হোম > মতামত

প্রযুক্তিনির্ভর ও জ্ঞানভিত্তিক টেকসই অর্থনীতি ভবিষ্যৎ রাজনীতির অঙ্গীকার

প্রফেসর ড. এম. শহীদুল ইসলাম

বাংলাদেশ এখন এক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়ে দেশ আজ প্রায় ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতিতে উন্নীত হলেও এর কাঠামোগত দুর্বলতা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। দেশের বার্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি বর্তমানে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার, যার মূল কারণ প্রযুক্তি, জ্বালানি, শিল্পযন্ত্রপাতি ও বিশেষজ্ঞ সেবায় অতিরিক্ত আমদানিনির্ভরতা। এই নির্ভরতা শুধু বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে না, বরং উৎপাদনশীল খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাকেও ক্রমাগত সীমিত করছে।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র টেকসই পথ হলো গবেষণা ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার বিকাশ, উদ্ভাবন, এবং কৃষি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও শিল্প খাতে কৌশলগত বিনিয়োগ বৃদ্ধি। এর মাধ্যমে দেশীয় উৎপাদন সক্ষমতা বাড়বে, আমদানিনির্ভরতা কমবে এবং দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জিত হবে। এই বাস্তবতায়, ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচন কেবল রাজনৈতিক পরিবর্তনের নয়, বরং বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক দিকনির্দেশনা নির্ধারণের এক ঐতিহাসিক সুযোগ। আগামী সরকারের প্রধান অঙ্গীকার হওয়া উচিত একটি প্রযুক্তিনির্ভর, উদ্ভাবনমুখী ও জ্ঞানভিত্তিক স্বনির্ভর অর্থনীতি গঠন।

বাংলাদেশকে আগামী দশকের মধ্যে জিডিপিকে ১ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে হলে এখনই প্রবেশ করতে হবে ইন্ডাস্ট্রি ৪ ও ইকোনমি ৪ এর যুগে যেখানে প্রযুক্তি, মানবসম্পদ, উদ্ভাবন ও সবুজ অর্থনীতি হবে টেকসই ভবিষ্যতের ভিত্তি।

১. শিক্ষা সংস্কার: লক্ষ্য হবে প্রযুক্তিনির্ভর মানবসম্পদ উন্নয়ন ও দক্ষতা প্রয়োগের মূল ভিত্তি

অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার মূল চাবিকাঠি হলো দক্ষ মানবসম্পদ। বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা কাঠামো এখনও অনেকাংশে প্রথাগত সার্টিফিকেটনির্ভর; কিন্তু আজকের বিশ্ব অর্থনীতি ও শিল্পায়নের যুগে প্রয়োজন গবেষণা ও উদ্ভাবননির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা।

উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এখন সময়ের দাবি অনুযায়ী Outcome-Based Education (OBE) পদ্ধতিতে রূপান্তর করা জরুরি। এই পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের শুধু তথ্য মুখস্থ নয়, বরং প্রযুক্তি প্রয়োগ, উদ্ভাবন, এবং বাস্তব সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করবে। ফলে স্নাতকরা শিল্প খাতে সরাসরি অবদান রাখতে পারবে এবং জাতীয় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিল্পখাতের মধ্যে একটি কার্যকর সেতুবন্ধন তৈরি করা এখন সময়ের দাবি। বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলো শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রম পরিচালনা করলে নতুন ইন্ডাস্ট্রি ৪ প্রজন্মের শিল্প সহায়ক গবেষণা ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিতে পারবে। শিক্ষা সংস্কার তাই কেবল একাডেমিক পরিবর্তন নয় এটি হবে বাংলাদেশের প্রযুক্তিনির্ভর ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির ভিত্তি।

এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজন প্রকৌশল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। শিক্ষা কার্যক্রমে স্বয়ংক্রিয়তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং ইন্টারনেট অব থিংস অন্তর্ভুক্ত করে শিল্পকে আধুনিকীকরণ করতে হবে।

