চীনা যুদ্ধবিমান জাপানের সামরিক বিমানের দিকে রাডার তাক করার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে বেইজিংয়ের সমালোচনা করেছে। গত সপ্তাহে ওকিনাওয়া দ্বীপপুঞ্জের কাছে প্রশিক্ষণ চলাকালে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় চীন ও জাপান ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা দিয়েছে, যা দুই দেশের উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র মঙ্গলবার রাতে বলেন, “চীনের কর্মকাণ্ড আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক নয়।” তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র–জাপান জোট আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় আরও শক্তিশালী এবং ওয়াশিংটন টোকিওর প্রতি অবিচল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জাপানের চিফ ক্যাবিনেট সেক্রেটারি মিনোরু কিহারা যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি দুই দেশের দৃঢ় মৈত্রীকে তুলে ধরে।
এদিকে রাডার ঘটনার একদিন পরই জাপান রাশিয়া ও চীনের যৌথ আকাশ টহল পর্যবেক্ষণে যুদ্ধবিমান উড়ায়।
শনিবার চীনা যুদ্ধবিমান জাপানি বিমানের দিকে রাডার লক করে—যা সামরিক ভাষায় সম্ভাব্য হামলার পূর্বাভাস হিসেবে বিবেচিত হয় এবং লক্ষ্যবস্তু বিমানকে এড়ানোর কৌশল নিতে বাধ্য করতে পারে। টোকিও ঘটনাটিকে “বিপজ্জনক” বলে নিন্দা জানায়।
এ ঘটনায় বেইজিং পাল্টা দাবি করেছে যে জাপানি বিমান তাদের নৌবাহিনীর ঘোষিত ক্যারিয়ার-ভিত্তিক প্রশিক্ষণে বারবার ঘনিষ্ঠভাবে হস্তক্ষেপ করেছে।
বুধবার তাইপেতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে বলেন, চীনের এই মহড়া “অত্যন্ত অযৌক্তিক আচরণ।” তিনি আরও যোগ করেন, “শান্তির কোনো বিকল্প নেই। যুদ্ধের কেউ বিজয়ী নয়। বড় শক্তি হিসেবে দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়া চীনের উচিত।”
তাকাইচির মন্তব্যে সম্পর্কের তিক্ততা
জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি গত মাসে পার্লামেন্টে বলেন, তাইওয়ানে চীনা হামলা “রাষ্ট্রের অস্তিত্ব-হুমকি” হিসেবে গণ্য হতে পারে এবং টোকিও সামরিকভাবে সাড়া দিতে পারে। এরপর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক তীব্রভাবে অবনতি হয়। চীন তার বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানায় এবং জাপানকে সামরিক হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করে।
এ সময় চীনা নাগরিকদের জাপানে ভ্রমণ না করার পরামর্শও দেয় বেইজিং।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জর্জ গ্লাস কয়েকটি সামাজিক মাধ্যমে জাপানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন; তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও অন্যান্য শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে নীরব রয়েছেন।
রয়টার্সের সূত্র বলছে, ট্রাম্প গত মাসে তাকাইচিকে ফোন করে বিরোধ বাড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। তিনি আগামী বছর বাণিজ্য আলোচনার জন্য বেইজিং সফরের পরিকল্পনা করছেন।
সূত্র: রয়টার্স
এসআর