কানাডার অভিবাসী সমাজে নতুন করে আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে ভারতের কুখ্যাত সন্ত্রাসী গ্যাং লরেন্স বিষ্ণোই চক্র। সম্প্রতি এই গ্যাং কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের অ্যাবটসফোর্ড এলাকায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক শিল্পপতিকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাশাপাশি তারা পাঞ্জাবি এক জনপ্রিয় গায়কের বাড়িতেও গুলি চালানোর দায়ও স্বীকার করেছে তারা। কানাডায় বসবাসরত ভারতীয় কমিউনিটিতে এই হত্যাকাণ্ড চরম উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার সৃষ্টি করেছে।
বুধবার ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে রাজস্থান পুলিশ যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের এক সদস্য জগদীপ সিং ওরফে জগ্গাকে গ্রেপ্তার করে। এর ঠিক এক দিন পরেই এমন ঘটনা প্রবাসী ভারতীয়দের মনে উৎকন্ঠার সৃষ্টি করেছে।
বিষ্ণোইয়ের সন্ত্রাসী দলের সদস্য গোল্ডি ঢিলোঁ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে এই হত্যার দায় স্বীকার করেছে। ঠিক কখন, কোথায় ও কেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটল তা নিয়ে তদন্ত চলছে, তবে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে—লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে সাহাসির কাছে অর্থ দাবি করে আসছিল। বিষ্ণোইয়ের সন্ত্রাসী দলের মতে, ৬৮ বছর বয়সী সাহাসি একটি বড় মাদকের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে বিষ্ণোই গ্যাং তার কাছে অর্থ দাবি করেছিল, কিন্তু তিনি অর্থ না দেওয়ায় তারা তাকে খুন করে।
এছাড়া ঢিলোঁ তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টে আরো লিখেছে, পাঞ্জাবি গায়ক চান্নি নাট্টানের বাড়ির বাইরে গুলি তারাই চালিয়েছে কেননা নাট্টান গায়ক সর্দার খেরার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আর খেরার সঙ্গে কাজ করা যেকোনো গায়ক তাদের ক্ষতির জন্য নিজেরাই দায়ী থাকবে।
লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং ভারতের একটি কুখ্যাত সন্ত্রাসী চক্র, যার মূল ঘাঁটি রাজস্থান ও পাঞ্জাবে। এ গ্যাংয়ের আন্তর্জাতিক শাখাগুলো যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, এমনকি মধ্যপ্রাচ্যেও সক্রিয় বলে জানিয়েছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা।
এর আগে খালিস্তান আন্দোলনের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর খুনের ঘটনায় ভারতীয় প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততার অভিযোগে কূটনৈতিক টানাপড়েন তৈরি হয় ভারত ও কানাডার মধ্যে। কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের তদন্তে শিখ নেতা হত্যাকাণ্ডে ভারতের আলোচিত লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সঙ্গে দেশটির সরকারের সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।