বাংলাদেশের শিক্ষা সংস্কার এখন সময়ের অনিবার্য দাবি। এটি কেবল মানবসম্পদ উন্নয়নের পথ নয় বরং এটি হবে সেই ভিত্তি, যার ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ একবিংশ শতাব্দীর প্রযুক্তিনির্ভর ও টেকসই অর্থনীতির রূপান্তর সম্পন্ন করবে।

২. প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি: ২০৩৬ সালের মধ্যে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বাংলাদেশ রূপান্তরের লক্ষ্যে নীতি সমন্বয় জরুরি

দীর্ঘমেয়াদী টেকসই অর্থনীতি অর্জনে প্রয়োজন উৎপাদন, বিনিয়োগ, শিক্ষা, গবেষণা ও প্রযুক্তি খাতে সমন্বিত নীতিমালা গঠন, কৌশল গ্রহণ ও বাস্তবায়ন। যার লক্ষ্য হবে আগামী দশকে সবুজ অর্থনীতি অর্জন। এটি এক রাজনৈতিক অঙ্গীকার হতে হবে-

এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন অর্থনীতির ম্যাক্রো ও মাইক্রো কাঠামোর দুর্বলতা চিহ্নিত করে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ।

  • দেশের তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা পূরণ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির বাস্তব লক্ষ্য নির্ধারণ করা;
  • নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পরিবেশবান্ধব শিল্প এবং জলবায়ু সহনশীল উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলা;
  • স্টার্টআপ ও উদ্ভাবন প্রণোদনা: তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য ইনোভেশন হাব, কর ছাড় ও অর্থায়নের ব্যবস্থা;
  • রপ্তানি বহুমুখীকরণ, উচ্চমূল্য সংযোজনকারী রপ্তানিমুখী শিল্প গঠন, স্থানীয় সরবরাহ শৃঙ্খল উন্নয়ন;
  • উৎপাদন, বিনিয়োগ, শিক্ষা, গবেষণা ও প্রযুক্তি খাতে সমন্বিত নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন;
  • বর্তমানে আমাদের অর্থনীতি উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, নিম্ন উৎপাদনশীলতা, রপ্তানি সীমাবদ্ধতা ও বৈদেশিক নির্ভরতার মতো কাঠামোগত সমস্যায় জর্জরিত।

এখন সময় এসেছে দীর্ঘমেয়াদি রূপান্তরমূলক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের যা মানবসম্পদ উন্নয়ন, উদ্ভাবন ও সবুজ প্রবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে গঠিত হবে।

৩. জ্বালানি খাতের সংস্কার: আমদানিনির্ভরতা থেকে স্বনির্ভরতা অর্জনে রাজনৈতিক অঙ্গীকার হতে হবে

বাংলাদেশের জ্বালানি খাত আজ এক ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। দেশের মোট জ্বালানি চাহিদার প্রায় অর্ধেকেরও বেশি এখনও বিদেশি উৎসের ওপর নির্ভরশীল। সাম্প্রতিক গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট ব্যবহৃত জ্বালানির প্রায় ৫০ শতাংশই আমদানিকৃত, যা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। যেখানে এই অঞ্চলের দেশগুলোর গড় আমদানি নির্ভরতা ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ, সেখানে ভারতের নির্ভরতা মাত্র ৩৫ শতাংশের মতো।

বর্তমানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর মোট স্থাপিত সক্ষমতা প্রায় ২৯ হাজার মেগাওয়াট হলেও বাস্তব উৎপাদন গড়ে ১৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। অপরদিকে, দেশের বর্তমান চাহিদা প্রায় ১৭ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট, যার ফলে এক স্থায়ী ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে। এই ঘাটতি পূরণে দেশকে নির্ভর করতে হচ্ছে আমদানিকৃত জ্বালানি উৎস তেল, গ্যাস ও কয়লার ওপর, যার ফলে প্রতিবছর প্রায় ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে। এই বিশাল ব্যয় শুধু বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে না, বরং অর্থনীতির স্বনির্ভরতাকেও বাধাগ্রস্ত করছে।

নবায়নযোগ্য শক্তি: সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে সৌর, মাইক্রো-হাইড্রো, বর্জ্যভিত্তিক ও বায়োমাস শক্তির সম্ভাব্য উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৭৫,০০০ মেগাওয়াট। পাশাপাশি দেশটি প্রায় ৩ বিলিয়ন টন কয়লার মজুদেও সমৃদ্ধ। এই বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগাতে হলে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, জ্বালানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় কাঠামোগত সংস্কার এবং নবায়নযোগ্য খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিই হতে পারে টেকসই সমাধান।

সামাজিক জ্বালানি উদ্যোগ: গ্রামীণ অর্থনীতির নতুন প্রাণ

এই রূপান্তর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজন ক্ষুদ্র ও সামাজিক জ্বালানি উদ্যোগ (Social Energy Business) গড়ে তোলা। এ ধরনের উদ্যোগ একদিকে বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগের চাপ কমাবে, অন্যদিকে গ্রামীণ পর্যায়ে বিকল্প শক্তির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করবে। একইসঙ্গে এটি স্থানীয় অর্থনীতিতে নতুন কর্মসংস্থান, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং জ্বালানি প্রাপ্তির ন্যায়সংগত কাঠামো প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখবে।

জ্বালানি আমদানিনির্ভরতার এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে এখনই প্রয়োজন সুস্পষ্ট জ্বালানি সংস্কার নীতি, যেখানে নবায়নযোগ্য শক্তি, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, এবং দেশীয় সক্ষমতা বৃদ্ধিই হবে মূল চালিকা শক্তি। টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার পথে অগ্রসর হতে এই পদক্ষেপ আজ সময়ের সবচেয়ে জরুরি আহ্বান।

৪. যন্ত্রপাতি উৎপাদন খাতের সংস্কার: বাংলাদেশে প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও দেশীয় যন্ত্রপাতি উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়ন

বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও শিল্পস্বনির্ভরতা অর্জনের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো দেশীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং যন্ত্রপাতি উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি। বর্তমানে দেশের প্রযুক্তি, শিল্পযন্ত্রপাতি, যানবাহন ও বিশেষায়িত সরঞ্জামের একটি বড় অংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। প্রতিবছর এ খাতে প্রায় ৪ থেকে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হচ্ছে, যা বৈদেশিক মুদ্রার ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করছে এবং অর্থনীতির স্থিতিশীলতার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয় উৎপাদন সক্ষমতা গড়ে তোলা গেলে শুধু বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ই নয়, বরং দেশীয় প্রকৌশলী, উদ্যোক্তা ও গবেষকদের অংশগ্রহণে একটি শক্তিশালী প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পভিত্তি গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এর ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, উদ্ভাবনী শিল্প উদ্যোগের প্রসার এবং দীর্ঘমেয়াদি শিল্প প্রতিযোগিতা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা যাবে।

এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজন একটি বাস্তবসম্মত ও সমন্বিত বহুমাত্রিক নীতিকাঠামো। এতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত—

  • প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন ও গবেষণা ও উদ্ভাবন (আরডিআই) সম্প্রসারণ;
  • কারিগরি প্রশিক্ষণ ও মানবসম্পদ উন্নয়ন;
  • স্বল্পসুদের ঋণ ও কর প্রণোদনা;
  • শিল্প গবেষণাগার ও ইনোভেশন হাব প্রতিষ্ঠা;
  • বিশ্ববিদ্যালয়–শিল্প সংযোগ জোরদার করা এবং
  • প্রবাসী প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞদের শিল্পোন্নয়নে সম্পৃক্তকরণ।

