হোম > বিশ্ব

অসময়ে কেন এশিয়াজুড়ে বন্যা

সহস্রাধিক মৃত্যু

আমার দেশ অনলাইন

শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে বন্যার চিত্র। ছবি : সংগৃহীত

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশির ভাগ অঞ্চলে সম্প্রতি ঝড় ও ভারি বৃষ্টির ফলে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডে ১ হাজার ২৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরো অনেকে।

দুটি ঘূর্ণিঝড় ও একটি টাইফুন এবং বিভিন্ন ধরনের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় এই দুর্যোগে অবদান রেখেছে। এতে শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের শহর ও গ্রামগুলো কাদায় চাপা পড়ে গেছে। পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা কয়েক সপ্তাহ ধরে চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বন্যা ও ভূমিধসে শ্রীলঙ্কায় ১১ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের মহাপরিচালক সম্পথ কোতুভেগোদা বলেছেন, দেশটি ঐতিহাসিক মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।

বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ইন্দোনেশিয়া থেকে আলজাজিরার জেসিকা ওয়াশিংটন বলেছেন, তিনি উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের সর্বত্র ভূমিধস দেখেছেন।

তার ভাষ্য, ‘আমি প্রাকৃতিক দুর্যোগের খবর নিয়েছি এবং সাধারণত এমন কিছু এলাকা থাকে যেখানে ভূমিধস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু এবার এখানে আসার সময় যেসব গ্রাম দেখেছি, তার সবই ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

বন্যা ও ভূমিধসের কারণ

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইন কয়েক সপ্তাহের ভারি বৃষ্টি ও ঝড়ে প্লাবিত হয়েছে।

সাম্প্রতিক বন্যার ফলে কিছু দেশে ঝড়ের তীব্রতা আরো বেড়েছে। এর মধ্যে টাইফুন কোটো অন্যতম, যা ফিলিপাইনে ভয়াবহ আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের অন্যতম কারণ। এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রায় তীব্রভাবে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ার এবং শ্রীলঙ্কায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়া অন্যতম।

থাইল্যান্ডে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার চিত্র। ছবি : সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশগত ভূগোলের সহকারী অধ্যাপক স্টিভ টার্টন বলেন, এই অঞ্চলজুড়ে লোকজন তীব্র বৃষ্টির সময় ঠিকমতো সাড়া দিতে পারেননি। এর ফলে ভূমিধসসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে যেখানেই আমরা এই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বিষয়গুলো দেখি, আপনি এগুলোকে টাইফুন বা হারিকেন বা ঘূর্ণিঝড় বলুন না কেন, তারা আগের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছে। এটি হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে।’

টার্টন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ার, ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়া ও টাইফুন কোটোকে তাদের বাতাসের গতির কারণে তীব্র ঝড় হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়নি। তবে এগুলো প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছে।’

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা এবং মহাসাগরের উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণেই এই ঝড়-বৃষ্টি জোরালো হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজির জলবায়ু বিজ্ঞানী রক্সি ম্যাথিউ কোল বলছেন, ‘উষ্ণ মহাসাগর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের চারপাশে শক্তিশালী বৃষ্টিপাতের বলয় তৈরি করে। একটি উষ্ণ বায়ুমণ্ডল আরো আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং আরো তীব্র বেগে বৃষ্টি ঝরায়।’

ফিলিপাইনে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার চিত্র। ছবি : সংগৃহীত

এর জন্য ‘লা নিনা’ দায়ী। ‘লা নিনা’ একটি প্রাকৃতিক জলবায়ু কাঠামো, যা বায়ুপ্রবাহের শীতল পর্যায়কে বোঝায়। যখন প্রশান্ত মহাসাগর পূর্ব দিকে স্বাভাবিকের চেয়ে শীতল হয়ে ওঠে এবং পশ্চিম দিকে উষ্ণ হয়ে ওঠে, তখন বাতাস শুক্তিশালী হয়ে এশিয়ার দিকে আরো উষ্ণ পানি ও আর্দ্রতা ঠেলে দেয়।

কোল বলেন, এটি এশিয়ার বায়ুমণ্ডলকে অতিরিক্ত আর্দ্র করে তোলে, যা ভারি বৃষ্টি ও ভয়াবহ বন্যার ঝুঁকি সৃষ্টি করে।

টার্টন বলেন, গত সপ্তাহের ঝড়ের অস্বাভাবিক দিকগুলোর কথা যখন আসে, বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ার ও টাইফুন কোটো কীভাবে মিথস্ক্রিয়া করেছে; তখন অ্যাট্রিবিউশন স্টাডি নামে পরিচিত নির্দিষ্ট গবেষণার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করা প্রয়োজন।

ইম্পেরিয়াল কলেজ স্টর্ম মডেল (আইআরআইএস) ব্যবহার করে গ্রান্থাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড দ্য এনভায়রনমেন্টের সাম্প্রতিক এক অ্যাট্রিবিউশন গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গত মাসে ফিলিপাইনে আঘাত হানা টাইফুন ফাং-ওংয়ের কারণে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আনুমানিক ১০.৫ শতাংশ বেড়েছে। সূত্র : আলজাজিরা

ট্রাম্পের নীতি ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর কৌশল

কারাগার থেকে বেরিয়ে ইমরান খান সম্পর্কে যা জানালেন তার বোন

যুক্তরাষ্ট্রে গণহারে হত্যা ২০ বছরে সর্বনিম্ন

যে কারণে কর্মী ছাঁটাই–বাজেট কমানোর ঘোষণা দিলো জাতিসংঘ

‘ইসরাইলি সম্প্রসারণবাদ সবচেয়ে বড় হুমকি’

ভারতের পাশ থেকে কেন দূরে সরে যাচ্ছে প্রতিবেশী দেশগুলো

কেন অস্ত্রের পেছনে ছুটছে ইউরোপ

ক্ষমার নিশ্চয়তায় দেশ ছাড়তে রাজি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট

শ্রীলঙ্কায় বন্যা–ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা ৪১০, নিখোঁজ ৩৩৬

নেতানিয়াহুর ক্ষমা প্রার্থনা, তিন জটিলতায় ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট