জাতিসংঘের প্রতিবেদন
টানা দুই বছর দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসনে গাজা উপত্যকা এখন ৬১ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। অবরুদ্ধ এই অঞ্চলের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ ভবন সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানায় সংস্থাটি।
শনিবার মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি) মূল্যায়ন অনুযায়ী, যুদ্ধের প্রথম পাঁচ মাসেই গাজার মোট ধ্বংসস্তূপের দুই-তৃতীয়াংশ সৃষ্টি হয়েছিল। যুদ্ধের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংসযজ্ঞের গতি আরও বেড়েছে, বিশেষ করে যুদ্ধবিরতির আগের মাসগুলোতে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে রাফাহ ও খান ইউনিসের মধ্যবর্তী দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৮০ মিলিয়ন টন ধ্বংসস্তূপ তৈরি হয়। এসব ধ্বংসস্তূপের মধ্যে প্রায় ২.৯ মিলিয়ন টন বিপজ্জনক বর্জ্যে দূষিত হতে পারে, যা মূলত শিল্প কারখানা ও অবকাঠামো ধ্বংসের ফলে সৃষ্টি হয়েছে।
জাতিসংঘের স্যাটেলাইট সেন্টার প্রোগ্রামের (UNOSAT) স্যাটেলাইট বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরাইলি হামলায় গাজায় প্রায় ১ লাখ ৯৩ হাজার ভবন সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে। এটি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর আগে বিদ্যমান মোট ভবনের প্রায় ৭৮ শতাংশ।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই বিপুল ধ্বংসস্তূপ শুধু মানবিক সংকট নয়, বরং পরিবেশগত বিপর্যয়ও ডেকে আনছে। বিপজ্জনক রাসায়নিক, ভারী ধাতু এবং অ্যাসবেস্টস মিশ্রিত ধ্বংসস্তূপ এখন গাজার জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে উঠেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজার পুনর্গঠনে কয়েক দশক লেগে যেতে পারে। বর্তমান অবরোধ ও অবকাঠামোগত ধ্বংসের কারণে ধ্বংসস্তূপ অপসারণ এবং পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু করাও অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হবে।