বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সাম্রাজ্যবাদীদের সবকিছু দিয়ে দেয়ার জন্য প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. এম জাহাঙ্গীর হোসেন।
তিনি বলেন, “ড. ইউনূস এখন বলছেন মানবিকতার জন্য করিডোর দিতে হবে। যদি ৭১ সালে দেশ প্রকৃত স্বাধীন হতো, তাহলে আমরা বন্দর নিজেরা তৈরি করতে পারতাম। কিন্তু আমরা বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দিয়েছি।”
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে ডা. এম এ করিমের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
ডা. এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, যারা সচেতন রাজনৈতিক ব্যক্তি, তারা নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করেন না। তারা সব সময় সাধারণ মানুষের জন্য নিজেদের ক্যারিয়ার ত্যাগ করেন। এম এ করিম ছিলেন একজন চিকিৎসক। কিন্তু তিনি শুধু মানুষের শরীরের চিকিৎসাই করেননি, বরং সমাজের সমস্যা সমাধানে কাজ করেছেন। সমাজের খেটে খাওয়া মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, “সামাজিকভাবে আমরা সবাই মানুষ। রাজনীতি এক না হতে পারে, কিন্তু আমরা সবাই মানুষ। ডাক্তার করিম শ্রমিক, কৃষক ও মেহনতি মানুষের জন্য সাম্রাজ্যবাদবিরোধী রাজনীতি করতেন।”
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে একটি আন্তরিক সম্পর্ক ও সৌহার্দ্যের সংস্কৃতি ছিল, কিন্তু বর্তমানে এই সম্পর্ক নেই। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে কোনো সুসম্পর্ক নেই।
তিনি আরও বলেন, “বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য কাজ করেছেন ডাক্তার করিম। পূর্বে যারা রাজনীতি করতেন তারা ‘মাল্টিট্যালেন্ট’ (বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী) ছিলেন। আর আমরা বর্তমানে ‘সৌখিন’। ফিলিস্তিনসহ ৩৬টি দেশে যুদ্ধ চলছে। ফিলিস্তিনের মানুষ এখন নিজভূমে পরবাসী হয়ে গেছে।” তিনি ট্রাম্প ও পুতিনকে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী উল্লেখ করে বলেন, তারা সাম্রাজ্য নিয়ে ব্যস্ত। সকল সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামীদের যুদ্ধ করতে হবে।
ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, “জুলাই সনদে জুলাই যোদ্ধারা নেই। ড. ইউনূস বলেছিলেন দরিদ্র দেখতে হলে জাদুঘরে যেতে হবে। কিন্তু এখন আমরা দেশের সব জায়গায় দরিদ্র মানুষ দেখতে পাই।”
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি চৌধুরী আশিকুল আলম, শ্যামল কুমার ভৌমিক, খলিলুর রহমান প্রমুখ।