আজ ১৮ ডিসেম্বর ‘বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস’। ২০১২ সালের এই দিনটিকে বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো। ১৮ ডিসেম্বরকে আরবি ভাষা দিবস হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছিল কারণ, ১৯৭৩ সালের এই দিনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আরবি ভাষা অন্যতম দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদা লাভ করে।
আরবি ভাষা শুধু মধ্যপ্রাচ্যের একটি কথ্য ভাষা নয়; এটি একটি বৈশ্বিক সভ্যতারও প্রতীক।
বিশ্বের প্রায় ৪২০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ আরবিকে মাতৃভাষা হিসেবে ব্যবহার করে এবং আরো কয়েক শ’ মিলিয়ন মানুষ ধর্মীয়, শিক্ষাগত ও পেশাগত প্রয়োজনে এ ভাষার সঙ্গে যুক্ত। ইসলামি সভ্যতার বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে আরবি ভাষা আফ্রিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জ্ঞান, আইন ও সংস্কৃতির বাহক হয়ে ওঠে।
পবিত্র কোরআনুল কারিমের ভাষা হিসেবে আরবি মুসলিম বিশ্বের জন্য কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়; এটি ইবাদত, আইন ও আধ্যাত্মিকতারও কেন্দ্রীয় ভাষা।
আরবি ভাষার বহুমাত্রিকতা শুধু ধর্মীয় পরিসরে সীমাবদ্ধ নয়। মধ্যযুগে বাগদাদ, দামেস্ক, কায়রো ও কর্ডোবার মতো নগরীগুলোতে আরবি ছিল বিজ্ঞান, দর্শন ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রধান ভাষা। আল-খাওয়ারিজমির গণিত, ইবনু সিনার চিকিৎসাবিজ্ঞান, আল-ফারাবি ও ইবনু রুশদের দর্শন; সবই আরবি ভাষার মাধ্যমে বিশ্বসভ্যতার উত্তরাধিকার হয়ে ওঠে। ইউরোপীয় রেনেসাঁর জ্ঞানের অনেকাংশের ভিত্তিও আরবি থেকে লাতিনে অনূদিত গ্রন্থের ওপর নির্ভরশীল ছিল। আধুনিক বিশ্বে আরবি ভাষা নতুন এক বহুমাত্রিক রূপ ধারণ করেছে। একদিকে এটি জাতিসংঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষার একটি।