চীন মঙ্গলবার থেকে অন্তত ১০টি মার্কিন সয়াবিন কার্গো কিনেছে, যার মূল্য প্রায় ৩০ কোটি ডলার। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত দুই ব্যবসায়ী জানান, এই কেনাকাটা দুই দেশের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও শি জিনপিং-এর ফোনালাপের একদিন পরই সম্পন্ন হয়েছে।
এই বিপুল পরিমাণ ক্রয় সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য সম্পর্কে শিথিলতার পর চীনের আমদানি বৃদ্ধির ধারাকে আরও প্রসারিত করেছে। ফোনালাপের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীন–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে “অত্যন্ত শক্তিশালী” বলে বর্ণনা করেন। তিনি জানান, ফোনালাপের সময় তিনি চীনকে আরও বেশি পরিমাণে ও দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য কিনতে বলেন, এবং শি তাতে “কমবেশি সম্মত” হন।
এক ব্যবসায়ী জানান, চীন প্রায় ১২টি কার্গো কিনেছে; অন্যজন বলেন, সংখ্যা ১০ থেকে ১৫-এর মধ্যে। প্রতিটি কার্গোর ওজন প্রায় ৬০,০০০–৬৫,০০০ মেট্রিক টন।
সব কার্গোর জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের গালফ কোস্ট টার্মিনাল ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় উত্তর–পশ্চিম বন্দর থেকে পাঠানোর কথা রয়েছে। এই ক্রয়গুলো এমন সময়ে হয়েছে যখন মার্কিন সয়াবিনের দাম ব্রাজিলিয়ান সয়াবিনের চেয়ে বেশি।
ওয়াশিংটন–বেইজিং বাণিজ্য উত্তেজনার মাঝেও কেনাকাটা বৃদ্ধি
বণিকদের মতে, চীন গালফ টার্মিনাল থেকে চালান নেওয়ার জন্য জানুয়ারি শিকাগো ফিউচারস দামের ওপর অতিরিক্ত ২.৩ ডলার ও প্যাসিফিক নর্থওয়েস্ট বন্দরগুলোর জন্য ২.২ ডলার প্রিমিয়াম দিয়েছে। বিপরীতে ব্রাজিলের সয়াবিনের প্রিমিয়াম প্রায় ১.৮ ডলার।
বেইজিংভিত্তিক এজি র্যাডার কনসাল্টিং-র প্রতিষ্ঠাতা জনি শিয়াং বলেন, “বর্তমান দামে বাণিজ্যিক ক্রেতারা মার্কিন সয়াবিন এড়িয়েই চলবে। ব্রাজিলের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় সয়াবিন ক্রাশ মার্জিন আর্থিকভাবে টেকসই নয়।”
চীন কয়েক মাস ধরে মার্কিন সয়াবিন এড়িয়ে চললেও দক্ষিণ কোরিয়ায় অক্টোবরের শেষ ভাগে দুই দেশের নেতাদের বৈঠকের পর আবারও কেনাকাটা বাড়াতে শুরু করেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত শস্য আমদানিকারক সিওএফসিও দেরি–অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ টন মার্কিন সয়াবিন বুক করেছে, মার্কিন কৃষি দপ্তর (USDA) জানিয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক এই কেনাকাটা এখনও হোয়াইট হাউস ঘোষিত ১ কোটি ২০ লাখ টনের প্রতিশ্রুত পরিমাণের অনেক নিচে।
৩.৫ বছরে ৮৭.৫ মিলিয়ন টন কেনার চুক্তি
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট মঙ্গলবার বলেন, চীনের সয়াবিন আমদানি পরিকল্পনা “সম্পূর্ণ সঠিক গতিতে” চলছে। তিনি জানান, চীন আগামী তিন বছর ছয় মাসে মোট ৮৭.৫ মিলিয়ন টন মার্কিন সয়াবিন কেনার জন্য একটি চুক্তি করেছে।
চীন–যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য উত্তেজনার সময়ে এ ধরনের বড় কেনাকাটা বিরল হলেও, এই পদক্ষেপ দুই দেশের সম্পর্কে সাম্প্রতিক উষ্ণতা প্রতিফলিত করে।
তথ্যসূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড
এসআর