নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নৌপরিবহন অধিদপ্তরের কার্যক্রমকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি মঙ্গলবার সকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নৌপরিবহন অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত এস্টাব্লিসমেন্ট অফ গ্লোবাল মেরিটাইম ডিসট্রেস এন্ড সেফটি সিস্টেম এন্ড ইন্টিগ্রেটেড মেরিটাইম নেভিগেশন সিস্টেম (ইজিআইএমএনএস) প্রকল্পের আওতায় নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে নির্মিত জয়েন্ট মেরিটাইম রেসকিউ কো-অর্ডিনেশন সেন্টার (জেএমআরসিসি) উদ্বোধনকালে এ কথা জানান।
এ সময় তিনি প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের সাতটি উপকূলীয় এলাকায় স্থাপিত ৭টি কোস্টাল রেডিও স্টেশন এবং ৭টি লাইটহাউজেরও উদ্বোধন করেন।
কোস্টাল রেডিও স্টেশন ও লাইটহাউজসমূহ কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, কুতুবদিয়া, চর কুকরি মুকরি, নিঝুম দ্বীপ, দুবলার চর এবং কুয়াকাটায় স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও কোরিয়ান ইকোনমিক ডেভলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (EDCF)-এর যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়।
উদ্বোধনকালে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, “ইজিআইএমএনএস প্রকল্পটি বাংলাদেশের নৌ-নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং উপকূলীয় এলাকায় দুর্যোগগ্রস্ত যেকোনো জাহাজ ও নাবিকের উদ্ধার সহায়তায় একটি যুগান্তকারী মাইলফলক। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সামুদ্রিক উদ্ধার সক্ষমতা অর্জন করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থা (আইএমও)-এর সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ কনভেনশনের বাধ্যবাধকতা পূরণের সক্ষমতা অর্জন করেছে, যা আন্তর্জাতিক নৌবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।”
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী, এনডিসি বলেন, “ইজিআইএমএনএস প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে এখন বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে বিপদগ্রস্ত যেকোনো জাহাজ ও নাবিককে তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত ও উদ্ধার করা সম্ভব হবে, যা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় মেরিটাইম সাফল্য।”
তিনি এই প্রকল্পের অর্থায়ন ও বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মো. শফিউল বারী তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে নৌপরিবহন অধিদপ্তর আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থা (আইএমও)-এর কনভেনশন ও প্রোটোকল বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করে আসছে। ‘সেফটি অব লাইফ অ্যাট সি (SOLAS)’ এবং ‘সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ (SAR)’ কনভেনশনের আওতায় এ ধরনের ব্যবস্থা স্থাপন বাধ্যতামূলক। আজকের এই উদ্বোধন আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা পূরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।”
উল্লেখ্য, ইজিআইএমএনএস প্রকল্পের আওতায় গড়ে ওঠা অবকাঠামো বাংলাদেশের সমুদ্রপথে নিরাপদ নৌচলাচল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক কনভেনশন বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানে প্রকল্প পরিচালক শিপ সার্ভেয়ার অ্যান্ড এক্সামিনার মো. আবুল বাসারসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
কোরিয়ান সরকারের পক্ষে বাংলাদেশে অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন, কোরিয়া এক্সিম ব্যাংকের বাংলাদেশের প্রধান উপস্থিত ছিলেন।