দখলকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে নিরস্ত্র দুই ফিলিস্তিনিকে “হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত” একটি ইউনিটের কমান্ডারকে পদোন্নতি দিয়েছে ইসরাইল। রোববার স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এ পদোন্নতি প্রদান করেন।
ইসরাইলি পত্রিকা হারেতজ জানায়, বেন-গভির ইউনিটের কমান্ডারকে জানিয়েছেন যে তাকে উপ-কমিশনার (ডেপুটি কমিশনার) পদে উন্নীত করা হবে। এই ঘোষণা এমন একদিন পর আসে যখন প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইউনিটের সদস্যরা দুই ফিলিস্তিনিকে গুলি করছে—যারা হাত উঁচু করে আত্মসমর্পণ করেছিল।
দূর-ডানপন্থী জিউইশ পাওয়ার পার্টির নেতা বেন-গভির স্বয়ং ইউনিটের ঘাঁটিতে গিয়ে কমান্ডারকে পদোন্নতির কথা জানান। প্রতিবেদনে এই পদক্ষেপকে “অস্বাভাবিক” বলা হয়েছে, কারণ সাধারণত পুলিশ ইউনিটের কমান্ডারদের এত উচ্চ পদমর্যাদা দেওয়া হয় না।
গত বৃহস্পতিবার ইসরাইলি বাহিনী ২৬ বছর বয়সী মন্তাসির আবদুল্লাহ এবং ৩৭ বছর বয়সী ইউসুফ আসাসাকে গুলি করে হত্যা করে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দুজনই নিরস্ত্র ছিলেন। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এই ঘটনাকে “ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা” বলে বর্ণনা করেছে।
ঘটনার পর বেন-গভির এক বিবৃতিতে অভিযুক্ত পুলিশ ইউনিটকে “পূর্ণ সমর্থন” দেন। হারেতজ জানায়, তদন্তকারীরা কর্মকর্তাদের যে ভিডিও দেখিয়েছেন, তাতে দেখা যায় দুই ফিলিস্তিনি হাত উঁচু করে একটি বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছেন। তাদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর বাড়ির সামনে শুইয়ে রাখা হয়—এরপর এক কর্মকর্তা কাছ থেকে গুলি করে দুজনকে হত্যা করেন।
বেন-গভির শুক্রবার একটি ভিডিও প্রকাশ করেন, যেখানে তাকে ইউনিট কমান্ডারকে আলিঙ্গন ও সমর্থন জানাতে দেখা যায়—যখন ঘটনাটি নিয়ে ফৌজদারি তদন্ত চলছে।
অক্টোবর ২০২৩ থেকে ইসরাইল দখলকৃত পশ্চিম তীরে সামরিক অভিযান বাড়িয়েছে। এ সময়ে ইসরাইলি বাহিনী ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় ১,০৮৫-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১০,৭০০ জন আহত হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২০,৫০০-এর বেশি ফিলিস্তিনিকে।
গত জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এক ঐতিহাসিক মতামতে ঘোষণা করে, ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরাইলের দখলদারিত্ব “অবৈধ” এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের সব বসতি উচ্ছেদের আহ্বান জানায়।
তথ্যসূত্র: টিআরটিওয়ার্ল্ড
এসআর