হোম > রাজনীতি

দেশে ফিরে দাদুর পাশে থাকতে চাই: জাইমা রহমান

স্টাফ রিপোর্টার

জাইমা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে একটি দীর্ঘ ও আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান।

মঙ্গলবার সকালে নিজের ফেসবুকে থেকে দেওয়া এই পোস্টে তিনি দাদুর সঙ্গে কাটানো শৈশবের স্মৃতি, প্রবাস জীবন এবং দেশের সেবায় নিজের ভবিষ্যৎ সংকল্পের কথা তুলে ধরেন।

জানা গেছে, এটিই ব্যারিস্টার জাইমা রহমানের প্রথম আনুষ্ঠানিক ফেসবুক স্ট্যাটাস। যা প্রকাশের পর মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

ফেসবুক পোস্টের বক্তব্যটি নিচে তুলে দেওয়া হলো—

“দাদুকে নিয়ে আমার সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতিগুলোর একটি হলো, পরিবারকে আগলে রাখা একজন অভিভাবক হিসেবে তিনি কতটা মমতাময়ী ছিলেন! আমার বয়স তখন এগারো। আমাদের স্কুলের ফুটবল টিম একটা টুর্নামেন্ট জিতেছিল, আর আমি মেডেল পেয়েছিলাম। আম্মু আমাকে সরাসরি দাদু’র অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন, আমি যেন নিজেই দাদুকে আমার বিজয়ের গল্পটা বলতে পারি; তাকে আমার বিজয়ের মেডেলটা দেখতে পারি। আমি খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে গোলকিপার হিসেবে কী-কী করেছি, সেটা বলছিলাম; আর স্পষ্ট টের পাচ্ছিলাম, দাদু প্রচন্ড মনোযোগ নিয়ে আমাকে শুনছেন। তিনি এতটাই গর্বিত হয়েছিলেন যে, পরে সেই গল্পটা তিনি অন্যদের কাছেও বলতেন।

আমি সব সময়ই জানতাম, আমার দাদু’র কাঁধে একটা দেশের দায়িত্ব। তবুও আমার স্মৃতিতে দাদু হলেন পরিবারকে আগলে রাখা একজন মমতাময়ী অভিভাবক। লাখো মানুষের কাছে তিনি ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আমার আর আমার কাজিনদের কাছে তিনি ছিলেন ‘দাদু’। আমাদের ‘দাদু’। তিনি সব সময় আমাদের খেয়াল রাখতেন, আমাদের জন্য সময় বের করতেন, আর যেসব মুহূর্ত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেগুলোতে আমাদের সাহস দিতেন, উজ্জীবিত করতেন।

এই ছোট-ছোট মুহূর্তগুলো থেকেই আমি নেতৃত্বের প্রথম শিক্ষা পাই। সেটি হলো, নম্রতা, আন্তরিকতা আর মন দিয়ে শোনার মানসিকতা।

খালেদা জিয়ার কোলে জাইমা রহমান

বাংলাদেশের বাইরে কাটানো সতেরোটা বছর আমার জীবন অনেকভাবে বদলে দিয়েছে। কিন্তু আমি কখনোই আমার শিকড় ভুলে যাইনি। কারণ, আমাদের সত্তার যে ভিত্তি, আমাদের যে সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ; সেটিই আমাদেরকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে, পরিচয় বহন করে। প্রবাসে থাকা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের অনেক বাংলাদেশির মতো আমিও নিজ দেশের বাইরে, ভিন্ন দেশে অনেকগুলো বছর কাটিয়েছি। লন্ডনের দিনগুলো আমাকে বাস্তববাদী করেছে, একটা বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে। যদিও আমার হৃদয়-মন সব সময় বাংলাদেশেই ছিল।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমাকে শৃঙ্খলা ও বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান শিখিয়েছে। তবে মানুষের সঙ্গে কাজ করা আমাকে শিখিয়েছে আরও অনেক বেশি; শিখিয়েছে দায়িত্বশীল হতে, বিপদগ্রস্তের পাশে দাঁড়াতে। আইন পেশায় কাজ করার সময় কাছ থেকে দেখা মানুষগুলোর গল্প, আর সেই গল্পগুলোর যৌক্তিক এবং আইনগত সমাধান খোঁজার দায়িত্ব আমাকে আলোড়িত করে। প্রত্যেক ক্লায়েন্ট, প্রতিটি মামলা, প্রতিটি মানুষের সমস্যা, কারও না কারও জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। যারা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, অবহেলার শিকার হয়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সেই বিশ্বাস দিতে হয় যে, তাদের বিষয়টি দেখা হচ্ছে, শোনা হচ্ছে, সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। কারও জীবনের সবচেয়ে কঠিন দিনে তার পাশে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা যে শিক্ষাটা দেয়, সেটা কোনো ক্লাসরুম দিতে পারে না। এই প্রতিটা ধাপ আমাকে ভাবতে শিখিয়েছে, মানুষ হিসেবে কেমন হতে চাই।

