কপ-৩০ সম্মেলন
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কমাতে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে একটি বৈশ্বিক রোডম্যাপ তৈরিতে একমত হয়েছে বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশ। ব্রাজিলে চলমান জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-৩০-এ দীর্ঘ আলোচনার পর এ আহ্বান জানায় আফ্রিকা, এশিয়া, লাতিন আমেরিকা, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো। তবে তেল ও গ্যাস রপ্তানিকারক বেশ কয়েকটি দেশ এই উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে।
এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের জলবায়ু দূত টিনা স্টেগে বলেন, আসুন আমরা জীবাশ্ম জ্বালানি রোডম্যাপের ধারণাকে সামনে এগিয়ে নিতে একসঙ্গে কাজ করি। জলবায়ু আন্দোলনকারীরাও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। গ্রিনপিস ইন্টারন্যাশনালের ডেপুটি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জ্যাসপার ইনভেন্টর বলেন, এটি কপ-৩০-এর টার্নিং পয়েন্ট। উত্তর ও দক্ষিণের দেশগুলোর মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার বিষয়ে যে ঐকমত্য দেখা যাচ্ছে, তা অত্যন্ত শক্তিশালী বার্তা দেয়।
তিনি আরো জানান, বেলেম শহরের রাস্তায় ৪০ হাজার মানুষের দাবির সঙ্গে বিশ্বের লাখ লাখ মানুষের আহ্বানকে সম্মেলনের আলোচনায় স্থান দিতে হবে।
এর আগে ২০২৩ সালে দুবাইয়ের কপ-২৮ সম্মেলনে বিশ্বকে জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে সৌদি আরবের নেতৃত্বে কয়েকটি দেশ সেই প্রস্তাব বাতিলের চেষ্টা করে, যার ফলে গত বছর বাকুতে আলোচনাটি এগোয়নি।
এ বছর ব্রাজিল আয়োজিত কপ-৩০-এর আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচিতে ‘জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসা’বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এমনকি সভাপতির পরামর্শ তালিকাতেও তা বাদ দেওয়া হয়েছে। আলোচ্য সূচিতে বর্তমানে চারটি বিষয়Ñযেমন অর্থায়ন, বাণিজ্য, স্বচ্ছতা ও দেশগুলোর নির্গমন হ্রাস পরিকল্পনা (এনডিসি) নিয়ে কাজ চলছে। প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে রাখতে এসব পরিকল্পনাকে বিশেষজ্ঞরা অত্যন্ত অপ্রতুল বলে মনে করছেন।
ব্রিটেনের জ্বালানি সচিব এড মিলিব্যান্ড বলেন, এটি একটি বৈশ্বিক জোট, যেখানে উত্তর ও দক্ষিণের দেশগুলো একত্র হয়েছে এই বার্তা দিতে যে, এ সমস্যা আর এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। জীবাশ্ম জ্বালানি কমানোর বিষয়টিকে অবশ্যই সম্মেলনের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখতে হবে।