মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউমকে “পারসোনা নন গ্রাটা” (persona non grata) বা অবাঞ্ছিত ব্যক্তি ঘোষণা করেছে পেরু। যার ফলে তিনি দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন না। সম্প্রতি মেক্সিকোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার কয়েক দিনের মধ্যেই এই পদক্ষেপ নিল পেরু।
বার্তা সংস্থা ইয়াহু নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বৃহস্পতিবার বিষয়টির ওপর দেশটির কংগ্রেসে ভোটাভুটিতে ৬৩ জন পক্ষে ও ৩৪ জন বিপক্ষে ভোট দেয়। এতে প্রতীকীভাবে শেইনবাউমের প্রবেশ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে মেক্সিকো সরকার সাবেক পেরুভিয়ান প্রধানমন্ত্রী বেটসি চাভেজকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়, যিনি গত সপ্তাহে রাজধানী লিমায় মেক্সিকোর দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা সাধারণত বিদেশি কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়, যা তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করে এবং সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের প্রতি অসন্তোষের ইঙ্গিত দেয়।
পেরুর কংগ্রেসের সভাপতি ফার্নান্দো রোস্পিগ্লিওসি বলেন, এই সিদ্ধান্ত সরকারকে সমর্থন জানানো এবং মেক্সিকোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পদক্ষেপকে সমর্থনের প্রতীক।
বৃহস্পতিবারের আলোচনায় পররাষ্ট্র সম্পর্ক কমিটির সদস্য সংসদ সদস্য এরনেস্তো বুস্তামান্তে অভিযোগ করেন, শেইনবাউমের মাদক চোরাচালানকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা এমন কাউকে আমাদের দেশে ঢুকতে দিতে পারি না, যিনি মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশে আছেন এবং নিজ দেশের প্রকৃত সমস্যাগুলো থেকে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন।”
চাভেজের আশ্রয় ও বিতর্কের সূত্রপাত
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেটসি চাভেজ বর্তমানে ২০২২ সালের কথিত এক অভ্যুত্থানচেষ্টার মামলায় অভিযুক্ত। তিনি প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিলোর ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বল্প সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
চাভেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট কাস্তিলো যখন কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেন, তখন তিনি সেই প্রচেষ্টায় সহায়তা করেছিলেন। পরে কাস্তিলোকে অভিশংসন করে গ্রেপ্তার করা হয়।
চাভেজকে ২০২৩ সালের জুনে আটক করা হয়েছিল এবং চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে জামিনে মুক্তি পান। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবে দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ২৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
পেরুর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুগো দে জেলা মেক্সিকোর সিদ্ধান্তকে “অমিত্রসুলভ পদক্ষেপ” বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেন, এটি পেরুর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে “হস্তক্ষেপের শামিল।”
অন্যদিকে, মেক্সিকোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক আইন মেনে কাজ করেছে এবং এটি কোনোভাবেই পেরুর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নয়।
এখনও পর্যন্ত লিমা সরকার চাভেজকে নিরাপদে মেক্সিকো যাত্রার অনুমতি দেয়নি।
এসআর