হোম > বিশ্ব

২০২৫ ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে প্রাণঘাতী ও বিধ্বংসী বছর

১২ ইসরাইলি সংস্থার প্রতিবেদন

আমার দেশ অনলাইন

ইসরাইলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজা শহর। ছবি: আনাদোলু এজেন্সি

ইসরাইলের ১২টি মানবাধিকার সংগঠন মঙ্গলবার এক যৌথ প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে ২০২৫ সাল গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ বছর হয়ে উঠেছে। তাদের দাবি, ইসরাইল এই বছর বেসামরিক জনগণের হত্যা, বাস্তুচ্যুতি ও অবরোধকে আগের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি মাত্রায় বাড়িয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে গাজায় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন নথিভুক্ত হলেও ২০২৫ সালে পরিস্থিতির নাটকীয় অবনতি দেখা গেছে। যুদ্ধের দ্বিতীয় বছরে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, পুরো গাজাজুড়ে বাস্তুচ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছে এবং ক্ষুধার কারণে ব্যাপক মৃত্যু ঘটেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ভাষায়, যুদ্ধের শুরুতে যে লঙ্ঘনগুলো ব্যতিক্রম বলে ধরা হতো সেগুলো ২০২৫ সালে নিয়মিত চর্চায় পরিণত হয়েছে। তারা ১৯৬৭ সালের পর এটিকে ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে বিধ্বংসী বছর বলে উল্লেখ করেছে।

সংগঠনগুলো জানায়, ২০২৪ সালের মার্চে গাজায় মৃত্যুর সংখ্যা যেখানে ছিল প্রায় ৩৬ হাজার, ২০২৫ সালের অক্টোবর নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭ হাজার ১৭৩ জনে। এদের মধ্যে ২০ হাজারের বেশি শিশু ও প্রায় ১০ হাজার নারী রয়েছে। আরও প্রায় ১০ হাজার মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হয়। আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গাজায় বাস্তুচ্যুতি ২০২৫ সালে ১৯ লাখে পৌঁছায়, যা পুরো জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ। বহু পরিবারকে যুদ্ধ ও অবকাঠামো ধ্বংসের কারণে বারবার স্থানান্তরিত হতে হয়েছে।

ক্ষুধাজনিত পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত অন্তত ৪৬১ জন অনাহারে মারা গেছে। এর মধ্যে ১৫৭ শিশু রয়েছে। সাহায্য সংগ্রহের অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় ইসরাইলি প্রক্রিয়া ও হামলার ফলে ২,৩০৬ জন নিহত এবং আরও প্রায় ১৭ হাজার আহত হয়েছে।

পশ্চিম তীরেও সহিংসতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। বসতি স্থাপনকারীদের হামলা বাড়তে বাড়তে ২০২৫ সালে বড় ধরনের উচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। কমপক্ষে ৪৪টি ফিলিস্তিনি পশুপালন সম্প্রদায় পুরোপুরি এবং ১০টি আংশিকভাবে খালি হয়ে যায়। ফলে মোট ২,৯৩২ মানুষ বাস্তুহারা হয়। যাদের মধ্যে শিশু রয়েছে ১,৩২৬ জন। প্রশাসনিক আটকেও ব্যাপক বৃদ্ধি দেখা যায়; ২০২৩ সালে যেখানে প্রায় এক হাজার লোক আটক ছিল, ২০২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩,৫৭৭ জনে। কারাগারে নির্যাতন, চিকিৎসাবঞ্চনা ও অমানবিক পরিস্থিতির কারণে অন্তত ৯৮ জন ফিলিস্তিনি মৃত্যুবরণ করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ২০২৫ সাল এমন এক বাস্তবতার ছবি দেখিয়েছে যেখানে রাষ্ট্র কোনো সীমা মানছে না এবং আন্তর্জাতিক আইনকে প্রকাশ্যে লঙ্ঘন করছে। তাদের ভাষায়, এমন আচরণের পর ইসরাইল নিজেকে নৈতিক বা আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে দাবি করতে পারে না।

গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সেনা ও বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় ১,০৮৫ জন নিহত এবং ১০,৭০০ জন আহত হয়েছে, আর গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২০,৫০০ জনেরও বেশি মানুষকে। এর মধ্যেই ২০২৪ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ইসরাইলের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে সব বসতি উচ্ছেদের আহ্বান জানায়।

তথ্যসূত্র: আনাদোলু এজেন্সি

এসআর

বিধ্বস্ত গাজায় গণবিয়ে

‘২৫ বছর আগের চেয়ে বেশি চাঙা’ দাবির পর বৈঠকে দেড় ঘণ্টা ঘুমালেন ট্রাম্প

সিরিয়ার গোলান মালভূমিতে ইসরাইলের দখলদারিত্ব অবৈধ

ভারত আকাশসীমা না দেওয়ায় সমুদ্রপথে শ্রীলঙ্কায় ত্রাণ পাঠালো পাকিস্তান

যে ১৯ দেশের অভিবাসন প্রক্রিয়া স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করলে ইউরোপের পরাজয় নিশ্চিত: পুতিন

ইউরোপ যুদ্ধ করতে চাইলে প্রস্তুত রাশিয়াও: পুতিন

ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানে জাতিসংঘে পাকিস্তানের নয় দফায় যা আছে

মুসলিম যুবককে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানোর অভিযোগ

আইসিসির হেফাজতে লিবিয়ার যুদ্ধাপরাধী