ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের সিদ্ধান্তে আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। বরং এতে অন্য একটি দলের প্রত্যাশার আলোকে এই সিদ্ধান্ত অনেকটা পক্ষপাতমূলক হয়েছে। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত সিদ্ধান্ত।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন তিনি।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে বেশ কিছু বিষয় স্পষ্ট করা হযেছে। তিনি ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের কথা আবারো উল্লেখ করেছেন। আমাদের সবচেয়ে কাঙ্খিত বিষয় ছিল-জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এ বিষয়ে গেজেট হয়েছে। এবং এই সনদের আলোকে আগামীতে গণভোট হবে।
গাজীয় আতাউর রহমান আরো বলেন, যেহেতু আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবি অনুযায়ী জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও গেজেট হয়েছে-এ বিষয়ে আমরা ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু দু:দুঃখজনক বাস্তবতা হলো-আমাদের দাবি ছিল গণভোটটা জাতীয় নির্বাচনের আগে হোক। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা গণভোট জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে করার ঘোষণা দিয়েছেন। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা মনে করি তিনি একটা ঝুঁকিতে চলে গেলেন। গণভোট জুড়ে দেয়ায় জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরাপদ ও উৎসবমুখর পরিবেশে হওয়া কিছুটা হলেও বিঘ্নিত হবে। একটি পক্ষকে খুশি করার জন্যই তিনি এমন ঝঁকিতে গেলেন বলে মনে আমাদের কাছে হচ্ছে।
ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, একই দিনে গণভোটে অর্থ সাশ্রয়ের কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তাহলে এ নিয়ে এত আলোচনা করে যে খরচ হয়েছে, সেটারওতো জবাব দেওয়া দরকার। অতএব অর্থ সাশ্রয়ের কথা বলে একটা সমস্যাকে ডেকে আনতে পারি না। আমরা মনে করি, গণভোট আলাদা হওয়া প্রয়োজন ছিল। এতে জুলাই সনদের ভাব-মর্যাদা ও তাৎপর্য ভিন্ত হতো। জুলাই সনদের টেকসই আইনি ভিত্তির জন্য গণভোট হবে-এজন্য ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলো ক্যাম্পেইন করতে পারতো। এখন সবাই নিজ নিজ ভোটের ক্যাম্পেইনে নেমে যাবে এবং গণভোটে হ্যা-এর পক্ষে ক্যাম্পেইনটা দৃশ্যমান হবে না। এটাও একটা ঝুঁকিতে পড়ে যাবে।
তিনি বলেন, বক্তব্যের শেষ দিকে প্রধান উপদেষ্টা বৃহত্তর স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আহ্বান জানিয়েছেন। আমরাও মনে করি রাজনৈতিক দলগুলোর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার। আমরা অবশ্যই প্রধান উপদেষ্টার এই আহ্বান পর্যালোচনা করবো। আমরা দলের ভেতরে বিষয়গুলো নিয়ে বসবো। আন্দোলনরত দলগুলোও বসে দলীয় ও আট দলের অবস্থান পরিষ্কার করবো।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ুম সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।