গাজা উপত্যকায় শোচনীয় পরিস্থিতির মধ্যে বসবাসরত বাস্তুচ্যুত লাখো ফিলিস্তিনি গত সপ্তাহে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আরো দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা।
ইউনিসেফের মুখপাত্র জোনাথন ক্রিক্স বলেছেন, রাতের আবহাওয়া ছিল ‘ভয়াবহ’, বৃষ্টি এতটাই তীব্র ছিল যে তিনি তার অফিসের কাছে মাটিতে প্রায় ১৫ সেন্টিমিটার (ছয় ইঞ্চি) পানি জমতে দেখেছেন।
তিনি বলেন, তাঁবু ও অস্থায়ী আশ্রয়ে বসবাসরত শিশুরা ভেজা পোশাকে থাকায় হাইপোথারমিয়া (শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমে যাওয়ার পর সৃষ্ট জটিলতা) ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অত্যন্ত বেশি।
গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাইপোথারমিয়ায় একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে এবং ভয়াবহ আবহাওয়ার কারণে ভবন ধসে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গাজায় নয় সপ্তাহ আগে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো তাঁবু, কম্বল ও পোশাক সরবরাহ বাড়িয়েছে। তবে তারা বলছে, এখনো পর্যাপ্ত সহায়তা পৌঁছাচ্ছে না।
জাতিসংঘ ও এর সহযোগীরা অনুমান করছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৫ হাজার পরিবার বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের আশ্রয় ও জিনিসপত্র নষ্ট বা ধ্বংস হয়েছে।
সোম ও মঙ্গলবারের বৃষ্টির পর ৪০টিরও বেশি নির্ধারিত জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র মারাত্মকভাবে প্লাবিত হয়েছে, ফলে অনেক মানুষকে আবারও স্থানান্তরিত হতে হয়েছে।
“গত রাতটি পরিবারগুলোর জন্য সত্যিই ভয়াবহ ছিল। বৃষ্টি এতটাই তীব্র ছিল যে আমাদের অফিস ও অতিথিশালা থেকে ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার (চার থেকে ছয় ইঞ্চি) পানি দেখা যাচ্ছিল। আর বাতাসও ছিল খুব শক্তিশালী,” ইউনিসেফ স্টেট অব প্যালেস্টাইনের যোগাযোগ প্রধান জোনাথন ক্রিক্স বুধবার বিবিসির টুডে প্রোগ্রামে বলেন।
“আজ সকালে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় আমি দেখেছি, অনেক মানুষ বালতি দিয়ে পানি সরানোর চেষ্টা করছে,”বলেন তিনি।
তিনি উল্লেখ করেন, অনুমানিক ১০ লাখ মানুষ যারা তাঁবু ও অস্থায়ী আশ্রয়ে বসবাস করছেন, তারা গত দুই বছরের ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের মধ্যে বহুবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং তাদের কাছে পোশাকের কোনো বাড়তি মজুত নেই বা খুবই কম।
তিনি আরও বলেন, অনেক তাঁবু শক্তিশালী বাতাসে উড়ে যাওয়ার বা ধ্বংস হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে, কারণ এগুলো শুধু একটি ত্রিপল বা প্লাস্টিকের শিট দিয়ে তৈরি, যা দুর্বল কাঠের কাঠামোয় পেরেক দিয়ে আটকানো।
সূত্র: বিবিসি