তুরস্ক ও জার্মানি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন ও কৌশলগত অধ্যায় সূচনার অভিন্ন ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছে। জ্বালানি, বাণিজ্য, অর্থনীতি থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা শিল্প—প্রায় সব খাতেই সহযোগিতা গভীর করার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান ২৮ নভেম্বর জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ডেভিড ভাডেফুল-এর আমন্ত্রণে বার্লিনে এক দিনের সফর করেন। গত ছয় সপ্তাহে ভাডেফুলের আঙ্কারা সফর এবং চার সপ্তাহ আগে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ভের্ৎসের তুরস্ক সফরের পর এটি দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক যোগাযোগের আরেকটি ধাপ।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফিদান ও ভাডেফুল জানান, দুই দেশের সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের হার বেড়েছে এবং ২০২৬ সালে তুর্কি–জার্মান কৌশলগত সংলাপের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ভাডেফুল বলেন, “নতুন পৃষ্ঠা খোলার সময় এসেছে।” তিনি উল্লেখ করেন, রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন থেকে উদ্ভূত ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন আঙ্কারা–বার্লিন সহযোগিতা আরও জরুরি করে তুলেছে।
ফিদানও বলেন, দুই ন্যাটো মিত্রের মধ্যকার সুসম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বর্তমান ইতিবাচক গতি আরও শক্তিশালী করতে হবে। “এটি নতুন যুগ, নতুন পরিস্থিতি। আমাদের এই গতি আরও জোরদার করতে হবে।”
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল—কীভাবে স্থবির হয়ে পড়া তুরস্কের ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রক্রিয়াকে পুনরায় সক্রিয় করা যায়।
ভাডেফুল বলেন, জার্মানি তুরস্কের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কাজ করতে প্রস্তুত, তবে কোপেনহেগেন মানদণ্ড পূরণ করা অনিবার্য। “তুরস্ক বহু দিক থেকে কেন্দ্রীয় দেশ। তাই তুরস্ক–ইইউ সম্পর্ক শক্তিশালী হওয়া আমাদের স্বার্থেই। তুরস্ক যদি ইইউতে যোগ দিতে চায়, জার্মানি হবে তার অন্যতম নির্ভরযোগ্য ও বন্ধুসুলভ অংশীদার। তুরস্ককে দেখাতে হবে যে তারা এ প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছে,” তিনি বলেন।
ফিদান জানান, তুরস্কের ইইউ সদস্যপদ এখনও কৌশলগত অগ্রাধিকার। তবে ব্রাসেলসকেও স্পষ্টভাবে প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করার সদিচ্ছা দেখাতে হবে। “সমস্যা হলো, আলাপ-আলোচনা স্থগিত রয়ে গেছে। ইইউ নতুন অধ্যায় খুলছে না। আমরা কীভাবে এ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়া যায় তা আলোচনা করেছি,” বলেন ফিদান।
মানদণ্ড পূরণ করার দায়িত্ব তুরস্ক স্বীকার করে—এ কথা জানিয়ে ফিদান জোর দেন, ইইউকেও সমানভাবে সদস্যপদ প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করার অঙ্গীকার দেখাতে হবে।
সূত্র: হুরিয়েত ডেইলি নিউজ
এসআর