আমি আমার ‘দাদা’কে কখনো দেখিনি। কিন্তু তার সততা আর দেশপ্রেমের কথা সব সময় শুনে এসেছি। ‘দাদু’ আর ‘আব্বু’ সেই আদর্শটাই বয়ে নিয়ে চলেছেন। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় এবং ৫ আগস্টের আগে-পরের সময়টাতে আমি যতটুকু পেরেছি, নেপথ্যে থেকে সাধ্যমতো ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছি। অধিকাংশ সময় বলেছি কম, বরং শুনেছি বেশি। ছোট-ছোট কাজের মাধ্যমে তাদের বোঝা একটু হালকা করার চেষ্টা করেছি।

অনেকগুলো বছর পর দেশে ফিরছি। দেশে ফেরা মানে আবেগ আর অনুভূতির এক অনন্য সংমিশ্রণ। দেশে ফিরে ইনশাআল্লাহ, আমি ‘দাদু’র পাশে থাকতে চাই। এই সময়টাতে আব্বুকে সর্বাত্মক সহায়তা করতে চাই। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে দেশের জন্য সর্বস্ব দিয়ে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে চাই। নিজের চোখে, নিজের অভিজ্ঞতায় প্রিয় বাংলাদেশকে নতুন করে জানতে চাই; মানুষের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলতে চাই। যেভাবে এগুনো দরকার, আমি চাই বাংলাদেশ আবারও সেভাবে সামনে এগিয়ে যাক, গর্জে উঠুক।

আমি জানি, আমার পরিবারকে ঘিরে দেশের জনগণের কৌতূহল রয়েছে, প্রত্যাশা রয়েছে। সেটি কখনো আশার, কখনো প্রশ্নের। সেই প্রত্যাশা পূরণের দায়ভারও রয়েছে। জনগণের সেই প্রত্যাশা পূরণের চাপ আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে অনুভব করি; পরিবারে, বন্ধুত্বে, সমাজে।

সংক্ষেপে, আমার নিজের ভাষায়, এই হলো আমার গল্প। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে একটা নিজস্ব গল্প আছে। এই গল্পগুলোকে ধারণ করে, আমরা সবাই হয়তো একসঙ্গে বাকি পথটা হাঁটতে পারি।”

চীনা দূতাবাসের চার্জ দ্যা এফেয়ার্সের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের বৈঠক

চার আসনে খেজুর গাছে ভোট চাইলেন মির্জা ফখরুল

উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানি ও বেআইনি গ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে

এলডিপি থেকে চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর পদত্যাগ

বিএনপি সমর্থিত জুনায়েদের বিপক্ষে লড়বেন ব্যারিস্টার রুমিন

ধানের শীষ নয়, যে প্রতীকে লড়তে হবে বিএনপি সমর্থিত জমিয়ত নেতাদের

বিএনপির কাছে যেসব আসন পেল জমিয়ত

জমিয়তকে ৪টি আসন দিল বিএনপি

হুড়োহুড়ির ভিডিও ভাইরাল, দুঃখ প্রকাশ করে যা বললেন ইশরাক

৭ ঘন্টায় ১২ লাখ টাকা পেলেন তাসনিম জারা