আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রায় এক বছর আগেই প্রাথমিকভাবে সব আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এতে চমক হিসেবে প্রায় ৮০ শতাংশ আসনে নতুন প্রার্থীসহ তরুণদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় এখন তারা গণসংযোগসহ ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন।
তবে এসব প্রার্থী চূড়ান্ত নয় বলে দলটির পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল। সে অনুযায়ী এবার চমক নিয়ে খুলনা-১ (দাকোপ–বটিয়াঘাটা) আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করে প্রথমবারের মতো হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন নেতাকে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। নতুন প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী।
সোমবার খুলনায় ৮ দলের বিভাগীয় সমাবেশে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। বুধবার বিকালে স্থানীয় নেতাদের বৈঠকে আমিরের সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করা হয়।
মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘আমাকে কেন্দ্রে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে জামায়াত আমিরসহ উচ্চপর্যায়ের নেতারা ছিলেন। তারা আমাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। আমি তাদের নির্দেশনা পেয়েছি। এলাকায় গিয়ে কাজ শুরু করব। ’
এর আগে এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী ছিলেন মাওলানা আবু ইউসুফ। তাকে নিয়ে প্রশ্ন করলে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, বুধবার জামায়াত আমির আমাদের দুজনকে বুকে বুক মিলিয়ে দিয়ে গেছেন। তিনি নিজেই আমার জন্য প্রচারণায় নেমেছেন। তাছাড়া জামায়াতের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই।’
জানা গেছে, ডুমুরিয়ার চুকনগর গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণ নন্দী ২০০৫ সালে জামায়াতে ইসলামে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু শাখার সভাপতি এবং স্থানীয় সনাতন কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে বেছে নেওয়ার কারণ সম্পর্কে একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, কঠোরভাবে আদর্শভিত্তিক জামায়াত হলো ন্যায়-সততার দল। এখানে দুর্নীতি নেই, চাঁদাবাজি নেই, মাদক নেই। শান্তি-সমৃদ্ধি আনার দল বলে আমি জামায়াতকে বেছে নিয়েছি। ২০০৫ সাল থেকে এটি করছি, হঠাৎ নয়।
আগের সরকারের আমলে কোণঠাসা ছিলেন বলে অভিযোগ তার। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দাপটে থাকা এই এলাকায় তিনি জামায়াত করার কারণে বিভিন্নভাবে চাপের মুখে ছিলেন বলে অভিযোগ করেন।
গত এক বছরে মিয়া গোলাম পরওয়ারের ডুমুরিয়া ও ফুলতলায় অনুষ্ঠিত কয়েকটি রাজনৈতিক সমাবেশে তার সরব উপস্থিতি এবং নেতৃত্ব স্থানীয় পর্যায়ে বিশেষভাবে নজর কাড়ে। এসব সমাবেশে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী–পুরুষের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিও তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে দলের ভেতরে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে।
খুলনা-১ আসনে তার মনোনয়নকে দলীয় পর্যায়ে একটি ‘ব্যতিক্রমী ও কৌশলগত সিদ্ধান্ত’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।