হোম > রাজনীতি

রাজনীতির আকাশে অত্যুজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম খালেদা জিয়া

বিশেষ প্রতিনিধি

বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশের অত্যুজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন তিনি। সে আকাশকে অন্ধকারে ঢেকে দিয়ে অনন্তের পথে চলে গেলেন তিনি। মা, মাটি ও মানুষের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালের মধ্য আপসহীন সংগ্রামের একটি অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটলো।

দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয়তাবাদী-ইসলামী রাজনীতির ঝাণ্ডা উড্ডীন রেখেছিলেন তিনি। দেশের স্বাধীনতা-সার্ভভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে তাঁর নিরাপস দৃঢ় অবস্থান ইতিহাসে অমলিন হয়ে থাকবে।

বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সীমাহীন নিপড়নের শিকার হয়ে এক রকম ধুঁকে ধুঁকে চলে গেলেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি একটি বানোয়াট মামলায় ফরমায়েশী সাজা দেওয়ার পর সুস্থ অবস্থায় কারাগারে যান তিনি। কিন্তু তিলে তিলে সেখানে তাঁকে গুরুতর অসুস্থতার পথে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। ন্যুনতম চিকিৎসা পর্যন্ত পাননি।

২০২০ সালে সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রাপ্ত শর্তসাপেক্ষ মুক্তিতে ছিলেন বেগম জিয়া। ইন্তেকালের আগে পর্যন্ত অসুস্থতার মধ্য দিয়েই সময় কাটে তার। মাঝে-মাঝে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি বিশিষ্টজনদের পাশাপাশি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিরোধী কয়েকটি দলের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন তিনি। এ বছরের ২৩ নভেম্বর রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। দফায়-দফায় তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ও স্বল্প-উন্নতির মধ্য দিয়ে হাসপাতালের সময় পার করছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে ১৫ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপারসন এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। একদিন থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। সেদিন সাংবাদিকদের সামনে তার মেডিক্যাল বোর্ড সদস্য অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বুকে ইনফেকশন, হার্ট এবং ফুসফুস আক্রান্ত হয়েছেন।

গতবছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেন। ওই সময় তিনি এভারকেয়ারেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর তিনি এ বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান। চার মাস পর ৬ মে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি’র দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তিনি দেশে ফেরেন। এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সেই লন্ডন যান খালেদা জিয়া। যাওয়ার আগে গুলশানের বাসায় তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান।

১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুঁড়ির নয়াবস্তি এলাকায় তার জন্ম। খালেদা জিয়ার পারিবারিক নাম খালেদা খানম। তার ডাকনাম পুতুল। পারিবারিকভাবে তার আরও ডাকনাম ছিল— টিপসি, শান্তি। বাবা ইস্কান্দর মজুমদারের বন্ধু চিকিৎসক অবনীগুহ নিয়োগী সদ্য প্রসূত কন্যাকে ‘শান্তি’ নামে সম্মোধন করেন।

পৃথিবী তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধশেষে মাত্র কয়েকদিনে পড়েছে; দিনকয়েক আগে জাপানে ঘটে গেছে আমেরিকার আনবিক বোমার হত্যাযজ্ঞ। ভারতসহ নানা দিকেই তখন শান্তি মিছিল; মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার মধ্যেই নতুন জন্ম নেওয়া শিশুকন্যার নাম হয়ে উঠলো ‘শান্তি’। পরবর্তী সময়ে মেজোবোন সেলিনা ইসলামের রাখা ‘পুতুল’ নামটিই জড়িয়ে যায় খালেদা জিয়ার ডাকনাম হিসেবে।

খালেদা জিয়ার আদিবাড়ি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায়। তার বাবার নাম ইস্কান্দর মজুমদার এবং মা বেগম তৈয়বা মজুমদার। তিন বোন (খুরশিদ জাহান হক চকলেট, সেলিনা ইসলাম বিউটি ও খালেদা খানম পুতুল) ও দুই ভাইয়ের (মেজর সাঈদ ইস্কান্দর ও শামীম ইস্কান্দর) মধ্যে খালেদা জিয়া তৃতীয়। এদের মধ্যে এক বোন সেলিনা রহমান, ভাই শামীম ইস্কান্দর জীবিত আছেন।

তারেক রহমান পিনো ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর জননী খালেদা জিয়া মৃত্যুকালে অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও ভক্ত-অনুরাগী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

খালেদা জিয়া: গণতন্ত্রের সংগ্রামে অনির্বাণ শিখা

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ঢাবি উপাচার্যের শোক

অঝোরে কাঁদলেন ফখরুল ও রিজভী

এই সংবাদ নিয়ে আমাকে দাঁড়াতে হবে, এটা কখনো ভাবিনি : মির্জা ফখরুল

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জিএম কাদেরের শোক

খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে জমিয়তের শোক

খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়

খালেদার জানাজা কাল, দাফন জিয়ার পাশে

জরুরি বৈঠকে বসছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি

শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের আগে কেমন ছিলেন খালেদা জিয়া, জানালেন দুই চিকিৎসক