প্রয়োজন সরকার–শিল্প–শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের যৌথ অংশীদারিত্ব, গবেষণা তহবিল গঠন, এবং স্থানীয় উৎপাদকদের কর ও ঋণ প্রণোদনা প্রদান। এই নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশে উদ্ভাবনভিত্তিক শিল্পায়নের এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে পারে, যা কর্মসংস্থান ও রপ্তানি আয় উভয়ই বাড়াবে।

বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পখাতের মধ্যে কার্যকর সহযোগিতা গড়ে তোলা গেলে গবেষণা সরাসরি উৎপাদন ও বাণিজ্যিক প্রয়োগে রূপান্তরিত হবে। পাশাপাশি প্রবাসী বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানকে শিল্প উন্নয়নের সাথে যুক্ত করলে দেশীয় জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির ভিত্তি আরও শক্তিশালী হবে।

এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ একদিকে বৈদেশিক নির্ভরতা হ্রাস করতে পারবে, অন্যদিকে একটি প্রযুক্তিনির্ভর, জ্ঞানভিত্তিক ও প্রতিযোগিতামূলক শিল্প অর্থনীতি গড়ে তুলবে যা টেকসই উন্নয়ন ও জাতীয় সমৃদ্ধির অন্যতম স্তম্ভ হয়ে উঠবে।

সারাংশ- নির্বাচনী রাজনীতিতে অর্থনৈতিক বাস্তবতার অঙ্গীকার প্রয়োজন

নির্বাচনের সময় প্রায়ই রাজনৈতিক দলগুলো উন্নয়নকে শুধুমাত্র অবকাঠামো নির্মাণের অঙ্গীকারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে। অথচ বাস্তবতা বলছে, বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের মূল ভিত্তি হলো মানবসম্পদ, জ্ঞান ও দক্ষতার প্রয়োগ, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সুষম সমন্বয়।

দেশের তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা পূরণ এবং অর্থনৈতিক সুযোগ নিশ্চিত করতে একাডেমিক গবেষণার ফল সরাসরি শিল্পে প্রয়োগের একটি কার্যকর কাঠামো প্রয়োজন। এই কাঠামোতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হবে জ্ঞান ও গবেষণার কেন্দ্র, শিল্পখাত হবে উদ্ভাবনের প্রয়োগকেন্দ্র, এবং সরকার নীতি নির্ধারণ ও অর্থায়নের মাধ্যমে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এটি হবে দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীল ভিত্তি।

রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি গঠনের সুস্পষ্ট রূপরেখা এবং সময়সীমা ঘোষণা করা, যাতে অন্তর্ভুক্ত থাকে, জ্বালানি নিরাপত্তা, গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ, শিক্ষা সংস্কার, দেশীয় উৎপাদন সম্প্রসারণ।

এগুলোকে জাতীয় নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আনা অপরিহার্য, কারণ এগুলো কেবল অর্থনৈতিক নয়, জাতীয় স্বনির্ভরতার মূল ভিত্তি। ২০২৬ সালের নির্বাচন তাই কেবল একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, এটি হতে পারে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণের সূচনা বিন্দু।

লেখক: ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া সারাওয়াক-এর একজন বিশিষ্ট অধ্যাপক, প্রযুক্তিবিদ ও গবেষক

ট্রিলিয়ন ডলারের বাংলাদেশ : সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

মামদানির বিজয় আমাদের তরুণদের কী শেখাল

রাজনৈতিক ঐক্য অপরিহার্য

ভারতের আওয়ামী পুনর্বাসন প্রকল্প

দেশ কয়েকজনের নয়, সবার

‘নারীবাদের ক্রমবিকাশ ও সমসাময়িক বাস্তবতা’

প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবতার দোলাচলে তিস্তা প্রকল্প

গণতন্ত্র ও ক্ষমতার লড়াইয়ের ফাঁদে মার্কিনিরা

নির্বাচনে পতিত ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় ষড়যন্ত্র

শেখ হাসিনার নিষ্ঠুরতার বিচার