আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যুগপৎ আন্দোলনের অন্যতম শরিক জোট গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ ছয় নেতা কোন আসন থেকে নির্বাচন করতে চান, তা জানতে চেয়েছে বিএনপি।
ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে মিত্রদের সঙ্গে আসন বণ্টনের প্রক্রিয়া শুরু করার অংশ হিসেবে বিএনপি এই তথ্য জানতে চেয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের এই বৈঠক হয়।
দলীয় প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার পাশাপাশি বিএনপি এখন যুগপৎ আন্দোলনের মিত্রদের জন্য আসন বণ্টনের প্রক্রিয়াও শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি শরিক দলগুলোর কাছে তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা চাওয়া হয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
গণতন্ত্র মঞ্চ আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে গত ৯ অক্টোবর প্রথম দফায় ১৪২ আসনের প্রার্থীর নাম প্রকাশ করে। তালিকা অনুযায়ী, মঞ্চের শীর্ষ ছয় নেতার সম্ভাব্য আসনগুলো হলো- মাহমুদুর রহমান মান্না নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বগুড়া-২; সাইফুল হক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা-৮; জোনায়েদ সাকি গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬; তানিয়া রব জেএসডির সহসভাপতি লক্ষ্মীপুর-৪; হাসনাত কাইয়ূম রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি, কিশোরগঞ্জ-৫; শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান, জামালপুর-৫।
উল্লেখ্য, জেএসডির সভাপতি আসম আব্দুর রব অসুস্থতা ও বয়সজনিত কারণে এবার নির্বাচন করবেন না। তার পরিবর্তে লক্ষ্মীপুর-৪ আসন থেকে এবার তার সহধর্মিণী তানিয়া রব নির্বাচন করবেন।
জানা গেছে, গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে বিএনপির কাছে অর্ধ-শতাধিক আসন চাওয়া হতে পারে। তবে গতকাল মঙ্গলবারের বৈঠকে মঞ্চের পক্ষ থেকে বিএনপির কাছে কোনো প্রার্থীর তালিকা দেওয়া হয়নি। মঞ্চের নেতারা জানিয়েছেন, শীর্ষ ছয় নেতার আসনের বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা হলেই মঞ্চের বাকি প্রার্থী তালিকা নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। এ লক্ষ্যে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। অন্যদিকে গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষে ছিলেন সমন্বয়ক ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ূম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, ভাসানী, জনশক্তি পার্টির শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এবং নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ।
বৈঠকে সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ নিয়েও আলোচনা হয়। সংশোধিত আরপিওতে নির্বাচনি জোটভুক্ত প্রার্থীর নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করার যে বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে, তা তুলে দেওয়ার পক্ষে উভয় পক্ষ একমত পোষণ করে। তারা মনে করেন, নিজ দল এবং জোটের প্রধান শরিক দলের প্রতীক— দুটি সুযোগই রাখা উচিত।