বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) হিসেবে ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এ বিষয়ে মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আজ প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের একটি বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এই সভায় তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয় এবং জাতির কাছে তার জন্য দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানানো হয়।
সভায় খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় হাসপাতালে তার নির্বিঘ্ন চিকিৎসা, প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা, তার নিরাপত্তা ও যাতায়াতের সুবিধা এবং উচ্চ মর্যাদা বিবেচনায় তাকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকরের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়, বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
‘ভিভিআইপি’ হিসেবে বেগম জিয়া যেসব সুবিধা পাবেন
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আইন, ২০২১-এর ২ ধারার ক অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে, ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ অর্থ সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধান বা সরকার প্রধান এবং এই আইনের উদ্দেশ্যসমূহ পূরণকল্পে, অনুরূপ ব্যক্তি বলিয়া ঘোষিত অন্য কোনো ব্যক্তিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন। আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে এসএসএফ দৈহিক নিরাপত্তা দেবে। তার নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটাতে পারে এমন বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আইনে বলা হয়েছে, ‘যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাহাদের দৈহিক নিরাপত্তা প্রদান করা বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হইবে। এছাড়াও এসএসএফ অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটাইতে পারে এইরূপ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদান করিবে এবং তাহাদিগকে দৈহিক নিরাপত্তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।’
আইনে বলা হয়েছে, ‘আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এবং ধারা ৭-এর বিধানাবলিকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া, বাহিনীর কোনো কর্মকর্তার যদি এইরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, যে স্থানে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বাস করিতেছেন বা অবস্থান করিতেছেন বা যে স্থান দিয়া অতিক্রম করিতেছেন বা অতিক্রমণ আসন্ন সেইস্থানে বা স্থানের নিকট কোনো ব্যক্তির উপস্থিতি বা চলাচল অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির দৈহিক নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর, তাহা হইলে তিনি উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ব্যতীত গ্রেপ্তার করিতে পারিবেন এবং যদি উক্ত ব্যক্তি গ্রেপ্তার প্রচেষ্টায় বলপ্রয়োগক্রমে বাধা প্রদান করেন অথবা গ্রেপ্তার এড়াইবার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত কর্মকর্তা গ্রেপ্তার কার্যকর করণার্থে প্রয়োজনীয় সকল উপায় অবলম্বন করিতে পারিবেন এবং প্রয়োজনে, অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ হুঁশিয়ারি প্রদানের পর তাহার উপর গুলি বর্ষণ করিতে পারিবেন অথবা তাহার উপর এইরূপ অন্য কোনো বল প্রয়োগ করিতে পারিবেন যাহাতে তাহার মৃত্যু হয়।’
এ বিষয়ে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার এবং দল অবগত রয়েছে বলে প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে।