হোম > খেলা

যে সিরিজে মিডলঅর্ডার পুরোই ডিসঅর্ডার!

স্পোর্টস রিপোর্টার

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ দলের হোয়াইটওয়াশ, এককথায় সম্পূর্ণ ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। পুরো সিরিজে ব্যাটিং লাইনআপের মাঝে ফুটে উঠেছে দিশেহারা, পরিকল্পনাহীন, আত্মবিশ্বাসহীনতার ছাপ। টানা তিন ম্যাচে হারের ধরনে প্রশ্ন উঠছেÑএ দলটি আদৌ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের চাহিদা বোঝে তো?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা গেলÑতিন ম্যাচেই একই চিত্র। ওপেনিংয়ে শুরুটা হয়তো মোটামুটি, কিন্তু মিডল অর্ডারে পা রাখতেই পতনের ঝড়। তানজিদ তামিম, সাইফ হাসান, পারভেজ হোসেন ইমনরা আউট হতেই ফুটে ওঠে ব্যাটিং মেরুদণ্ডের আসল চিত্র। লিটন দাসের অনিয়মিত ফর্ম, তাওহিদ হৃদয়ের অস্থিরতা, শামীম-জাকেরদের দায়িত্বহীন শট আর সোহানের দুর্বল হিটিং; মেরুদণ্ডহীন মিডল অর্ডারের আসল চিত্রই দেখিয়ে দিয়েছে। আধুনিক টি-টোয়েন্টিতে যেখানে প্রত্যেক দলে নির্দিষ্ট ভূমিকায় ব্যাটারদের ব্যবহার হয়, সেখানে বাংলাদেশ এখনো খুঁজে ফেরে কে কখন কী করবে। তাতেই মূলত এই সিরিজে মিডল অর্ডার যেন স্রেফ ‘ডিসঅর্ডার’।

ব্যাটিং ব্যর্থতার মূল কারণগুলো স্পষ্টÑপ্রথমত, পরিকল্পনার অভাব। প্রতিপক্ষের বোলারদের ধরন অনুযায়ী কোনো কৌশল দেখা যায়নি। দ্বিতীয়ত, পাওয়ার হিটিং দক্ষতার ঘাটতি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা যেখানে ছক্কা-চারের ঝড় তুলেছে, সেখানে বাংলাদেশের ব্যাটাররা স্ট্রাইক ঘোরাতেই হিমশিম খেয়েছেন। তাদের শট ধরা পড়েছে লং অন, লং অফ আর ডিপ স্কোয়ারের মতো জায়গায়! তৃতীয়ত, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা। কেউ ইনিংস অ্যাঙ্কর করতে পারছেন না, কেউ শেষটা টানার মতো মেন্টাল স্ট্রেংথ দেখাচ্ছেন না। ম্যাচ পরিস্থিতি অনুযায়ী কেউ ব্যাটিং করতেই পারছেন না।

দ্বিতীয় ম্যাচে শেষ ৫ ওভারের কথাই ধরা যাক। জয়ের জন্য ৩০ বলে দরকার ছিল ৫০ রান, হাতে ৭ উইকেট। আধুনিক ক্রিকেটে এই রান তোলা ডাল-ভাত। কিন্তু এই সহজ কাজটাই করতে পারল না দল। এই পরিস্থিতিতে ১৮ বল খেলে জাকের করলেন ১৭ রান! শামীম হোসেন উইকেটে এলেন আর গেলেন। ৩০ বলে এলো ৩৬ রান। ১৪ রানের হারে সিরিজ হাতছাড়া।

পুরো সিরিজে মিডল অর্ডারের ব্যাটিংয়ের দিকে তাকালে দেখা যায়, লিটন দাস ৩ ম্যাচে ৩ ইনিংসে ৩৪ বলে করেছেন ৩৪, এর মধ্যে এক ম্যাচেই ২৩, বাকি দুই ম্যাচে ১১। তাওহিদ হৃদয় ২ ম্যাচে ৩৯ বলে করেছেন ৪০। জাকের ২ ম্যাচে ২১ বলে করেছেন ২২। শামীম ২ ম্যাচে ৬ বলে করেছেন ২। সোহান ২ ম্যাচে ১৩ বল খেলে করেছেন ৬ রান। মিডল অর্ডারের এই ৫ ব্যাটার মিলে পুরো সিরিজে ১১৩ বল খেলে করেছেন ১০৪ রান। যেখানে এক তানজিদ হাসানের একার রানই ১৬৫। অর্থাৎ ওপেনাররা সুর বেঁধে দেওয়ার পরও তাল মেলাতে পারেননি মিডল অর্ডার।

বাংলাদেশের সমস্যা শুধু টেকনিক্যাল নয়, মানসিকও। একজন ব্যাটার আউট হওয়ার পর বাকিরা যেন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। আত্মবিশ্বাসের অভাব পুরো ব্যাটিং ইউনিটকে জড়িয়ে ফেলে।

এই অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ একটাইÑগঠনমূলক সংস্কার ও সাহসী সিদ্ধান্ত। দলে নতুন উইলোবাজ আনতে হবে যারা আধুনিক টি-টোয়েন্টি চিন্তাধারায় অভ্যস্ত। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে যারা ফিনিশার বা পাওয়ার হিটার হিসেবে প্রমাণ দিয়েছেন, তাদের সুযোগ দিতে হবে। পাশাপাশি ব্যাটিং ইউনিটকে ম্যাচ পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কৌশলটা শিখতে হবে এবং সেটা কাজে লাগাতে হবে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকেও ভাবতে হবেÑদলের কোচিং পদ্ধতি ও প্রস্তুতি কি সময়োপযোগী? কারণ শুধুই নেট প্র্যাকটিস বা ম্যাচের পর বিশ্লেষণ সভা যথেষ্ট নয়। দরকার গভীর টেকনিক্যাল রিভিউ, বিশেষজ্ঞদের সহায়তা এবং মানসিক শক্তি গঠনে বিনিয়োগ। কোচিং স্টাফদের কাছ থেকে তাদের কাজের গ্রহণযোগ্যতা চাইতে হবে। দল কেন পারছে না। কেন ফলাফলে ধারাবাহিকতার অভাবÑএই ব্যর্থতায় কোচিং প্যানেলের দায় কতখানি, তার খোঁজও নিতে হবে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই হোয়াইটওয়াশ হয়তো শুধুই একটি সিরিজে হার কিংবা এক লাইনের একটি বাক্য, কিন্তু বাস্তবে এটা বড় এক সতর্কবার্তা। সেই সতর্কসংকেত এখনই বিসিবি যদি শুনতে না পায় তাহলে এই ফরম্যাটে সামনের পথ শুধুই অন্ধকার!

প্রথম শিরোপার খোঁজে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা

টিভির পর্দায় নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল

বাবরের চেয়ে এগিয়ে রোহিত

শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ পাকিস্তানের

আর্সেনালের জয়, ম্যানইউয়ের হোঁচট

মুন্সীগঞ্জে ২১তম জাতীয় দূরপাল্লার সাঁতার সম্পন্ন

ভারত সফরে যাচ্ছেন জ্যোতিরা

৫ মিনিটের প্রস্তুতি, মহাকাব্যের সুর এবং জেমিমাহর ইতিহাস

৩০ বছর পর ন্যু ক্যাম্পে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল

জুয়ায় জড়িয়ে ১৪৯ রেফারি বরখাস্ত