আদালত অবমাননা এবং নিয়ম বহির্ভূত কাজের জন্য ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিমান সূত্রে জানা যায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭-এর ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদ বিধিবহির্ভূতভাবে বিমানের চাকরি থেকে পদত্যাগ না করে এবং বিমান থেকে ছাড়পত্র/এনওসি না নিয়ে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের চাকরিতে যোগদান করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের বিরুদ্ধে বিমান চাকরি প্রবিধানমালা, ১৯৭৯-এর বিধান মতে বিভাগীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এবার ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এবং ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা এবং বিধিবহির্ভূত কাজের দায়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠালো রাষ্ট্রায়ত্ত এই সংস্থাটি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বিগত ২০১৬ সালে এনওসি ব্যতীত পাইলট নিয়োগের বিরোধিতা করে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন (নম্বর ১২৬৪০/২০১৬) দায়ের করে। এই রিট পিটিশনে সরকারসহ বিমানকে বিবাদী করা হয়। রিট পিটিশন শুনানি শেষে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ এনওসি ব্যতীত এক এয়ারলাইন্সের পাইলট অন্য এয়ারলাইন্সের চাকরিতে যোগদান করতে পারবে না বলে রায় দেয়। পরবর্তী ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ওই রায় মেনে চলার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে পত্র পাঠায়। কিন্তু ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের বেলায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স আদালতের রায় লঙ্ঘন করে এনওসি ব্যতীত চাকরিতে যোগদান করে।
ব্যারিস্টার হাফিজুর রহমান খান স্বাক্ষরিত লিগ্যাল নোটিশে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সকে এনওসি পাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের নিয়োগ বাতিল/স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদকে বিমান থেকে বিধিমোতাবেক পদত্যাগ করার নির্দেশনা দেয়। ওই লিগ্যাল নোটিশে নির্দেশনা না মানা হলে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এবং ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল এবং সিভিল উভয় ধরনের মামলা করার কথা বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে তার স্ত্রী সাদিয়া আহমেদকে দুর্নীতির মাধ্যমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট হিসেবে নিয়োগের অভিযোগ ছিল। তার স্ত্রী জাল সনদের মাধ্যমে পাইলট ফ্লাইং লাইসেন্স নেয়, ফলে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ পাইলট সাদিয়ার বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল মামলা দায়ের করেছে। এবার সে পথেই হাঁটতে চলেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদ তার স্ত্রীকে জাল সনদের মাধ্যমে বিমানে চাকরিতে যোগদান করিয়ে ক্রিমিনাল আইন লঙ্ঘন করেছেন। উল্লেখ্য, ওই কারণে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের ফ্লাইং লাইসেন্স প্রায় বছরখানেকের জন্য সাসপেন্ড করেছিল। তিনি লাইসেন্স ফেরত পেয়েই বিমান থেকে বিধিমালা লঙ্ঘন করে এনওসি ব্যতীত ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের চাকরিতে যোগ দেন।
এ বিষয়ে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা এখনও ওই নোটিশ পাইনি। নোটিশ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।