জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকাসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট লগি-বৈঠার তাণ্ডব সৃষ্টি করে। ওই ঘটনা ছিল পূর্বপরিকল্পিত মানবতাবিরোধী গণহত্যা।
রোববার ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার নির্মম আঘাতে নিহতদের স্মরণে কর্মসূচি ঘোষণা করে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে একই সঙ্গে ঘটনায় অভিযুক্ত খুনিদের বিরুদ্ধে দায়ের মামলা আবার সচল করে তাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান ডা. শফিক।
বিবৃতিতে জামায়াত আমির বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সারা দেশে লগি-বৈঠার তাণ্ডব সৃষ্টি করে। সেদিন রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জামায়াতের উদ্যোগে একটি জনসভার আয়োজন করা হয়। সকাল থেকে জনসভার মঞ্চ নির্মাণের কাজ চলছিল। হঠাৎ ১৪ দলীয় জোটের সন্ত্রাসীরা গোটা পল্টন এলাকায় জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ওপর লগি-বৈঠা, লোহার রড এবং বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
তিনি বলেন, তাদের হামলায় ঢাকাসহ সারা দেশে জামায়াত-শিবিরের ১৪ নেতাকর্মী শহীদ হন। আহত হন হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী। শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশেই ১৪ দলের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মানুষ হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করে বর্বর আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে, যা সারা বিশ্বের গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হয়।
জামায়াত আমির বলেন, ২৮ অক্টোবরের নারকীয় গণহত্যার সঙ্গে জড়িত খুনিদের বিচারের জন্য সুনির্দিষ্ট মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন সরকার ওই মামলা প্রত্যাহার করে বিচারের পথ রুদ্ধ করে খুনিদের রক্ষা করে। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ তীব্র গণআন্দোলনের মুখে দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই পটপরিবর্তনের ফলে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং অবিলম্বে ২৮ অক্টোবরের গণহত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।
বিবৃতিতে ২৮ অক্টোবর স্মরণে মহানগরী, জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল এবং সব পর্যায়ে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দলের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানান ডা. শফিক।