প্রদান করেন।
‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি সবদিক যাচাই-বাছাই করে, এই বিষয়ে একটি ‘লেজিটিমেট এক্সপেক্টেশন’ তৈরি হয়েছে। সে কারণে, ২০০৬ সালের বাতিল হওয়া নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক আদেশ দ্বারা নিয়োগের শর্ত পূরণ সাপেক্ষে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে বলে গত এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখে মতামত দেওয়া হয়।’
তারা আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দপ্তর এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের কমিটি নিয়োগ পুনর্বহালের সম্মতি প্রার্থীদের জেষ্ঠতাসহ বয়স ও ট্রেনিংকালে প্রমার্জনার জন্যে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে সারসংক্ষেপ দেওয়া হয়।
‘আমাদের নিয়োগ সংক্রান্ত সারসংক্ষেপটি ৬ মাস ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। অথচ আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার দ্বারা বিগত ১৮ বছর বৈষম্যের স্বীকার হয়ে এখনও পরিবার-পরিজন নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছি।